নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি
হোনায়েন সংশ্লিষ্ট যুদ্ধসমূহ (السرايا والغزوات الملحقة بغزوة حنين)

৭৮. সারিইয়া আওত্বাস(سرية أوطاس) : ৮ম হিজরীর শাওয়াল মাস। হোনায়েন যুদ্ধে পরাজিত মুশরিকদের একটি দল পার্শ্ববর্তী আওত্বাসে গিয়ে আশ্রয় নিলে আবু ‘আমের আল-আশ‘আরীর নেতৃত্বে একটি সেনাদল তাদের ধাওয়া করে তাদেরকে সেখান থেকে হটিয়ে দেয়। কিন্তু দলনেতা আবু ‘আমের শহীদ হন।[1]

মৃত্যুকালে তিনি ভাতিজা আবু মূসা আশ‘আরীকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করেন। অতঃপর তাকে অছিয়ত করেন, যেন রাসূল (ছাঃ)-কে তার সালাম পৌছে দেন এবং তাঁর কাছে তার জন্য আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেন। সে মতে আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ)-এর আবেদনক্রমে তার শহীদ চাচা আবু ‘আমের আশ‘আরীর জন্য রাসূল (ছাঃ) ওযূ করে ক্বিবলামুখী হয়ে একাকী দু’হাত তুলে আল্লাহর নিকট দো‘আ করেন। এসময় আবু মূসার আবেদনক্রমে তার জন্যেও তিনি দো‘আ করেন’ (বুখারী হা/৪৩২৩ ‘আওত্বাস যুদ্ধ’ অনুচ্ছেদ)।

৭৯. সারিইয়া নাখলা(سرية نخلة) : ৮ম হিজরীর শাওয়াল মাস। হোনায়েন যুদ্ধে পরাজিত পলাতকদের আরেকটি দল নাখলায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। তাদের বিরুদ্ধে যুবায়ের ইবনুল ‘আওয়ামের নেতৃত্বে একটি সেনাদল প্রেরিত হয়। সেখানে মুশরিকদের বয়োবৃদ্ধ ও দূরদর্শী নেতা দুরায়েদ বিন ছিম্মাহ(دُرَيْدُ بْنُ الصِّمَّةِ) নিহত হন ও অন্যেরা পালিয়ে যায়। উক্ত বৃদ্ধ নেতা তাদের তরুণ নেতা মালেক বিন ‘আওফকে হোনায়েন যুদ্ধ থেকে নিষেধ করেছিলেন।[2]

৮০. সারিইয়া তোফায়েল বিন ‘আমর দাওসী(سرية الطفيل بن عمرو الدوسى) :

৮ম হিজরীর শাওয়াল মাস। হোনায়েন যুদ্ধের পর ত্বায়েফ যাত্রাকালে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তোফায়েল বিন ‘আমর দাওসীকে ‘আমর বিন হুমামাহ দাওসী গোত্রের ‘যুল-কাফফাইন’(ذُو الْكَفَّيْنِ) মূর্তি ধ্বংস করার জন্য পাঠান এবং তাকে নির্দেশ দেন যেন তার কওমের নিকট সাহায্য চায় ও তাদেরকে ত্বায়েফে নিয়ে আসে। অতঃপর তিনি সেখানে দ্রুত গমন করেন ও ‘যুল-কাফফাইন’ মূর্তি ধ্বংস করে দেন। তিনি তার মুখে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন ও কবিতা পাঠ করেন।-

يَا ذَا الْكَفّيْنِ لَسْتُ مِنْ عُبَّادِكَا + مِيلَادُنَا أَقْدَمُ مِنْ مِيلَادِكَا+إنّي حَشَشْتُ النّارَ فِي فُؤَادِكَا

‘হে যুল-কাফফাইন! আমি তোমার পূজারীদের মধ্যে নই’। ‘আমাদের জন্ম তোমার জন্মের অনেক পূর্বে’। ‘আমি তোমার কলিজায় আগুন দিলাম’।

