নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি

ইয়ামনের কুযা‘আহ (قُضَاعَة) গোত্রের উযরাহ শাখার ১২ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলটি জামরাহ বিন নু‘মান(جَمْرَةُ بْنُ النُّعْمَانِ) এর নেতৃত্বে ৯ম হিজরীর ছফর মাসে মদীনায় আসে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করলে তারা বলল, আমরা বনু ‘উযরাহর লোক এবং মায়ের দিক থেকে (কুরায়েশ নেতা) কুছাইয়ের ভাই। যারা কুছাইকে সাহায্য করেছিলেন এবং বনু খোযা‘আহ ও বনু বকরকে মক্কার নেতৃত্ব থেকে বিতাড়িত করতে সহযোগিতা করেছিলেন। আমাদের সঙ্গে আপনার আত্মীয়তা ও বংশীয় সম্পর্ক রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরকে ‘মারহাবা’ জানালেন এবং সুসংবাদ দিলেন যে, সত্বর শাম বিজিত হবে এবং রোম সম্রাট হেরাক্লিয়াস ঐ অঞ্চল থেকে বিতাড়িত হবে। বস্ত্ততঃ রাসূল (ছাঃ)-এর এই ভবিষ্যদ্বাণীর পাঁচ মাসের মধ্যেই ৯ম হিজরীর রজব মাসে তাবূক অভিযানে বিনা যুদ্ধে শাম বিজিত হয় এবং রোমকরা এলাকা ছেড়ে চলে যায়। তবে পূর্ণ বিজয় সম্পন্ন হয় হযরত ওমরের খেলাফতকালে হযরত আবু ওবায়দাহ ইবনুল জাররাহর যুদ্ধাভিযানের মাধ্যমে।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরকে গণৎকারদের নিকটে যেতে এবং বেদীর নিকটে তারা যেসব যবেহ করে থাকে, তা থেকে নিষেধ করেন। অতঃপর বলেন যে, আগামী থেকে কেবল ঈদুল আযহার কুরবানী বাকী থাকবে। এরপর তারা ইসলাম কবুল করল এবং কয়েকদিন অবস্থান করে ফিরে গেল। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরকে উত্তম উপঢৌকনাদিসহ বিদায় দেন’।[1]

[শিক্ষণীয় : (১) রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয় যত দূরেরই হৌক, তাকে সম্মান করা ইসলামের নীতি। (২) ঈদুল আযহার কুরবানী ব্যতীত আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য ইসলামে অন্য কোন কুরবানী নেই। অবশ্য আল্লাহর নামে যেকোন যবহে নেকী লাভ হয়।]

[1]. যাদুল মা‘আদ ৩/৫৭৪। আর-রাহীক্বে (৪৪৭ পৃঃ) জামরাহ (جَمْرَة)-এর বদলে হামযাহ (حَمْزَة) লেখা হয়েছে। সম্ভবতঃ এটি মুদ্রণ জনিত ভুল।