যেমন দুই মুআযযিনের আযান দুই রকম ছিল, তেমনি উভয়ের ইকামতও ছিল দুই রকম; জোড় এবং বিজোড়। বিলাল (রাঃ) কে আযান ডবল ডবল শব্দে এবং ইকামত ‘ক্বাদ ক্বা-মাতিস সলা-হ্‌’ ছাড়া (অন্যান্য) বাক্যাবলীকে একক একক শব্দে বলতে আদেশ করা হয়েছিল। (বুখারী, মুসলিম, সহীহ প্রমুখ, মিশকাত ৬৪১ নং)

সুতরাং বিলালের উক্ত হাদীসের ভিত্তিতে ইকামত হবে ৯টি বাক্যে; ‘ক্বাদ ক্বামাতিস সালাহ্‌ ২বার এবং বাকী হবে ১ বার করে। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ২/৫৯)

কিন্তু আব্দুল্লাহ বিন যায়দকে স্বপ্নে শিখানো হয়েছিল নিম্নরুপ ইকামত, আর এটাই প্রসিদ্ধ:-

اَللهُ أَكْبَر اَللهُ أَكْبَر، أَشْهَدُ أَنْ لاَّ إِلهَ إِلاَّ الله، أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً رَّسُوْلُ الله، حَيَّ عَلَى الصَّلاَة،

حَيَّ عَلَى الْفَلاَح، قَدْ قَامَتِ الصَّلاَة، قَدْ قَامَتِ الصَّلاَة، اَللهُ أَكْبَر اَللهُ أَكْبَر، لاَ إِلهَ إِلاَّ الله،

আল্লাহু আকবার ২ বার। আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌ ১ বার। আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্‌ ১ বার। হাইয়্যা আলাস স্বলাহ্‌ ১ বার। হাইয়্যা আলাল ফালাহ্‌ ১ বার। ক্বাদ ক্বামাতিস স্বলাহ্‌ (অর্থাৎ নামায প্রতিষ্ঠা বা শুরু হল) ২ বার। আল্লাহু আকবার ২বার এবং লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌ ১ বার। (আবূদাঊদ, সুনান ৪৯৯, দারেমী, সুনান ১১৭১, ইবনে খুযাইমাহ্‌, সহীহ ৩৭০, ইবনে হিব্বান, সহীহ ১৬৭১নং, বায়হাকী ১/৩৯১)

উল্লেখ্য যে, যারা মুআযযিন আবূ মাহ্‌যূরার মত তারজী’ আযান দেয়, তাদের উচিৎ তাঁর মতই ইকামত দেওয়া। তিনি বলেন, ‘মহানবী (ﷺ) তাঁকে আযানের ১৯টি এবং ইকামতের ১৭টি বাক্য শিখিয়েছেন।’ (আহমাদ, মুসনাদ, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে মাজাহ্‌, সুনান, দারেমী, সুনান, মিশকাত ৬৪৪নং)

সুতরাং তাঁর ইকামত ছিল বিলাল (রাঃ) এর আযানের মতই। তবে তাতে ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ্‌’ এর পর অতিরিক্ত ছিল ‘ক্বাদ ক্বামাতিস স্বলাহ্‌’ ২ বার। (আবূদাঊদ, সুনান ৫০২নং)

ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ্‌ (রহঃ) বলেন, আহলে হাদীস ও তাঁদের সমর্থকদের নিকট সঠিক সিদ্ধান্ত এই যে, মহানবী (ﷺ) হতে যা কিছু শুদ্ধভাবে প্রমাণিত আছে তার প্রত্যেকটার উপর আমল করতে হবে। আর তাঁরা ঐ আমলের কোনটিকেও অপছন্দ করেন না। কেননা, আযান ও ইকামতের পদ্ধতি একাধিক হওয়ার ব্যাপারটা ক্বিরাআত, তাশাহহুদ প্রভৃতির পদ্ধতি একাধিক হওয়ার মতই।’ (মাজমূউ ফাতাওয়া ২২/৩৩৫, ২২/৬৬) সুতরাং উভয় প্রকারই আযান ও ইকামত আমলযোগ্য। আর বৈধ নয় এ নিয়ে কাদা ছুঁড়াছুঁড়ি।

প্রকাশ থাকে যে, ভুলে ইকামত না দিয়ে (একাকী অথবা জামাআতী) নামায পড়ে ফেললে নামাযের কোন ক্ষতি হয় না। ইকামত নামায হতে পৃথক জিনিস। অতএব ঐ ভুলের জন্য সহু সিজদা বিধেয় নয়। (তুহ্‌ফাতুল ইখওয়ান, ইবনে বায ৭৮পৃ:)