৭ম হিজরীর মুহাররম মাস। হোদায়বিয়া থেকে মদীনায় ফেরার মাসাধিক কাল পরে এটাই ছিল রাসূল (ছাঃ)-এর প্রথম যুদ্ধ, যা খায়বর যুদ্ধে গমনের মাত্র তিনদিন পূর্বে সংঘটিত হয় (বুখারী, ‘গাযওয়া যী ক্বারাদ’ অনুচ্ছেদ-৩৭)। বনু গাত্বফানের ফাযারাহ গোত্রের আব্দুর রহমান আল-ফাযারীর নেতৃত্বে একটি ডাকাত দল মদীনায় এসে রাসূল (ছাঃ)-এর রাখালদের হত্যা করে চারণভূমি থেকে তাঁর উটগুলি লুট করে নিয়ে যায়। দক্ষ তীরন্দায সালামা বিন আকওয়া‘ একাই দৌঁড়ে তাদের পশ্চাদ্ধাবন করে যূ-ক্বারাদ ঝর্ণা পর্যন্ত দীর্ঘ পথ তাড়িয়ে নিয়ে যান। কখনো পাহাড়ের মাথায় উঠে পাথর ছুঁড়ে, কখনো পেছন থেকে তীর ছুঁড়ে তাদেরকে কাবু করে ফেলেন। অবশেষে তারা তাদের সমস্ত উট, অস্ত্রশস্ত্র ও আসবাব-পত্র সমূহ ফেলে পালিয়ে যায়। এ সময় তিনি চিৎকার দিয়ে বলতে থাকেন,أَنَا ابْنُ الأَكْوَعِ، وَالْيَوْمُ يَوْمُ الرُّضَّعِ ‘আমি ইবনুল আকওয়া। আর আজ হ’ল ধ্বংসের দিন’ (বুখারী হা/৪১৯৪)।
ইতিমধ্যে পিছে পিছে রাসূল (ছাঃ) ৫০০ ছাহাবীর এক বাহিনী নিয়ে সন্ধ্যার পরে উপস্থিত হন। ডাকাত দলের নেতা আব্দুর রহমানের নিক্ষিপ্ত বর্শার আঘাতে ছাহাবী আখরাম (أَخرَم) শহীদ হন। পরক্ষণেই আবু ক্বাতাদার বর্শার আঘাতে আব্দুর রহমান নিহত হয়। সালামা বিন আকওয়া‘-এর দুঃসাহস ও বীরত্বের পুরস্কার স্বরূপ আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তাকে গণীমতের দুই অংশ দান করেন। যার মধ্যে পদাতিকের একাংশ ও অশ্বারোহীর একাংশ। মদীনায় ফেরার সময় সম্মান স্বরূপ নিজের সবচেয়ে দ্রুতগামী ‘আযবা’ (الْعَضْبَاءُ) উটের পিঠে তাকে বসিয়ে নেন’।[1] এই যুদ্ধে মদীনার আমীর ছিলেন আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূম (রাঃ) এবং পতাকাবাহী ছিলেন মিক্বদাদ বিন ‘আমর (রাঃ)।[2]
[2]. যাদুল মা‘আদ; আর-রাহীক্ব ৩৬২-৬৩ পৃঃ।