অতঃপর তাদের ৪০০ দ্রুতগামী লোককে নিয়ে তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর ত্বায়েফ অবতরণের চার দিন পর সেখানে পৌঁছে যান।[3]

৮১. গাযওয়া ত্বায়েফ(غزوة الطائف) : ৮ম হিজরীর শাওয়াল মাস। হোনায়েন যুদ্ধে শত্রুপক্ষের নেতা মালেক বিন ‘আওফ সহ পরাজিত ছাক্বীফ গোত্রের প্রধান অংশটি পালিয়ে গিয়ে ত্বায়েফের দুর্ভেদ্য দুর্গে আশ্রয় নিয়েছিল। প্রথমে খালিদের নেতৃত্বে ১০০০ সৈন্যের একটি বাহিনী প্রেরিত হয়। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিজে গমন করেন ও ত্বায়েফের দুর্গ অবরোধ করেন। এই অবরোধ ১০ থেকে ১৫ দিন স্থায়ী হয়। এই যুদ্ধে মুসলিম পক্ষে ১২ জনের অধিক শহীদ হন ও অনেকে আহত হন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অবরোধ উঠিয়ে নিয়ে ফিরে আসেন। ৯ম হিজরী সনে তারা মদীনায় এসে ইসলাম কবুল করে’ (ইবনু হিশাম ২/৪৭৮-৮৭, ২/৫৩৭-৪১)। বিস্তারিত বিবরণ নিম্নরূপ।-

এটি ছিল মূলতঃ হোনায়েন যুদ্ধেরই বর্ধিত অংশ। হোনায়েন যুদ্ধ হ’তে পালিয়ে যাওয়া সেনাপতি মালেক বিন ‘আওফ নাছরী তার দলবল নিয়ে ত্বায়েফ দুর্গে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ইতিপূর্বে তার পশ্চাদ্ধাবনের জন্য এক হাযার সৈন্যসহ খালেদ বিন অলীদকে পাঠানো হয়েছিল। অতঃপর আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) হোনায়েন-এর গণীমত সমূহ জি‘ইর্রানাহতে জমা করে রেখে নিজেই ত্বায়েফ অভিমুখে রওয়ানা হয়ে যান। পথিমধ্যে তিনি নাখলা ইয়ামানিয়াহ, ক্বারনুল মানাযিল, লিয়াহ (لِيَة) প্রভৃতি অঞ্চল অতিক্রম করেন এবং লিয়াহতে অবস্থিত মালেক বিন ‘আওফের একটি সেনাঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেন। অতঃপর ত্বায়েফ গিয়ে দুর্গের নিকটবর্তী স্থানে শিবির স্থাপন করেন। এই স্থানটি বর্তমানে ‘মসজিদে আব্দুল্লাহ বিন আববাস (রাঃ)’ নামে পরিচিত। ঐ সময় ত্বায়েফ শহরটি ছিল এই মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে। বর্তমানে এটি শহরের অন্তর্ভুক্ত। অতঃপর তিনি দুর্গ অবরোধ করেন। যার সময়কালে মতভেদ থাকলেও বিশ্বস্ত মতে ১০ থেকে ১৫ দিন ছিল। কেননা রাসূল (ছাঃ) যুলক্বা‘দাহ মাসের ৬ দিন বাকী থাকতে মদীনায় পৌঁছেছিলেন (সীরাহ ছহীহাহ ২/৫০৭-০৮)। অবরোধের প্রথম দিকে দুর্গের মধ্য হ’তে বৃষ্টির মত তীর নিক্ষিপ্ত হয়। তাতে মুসলিম বাহিনীর অনেকে হতাহত হন। পরে তাদের উপরে কামানের গোলা নিক্ষেপ করা হয়, যা খায়বর যুদ্ধের সময় মুসলমানদের হস্তগত হয়েছিল। শত্রুরা পাল্টা উত্তপ্ত লোহার খন্ড নিক্ষেপ করে। তাতেও বেশ কিছু মুসলমান শহীদ হন।

