নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি
মক্কা বিজয় থেকে প্রাপ্ত বিধান সমূহ (الأحكام المسةنبطة من فةح مكة)

(১) রামাযান মাসে শুভ উদ্দেশ্যে সফরের সময় ছিয়াম রাখা বা না রাখা দু’টিই জায়েয। যেমন এই সফরে রাসূল (ছাঃ) ছায়েম ছিলেন। কিন্তু পরে ভেঙ্গেছিলেন। আবার অনেকে ছিয়াম ছিলেন না’ (মুসলিম হা/১১১৩-১৪)

(২) হালকাভাবে ৮ রাক‘আত ‘ছালাতুয যোহা’ আদায় করা’ (বুখারী হা/৩৫৭; মুসলিম হা/৩৩৬)। তবে ইবনু কাছীর বলেন, এটি ছিল বিজয়োত্তর শুকরিয়ার ছালাত, যা তিনি দুই দুই রাক‘আত করে পড়েছিলেন। পরে এটিই রীতি হয়ে যায়, যেমন সা‘দ ইবনু আবী ওয়াকক্বাছ মাদায়েন বিজয়ের দিন এটা পড়েন।[1]

(৩) মুসাফিরের জন্য ছালাত ক্বছর করার মেয়াদ নির্ধারণ। যেমন রাসূল (ছাঃ) মক্কায় ১৯ দিন অবস্থানকালে ছালাতে ক্বছর করেছেন (বুখারী হা/৪২৯৮)। তবে সিদ্ধান্তহীন অবস্থায় ১৯ দিনের বেশী হ’লেও ‘ক্বছর’ করা যায়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাবূক অভিযানের সময় সেখানে ২০ দিন যাবৎ ‘ক্বছর’ করেন।[2]

(৪) কারু জন্য মহিলাদের আশ্রয় গ্রহণ সিদ্ধ। যেমন উম্মে হানী তাঁর দেবরদ্বয়ের জন্য আশ্রয় চেয়েছিলেন (বুখারী হা/৩৫৭; মুসলিম হা/৩৩৬ (৮২)

(৫) একদিনের জন্য হালাল করার পর মক্কায় রক্তপাত চিরদিনের জন্য হারাম করা হয় (বুখারী হা/২৪৩৪)

(৬) ‘মুৎ‘আ’ বিবাহ ক্বিয়ামত পর্যন্ত হারাম করা হয় (মুসলিম হা/১৪০৬ (২১)

(৭) যার বিছানায় সন্তান জন্মগ্রহণ করবে, সন্তানের পিতা সেই হবে (বুখারী হা/২০৫৩)

(৮) মুসলিম স্ত্রীর সাথে মুশরিক স্বামীর বিবাহ বহাল থাকবে, যদি স্বামী ইসলাম কবুল করেন। যেমন ছাফওয়ান বিন উমাইয়া এবং ইকরিমা বিন আবু জাহলের বিবাহ বহাল রাখা হয়েছিল।[3]

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রায় ছয় বছর পর স্বীয় কন্যা যয়নবকে পূর্বের বিবাহের উপর মক্কা বিজয়ের কিছু পূর্বে তার নওমুসলিম স্বামী আবুল ‘আছের নিকট সমর্পণ করেন।[4]

(৯) স্ত্রী তার স্বামীর মাল থেকে বৈধভাবে খরচ করতে পারে তাকে না জানিয়ে। যেমন হিন্দা প্রশ্ন করেছিলেন স্বামী আবু সুফিয়ানের কৃপণতার ব্যাপারে (বুখারী হা/৩৮২৫)

(১০) কালো খেযাব ব্যতীত অন্য কোন রং দিয়ে সাদা চুল-দাড়ি রঞ্জিত না করার বিধান জারী হয় (মুসলিম হা/২১০২ (৭৯)

[1]. ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা নছর, ৮/৪৮২।

[2]. বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ১৮৭ পৃঃ; মিরক্বাত ৩/২২১; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২১৩-১৪।

[3]. মুওয়াত্ত্বা মালেক, শরহ যুরক্বানী হা/১১৩৬-৫৬, ৩/২৩৮-৪০; ইবনু হিশাম ২/৪১৭-১৮।

[4]. ইবনু হিশাম ১/৬৫৭; তিরমিযী হা/১১৪৩; আবুদাঊদ হা/২২৪০। দ্রঃ সারিইয়া ক্রমিক ৪০।