মা’দান বিন আবী তালহা হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রসূলের স্বা ধী নকৃত (মুক্ত) দাস সওবান (রাঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ করে বললাম, আমাকে এমন একটি আমলের কথা বলে দিন যা করলে আমি জান্নাত প্রবেশ করতে পারব, (অথবা বললেন, আমি বললাম, আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা প্রিয় আমলের কথা বলে দিন।) কিন্তু উত্তর না দিয়ে তিনি চুপ থাকলেন। পুনরায় আমি একই আবেদন রাখলাম। তবুও তিনি নীরব থাকলেন। আমি তৃতীয়বার আবেদন পুনরাবৃত্তি করলাম। এবারে তিনি বললেন, এ ব্যাপারে আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করেছি। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, “তুমি আল্লাহর জন্য অধিকাধিক সিজদা করাকে অভ্যাস বানিয়ে নাও; কারণ যখনই তুমি আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করবে তখনই আল্লাহ তার বিনিময়ে তোমাকে এক মর্যাদায় উন্নীত করবেন এবং তার দরুন একটি গুনাহ মোচন করবেন।” (মুসলিম ৪৮৮নং তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ্‌)

আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন, “প্রত্যেক বান্দাই, যখন সে আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করে তখনই তার বিনিময়ে আল্লাহ তার জন্য একটি সওয়াব লিপিবদ্ধ করেন, তার একটি গুনাহ ক্ষালন করে দেন এবং তাকে একটি মর্যাদায় উন্নীত করেন। অতএব তোমরা বেশী বেশী করে সিজদা কর।” (ইবনে মাজাহ্‌, সহীহ তারগীব ৩৭৯নং)

রবীআহ্‌ বিন কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ) এর সাথে রাত্রিবাস করতাম এবং তাঁর ওযুর পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসহাজির করে দিতাম। একদা তিনি আমাকে বললেন, “তুমি আমার নিকট কিছু চাও।” আমি বললাম, ‘আমি জান্নাতে আপনার সংসর্গ চাই।’ তিনি বললেন, “এছাড়া আর কিছু?” আমি বললাম, ‘ওটাই (আমার বাসনা)।’ তিনি বললেন, “তাহলে অধিক অধিক সিজদা করে (নফল নামায পড়ে) এ ব্যাপারে আমার সহায়তা কর।” (মুসলিম ৪৮৯ নং, আবু দাঊদ, প্রমুখ)

উম্মতে মুহাম্মাদীর মুখমণ্ডল সিজদাহ ও ওযুর ফলে কিয়ামতের দিন জ্যোতির্ময় ও উজ্জ্বল হবে। (আহমাদ, মুসনাদ ৪/১৮৯, তিরমিযী, সুনান)

“আল্লাহ তাআলা যখন জাহান্নামবাসীদের মধ্য হতে যাকে ইচ্ছা দয়া প্রদর্শনের ইচ্ছা করবেন, তখন ফিরিশ্‌তাদেরকে আদেশ করবেন যে, ‘যারা একমাত্র আল্লাহরই ইবাদত করত তাদেরকে দোযখ থেকে বের কর।’ ফিরিশ্‌তাবর্গ সেই ইবাদতকারী ব্যক্তিবর্গকে বের করবেন। তাঁরা তাদের (কপালে) সিজদার চিহ্ন দেখে চিনতে পারবেন। কারণ, আল্লাহ দোযখের জন্য সিজদার চিহ্ন খাওয়াকে (জ্বালানোকে) হারাম করে দিয়েছেন। ফলে ঐ সকল লোককে দোযখ থেকে বের করা (ও নিষ্কৃতি দেওয়া) হবে। সুতরাং আদম-সন্তানের প্রত্যেক অঙ্গ দোযখ খেয়ে (জ্বালিয়ে) ফেলবে, কিন্তু সিজদার চিহ্নিত অঙ্গ খাবে না।” (বুখারী ৮০৬, মুসলিম, সহীহ ১৮২নং)