এ সময় রাসূল (ছাঃ)-এর পক্ষ হ’তে একটি ঘোষণা প্রচার করা হয় যে,مَنْ خَرَجَ إلَيْنَا مِنَ الْعَبِيْدِ فَهُوَ حُرٌّ ‘যেসব গোলাম আমাদের নিকটে এসে আত্মসমর্পণ করবে, সে মুক্ত হয়ে যাবে’। এই ঘোষণায় ভাল ফল হয়। একে একে ২৩ জন ক্রীতদাস দুর্গ প্রাচীর টপকে বেরিয়ে আসে এবং সবাই মুসলমানদের দলভুক্ত হয়ে যায়।[4] এদের মধ্যকার একজন ছিলেন বিখ্যাত ছাহাবী হযরত আবু বাকরাহ (রাঃ)। নারী নেতৃত্বের অকল্যাণ সম্পর্কিত ছহীহ বুখারীতে বর্ণিত হাদীছের যিনি বর্ণনাকারী। যেখানে রাসূল (ছাঃ) বলেন,لَنْ يُفْلِحَ قَوْمٌ وَلَّوْا أَمْرَهُمُ امْرَأَةً ‘ঐ জাতি কখনোই সফলকাম হবে না, যারা তাদের শাসন ক্ষমতা নারীর হাতে সমর্পণ করেছে’।[5] ‘আবু বাকরাহ’ নামটি ছিল রাসূল (ছাঃ)-এর দেওয়া উপনাম। কেননা বাকরাহ (بَكْرَة) অর্থ কূয়া থেকে পানি তোলার চাক্কি। যার সাহায্যে তিনি দুর্গপ্রাচীর থেকে বাইরে নামতে সক্ষম হয়েছিলেন। পরে তার মনিবের পক্ষ থেকে তাকে ফেরৎ দানের দাবী করা হ’লে রাসূল (ছাঃ) বলেন, هُوَ طَلِيْقُ اللهِ وَطَلِيْقُ رَسُوْلِهِ ‘সে আল্লাহর মুক্তদাস এবং তাঁর রাসূলের মুক্তদাস’।[6]

গোলামদের পলায়ন দুর্গবাসীদের জন্য ক্ষতির কারণ হ’লেও আত্মসমর্পণের কোন লক্ষণ দেখা গেল না। কেননা তাদের কাছে এক বছরের জন্য খাদ্য ও পানীয় মওজুদ ছিল। উপরন্তু তাদের নিক্ষিপ্ত তীর ও উত্তপ্ত লৌহখন্ডের আঘাতে মুসলমানদের ক্ষতি হ’তে লাগল। এ সময় রাসূল (ছাঃ) বলেন,مَنْ بَلَغَ بِسَهْمٍ فَلَهُ دَرَجَةٌ فِى الْجَنَّةِ ‘যে ব্যক্তি তীরের আঘাতে শহীদ হবে, সে ব্যক্তি জান্নাতে উঁচু সম্মান পাবে’।[7] এতে মুসলিম বাহিনীর জোশ আরও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু দুর্গবাসীদের আত্মসমর্পণের কোন নমুনা পাওয়া গেল না।

এ সময় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সকলকে ফিরে আসার আহবান জানালে কেউ রাযী হয়নি। কিন্তু পরে কিছু লোক আহত হওয়া ব্যতীত কোন ফল না হওয়ায় তারা অবরোধ উঠিয়ে ফিরে আসতে রাযী হয়। এ সময় রাসূল (ছাঃ)-কে বলা হ’ল, আপনি বনু ছাক্বীফদের উপরে বদ দো‘আ করুন। কিন্তু রাসূল (ছাঃ) তাদের হেদায়াতের জন্য দো‘আ করে বললেন,اللَّهُمَّ اهْدِ ثَقِيْفًا وَأْتِ بِهِمْ ‘হে আল্লাহ! তুমি ছাক্বীফদের হেদায়াত কর এবং তাদেরকে নিয়ে এসো’ (সীরাহ ছহীহাহ ২/৫১১)।[8] রাসূল (ছাঃ)-এর দো‘আ কবুল হয়েছিল এবং সেনানায়ক মালেক বিন ‘আওফসহ গোত্র নেতা ‘আব্দে ইয়ালীল-এর নেতৃত্বে হাওয়াযেন ও ছাক্বীফ গোত্রের সবাই ৯ম হিজরীর রামাযানে মাত্র ১১ মাসের মাথায় মদীনায় এসে ইসলাম কবুল করেন। তাদের অন্যতম জনপ্রিয় নেতা ওরওয়া বিন মাসঊদ জি‘ইর্রানাহ থেকে মদীনায় পৌঁছার পূর্বেই রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে পথে সাক্ষাৎ করেন এবং ইসলাম গ্রহণ করে ত্বায়েফে ফিরে আসেন’ (সীরাহ ছহীহাহ ২/৫১৭)।

