রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) উৎপাদন খরচের দিকে লক্ষ্য রেখেই ফসলের যাকাতের পরিমাণ নির্ধারণ করেছেন। আর সেচ হচ্ছে উৎপাদনের প্রধান খরচ। তাই এর উপর ভিত্তি করে যাকাতের পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন,
فِيْمَا سَقَتِ السَّمَاءُ وَالْعُيُوْنُ أَوْ كَانَ عَثَرِيًّا الْعُشْرُ، وَمَا سُقِىَ بِالنَّضْحِ نِصْفُ الْعُشْرِ-
‘বৃষ্টি ও ঝর্ণার পানি দ্বারা সিক্ত ভূমিতে উৎপাদিত ফসল বা নালার পানিতে উৎপন্ন ফসলের উপর ‘ওশর’ (দশ ভাগের এক ভাগ) যাকাত ওয়াজিব। আর সেচ দ্বারা উৎপাদিত ফসলের উপর ‘অর্ধ ওশর’ (বিশ ভাগের এক ভাগ) যাকাত ওয়াজিব’।[1]
অত্র হাদীছে বর্ণিত সেচ দ্বারা উদ্দেশ্য হল, উৎপাদন ব্যয়। কেননা সেচের মাধ্যমে মূলত উৎপাদন কম-বেশী হয় না; বরং খরচ কম-বেশী হয়। আর এই খরচের কম-বেশীর কারণে যাকাতের হারের কম-বেশী করা হয়েছে। এছাড়াও সেচ ব্যতীত অন্যান্য খরচের কারণে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। কৃষক যা খরচ করেন তার বিনিময়ে অতিরিক্ত উৎপাদন লাভ করেন। অতএব খরচ যাই হোক না কেন তা বাদ না দিয়ে উৎপাদিত পূর্ণ শস্যের যাকাত আদায় করতে হবে।
উল্লেখ্য যে, শস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে যদি কেউ ঋণ করে থাকে, তাহলে শস্য কর্তনের পরে প্রথমে শস্য উৎপাদনের জন্য যে ঋণ নিয়েছে তা পরিশোধ করে অবশিষ্ট শস্যের যাকাত আদায় করতে পারে।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন,
يَقْضِيْ مَا أَنْفَقَ عَلَى الثَّمَرَةِ، ثُمَّ يُزَكِّى مَا بَقِىَ-
‘প্রথমত ফল উৎপাদনে যা ব্যয় করেছে তা পরিশোধ করবে, অতঃপর অবশিষ্টাংশের যাকাত আদায় করবে’।[2] ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন,
يَبْدَأُ بِمَا اسْتَقْرَضَ، ثُمَّ يُزَكِّيْ مَا بَقِيَ-
‘প্রথমে যে ঋণ নিয়েছে তা পরিশোধ করবে। অতঃপর অবশিষ্টাংশের যাকাত আদায় করবে’।[3]
[2]. সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী হা/৭৮৫৮।
[3]. সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী হা/৭৩৯৭; সদন ছহীহ, আহমাদ শাকের, কিতাবুল খারাজ ১৫৩ পৃঃ।