ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম ছিয়াম (রোযা) শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ) ১ টি
প্রশ্ন: (৪৩৬) ইফতারের জন্য কোনো দো‘আ কি প্রমাণিত আছে? সাওম আদায়কারী কি মুআয্যিনের জবাব দিবে নাকি ইফতার চালিয়ে যাবে?

উত্তর: দো‘আ কবূল হওয়ার অন্যতম সময় হচ্ছে ইফতারের সময়। কেননা সময়টি হচ্ছে ইবাদতের শেষ মূহুর্ত। তাছাড়া মানুষ সাধারণতঃ ইফতারের সময় অধিক দুর্বল হয়ে পড়ে। আর মানুষ যত দুর্বল হয় তার অন্তর তত নরম ও বিনয়ী হয়। তখন দো‘আ করলে মনোযোগ আসে বেশি এবং আল্লাহর দিকে অন্তর ধাবিত হয়। ইফতারের সময় দো‘আ হচ্ছে: اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ “হে আল্লাহ আপনার জন্য সাওম রেখেছি এবং আপনার রিযিক দ্বারা ইফতার করছি।”[1] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইফতারের সময় এ দো‘আ পাঠ করতেন: ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ “তৃষ্ণা বিদূরিত হয়েছে, শিরা-উপশিরা তরতাজা হয়েছে এবং আল্লাহ চাহে তো প্রতিদান সুনিশ্চিত হয়েছে।”[2] হাদীস দু’টিতে যদিও দুর্বলতা রয়েছে কিন্তু কোনো কোনো বিদ্বান এটাকে হাসান বলেছেন। মোটকথা এগুলো দো‘আ বা অন্য কোনো দো‘আ পাঠ করবে। ইফতারের সময় হচ্ছে দো‘আ কবূল হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মূহুর্ত। কেননা হাদীসে এরশাদ হয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, إِنَّ لِلصَّائِمِ عِنْدَ فِطْرِهِ لَدَعْوَةً مَا تُرَدُّ “সিয়াম পালনকারীর ইফতারের সময়কার দো‘আ প্রত্যাখ্যান করা হয় না।”[3] আর ইফতারের সময় মুআয্যিনের জবাব দেওয়া শরী‘আতসম্মত। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ “মুআয্যিনের আযান শুনলে তার জবাবে সে যা বলে তোমরাও তার অনুরূপ বল।”[4] এ হাদীসটি প্রত্যেক অবস্থাকে শামিল করে। তবে দলীলের ভিত্তিতে কোনো অবস্থা ব্যতিক্রম হলে ভিন্ন কথা।

[1] আবু দাউদ, অনুচ্ছেদ: সিয়াম, অনুচ্ছেদ: ইফতারের দো‘আ। তবে এই দু’আটির সনদ (সূত্র) দুর্বল তাই উহা গ্রহণযোগ্য নয়। (দ্র. ইরওয়াউল গালীল, ৪/৩৬-৩৯ পৃঃ যঈফ আবু দাঊদ, আলবানী)

[2] আবু দাউদ, অনুচ্ছেদ: সিয়াম, অনুচ্ছেদ: ইফতারের দো‘আ। (এ হাদীসটি ছহীহ, দ্রঃ ইরওয়াউল গালীল হাদীস নং ৯২০)

[3] [হাদীছ ছহীহ] ইবন মাজাহ, অধ্যায়: সিয়াম হাদীস নং ১৭৪৩, ১৭৫৩।

[4] সহীহ বুখারী, অধ্যায়: আযান, অনুচ্ছেদ: আযান শুনলে কি বলতে হয়; সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: সালাত, অনুচ্ছেদ: মুআয্যিনের অনুরূপ জবাব দেওয়া মুস্তাহাব।