উল্লেখ্য যে, এই সেই ত্বায়েফ, যেখানে দশম নববী বর্ষে মে-জুন মাসের প্রচন্ড দাবদাহে মক্কা থেকে প্রায় ৯০ কি. মি. পথ পায়ে হেঁটে এসে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ছাক্বীফ নেতাদের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছিলেন। বিনিময়ে তাদের নিকট থেকে পেয়েছিলেন তাচ্ছিল্য, কটু-কাটব্য এবং লাঞ্ছনাকর দৈহিক নির্যাতন। অথচ আজ শক্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি তাদের ক্ষমা করে দিলেন এবং হেদায়াতের দো‘আ করলেন। বস্ত্ততঃ
এটাই হ’ল ইসলাম!

[1]. ইবনু হিশাম ২/৪৫৪; বুখারী হা/৪৩২৩। মানছূরপুরী বা মুবারকপুরী কেউ এটিকে পৃথকভাবে ধরেননি।

[2]. ইবনু হিশাম ২/৪৫৩। মানছূরপুরী বা মুবারকপুরী কেউ এটিকে পৃথকভাবে ধরেননি।

[3]. যাদুল মা‘আদ ৩/৪৩৩-৩৪; ইবনু হিশাম ১/৩৮৫; ওয়াক্বেদী, মাগাযী ২/৮৭০।

[4]. আহমাদ হা/২২২৯, সনদ হাসান লেগাইরিহী -আরনাঊত্ব।

[5]. বুখারী হা/৪৪২৫। পারস্যরাজের ঐ কন্যার নাম ছিল বূরান (بُورَانُ بِنْتُ شِيرَوَيْهِ بْنِ كِسْرَى بْنِ بَرْوِيزَ)। ঘটনা ছিল এই যে, শীরাওয়াইহ তার পিতা পারস্যরাজ কিসরাকে হত্যা করে সিংহাসন দখল করেন। পূর্বেই সেটা বুঝতে পেরে পিতা একটি ছোট ডিববা প্রস্ত্তত করেন। যার গায়ে লিখে রাখেন ‘যৌন উদ্দীপক ঔষধ’(حُقُّ الْجِمَاعِ)। যে ব্যক্তি এখান থেকে পান করবে, তার উত্তেজনা বৃদ্ধি পাবে। ডিববাটি তিনি বিষ ভর্তি অবস্থায় তাঁর বিশেষ মালখানায় রেখে দেন। উদ্দেশ্য ছিল আমি নিহত হওয়ার পর ছেলে এটি থেকে খেয়ে দ্রুত মৃত্যুবরণ করবে। সেটিই হ’ল। ছেলে তা থেকে খেল এবং মাত্র ৬ মাসের মধ্যে মারা গেল। ইতিমধ্যেই সে তার ক্ষমতাকে নিরংকুশ করার জন্য তার ভাইদের হত্যা করল। এক্ষণে তার মৃত্যুর পর কোন পুরুষ উত্তরাধিকারী না থাকায় লোকেরা তার কন্যা বূরানকে ক্ষমতায় বসায়। যা পরবর্তীতে পারস্য সাম্রাজ্যের ধ্বংস ত্বরান্বিত করে। পারস্য রাজ কিসরা রাসূল (ছাঃ)-এর প্রেরিত পত্র ছিঁড়ে ফেললে তিনি বদদো‘আ করেছিলেন, اللَّهُمَّ مَزِّقْ مُلْكَهُ ‘আল্লাহ তার সাম্রাজ্যকে ছিন্নভিন্ন করুন’ (ছহীহাহ হা/১৪২৯)। বাস্তবে সেটাই হয়ে গেল। পারস্য সাম্রাজ্য ইতিহাস থেকে মুছে গেল (ফাৎহুল বারী হা/৪৪২৫-এর আলোচনা)। যা আর কখনোই ফিরে আসেনি।

[6]. আহমাদ হা/১৭৫৬৫, সনদ ছহীহ; যাদুল মা‘আদ ৩/৪৪১।

[7]. আহমাদ হা/১৭০৬৩ সনদ ছহীহ। প্রসিদ্ধ আছে যে, এ সময় রাসূল (ছাঃ) নওফাল বিন মু‘আবিয়া দীলীর (نَوفَلُ بنُ مُعاوِيَةَ الدِّيلِيُّ) নিকটে পরামর্শ চাইলেন। তিনি তাকে পরামর্শ দিয়ে বললেন, ثَعْلَبٌ فِي جُحْرٍ إنْ أَقَمْتَ عَلَيْهِ أَخَذْتَهُ وَإِنْ تَرَكْتَهُ لَمْ يَضُرَّكَ، ‘ওরা গর্তের শিয়াল। যদি আপনি এভাবে দন্ডায়মান থাকেন, তবে ধরে ফেলতে পারবেন। আর যদি ছেড়ে যান, তাহ’লে ওরা আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না’ (যাদুল মা‘আদ, ৩/৪৩৫; সনদ অত্যন্ত যঈফ, আলবানী, ফিক্বহুস সীরাহ ৩৯৭ পৃঃ; আর-রাহীক্ব, পৃঃ ৪১৯; ঐ, তা‘লীক্ব ১৭৬ পৃঃ; মা শা-‘আ ২০৫ পৃঃ)।

(২) প্রসিদ্ধ আছে যে, অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ওমর (রাঃ)-এর মাধ্যমে পরদিন মক্কায় প্রত্যাবর্তনের ঘোষণা জারী করে দিলেন। কিন্তু এতে ছাহাবীগণ সন্তুষ্ট হ’তে পারলেন না। তারা বললেন, বিজয় অসমাপ্ত রেখে আমরা কেন ফিরে যাব? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ঠিক আছে। কাল তাহ’লে আবার যুদ্ধ শুরু কর’। ফলে তারা যুদ্ধে গেলেন। কিন্তু কিছু লোক আহত হওয়া ব্যতীত কোন লাভ হ’ল না। এবার রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, إِنَّا قَافِلُونَ غَدًا إِنْ شَاءَ اللهُ ‘আগামীকাল আমরা রওয়ানা হচ্ছি ইনশাআল্লাহ’। এবারে আর কেউ দ্বিরুক্তি না করে খুশী মনে প্রস্ত্ততি নিতে লাগল। এ দৃশ্য দেখে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হাসতে লাগলেন (আর-রাহীক্ব ৪১৯ পৃঃ)। বর্ণনাটি যঈফ (ঐ, তা‘লীক্ব ১৭৬ পৃঃ)।

[8]. আহমাদ হা/১৪৭৪৩, সনদ শক্তিশালী, -আরনাঊত্ব; তিরমিযী হা/৩৯৪২, আলবানী বলেন, হাদীছটির সনদ মুসলিমের শর্তানুযায়ী। কিন্তু এটি আবুয্ যুবায়ের সূত্রে বর্ণিত যিনি ‘মুদাল্লিস’ -মিশকাত হা/৫৯৮৬-এর টীকা, ‘মানাক্বিব’ অধ্যায়-৩০, অনুচ্ছেদ-১। সেকারণ এটি যঈফ (আলবানী, দিফা‘ ‘আনিল হাদীছ ৩৪ পৃঃ; ফিক্বহুস সীরাহ ৪৩২ পৃঃ)।