পারস্য সম্রাটের গবর্ণর বাহরায়নের শাসক মুনযির বিন সাওয়া-র নিকটে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ‘আলা ইবনুল হাযরামী (রাঃ)-কে পত্রবাহক হিসাবে প্রেরণ করেন। পত্র পেয়ে তিনি ইসলাম কবুল করেন এবং বাহরায়নের অধিকাংশ লোক মুসলমান হয়ে যায়। অতঃপর তিনি জওয়াবী পত্রে রাসূল (ছাঃ)-কে লেখেন, হে আল্লাহর রাসূল! বাহরায়েন বাসীদের অনেকে ইসলাম পসন্দ করেছে ও কবুল করেছে, অনেকে অপছন্দ করেছে। আমার এ মাটিতে অনেক মজূসী (অগ্নিউপাসক) ও ইহূদী রয়েছে। অতএব এদের বিষয়ে আপনার নির্দেশ কি আমাকে জানাতে মর্যী হয়’। তখন রাসূল (ছাঃ) তার জওয়াবে লিখলেন,
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ، مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُولِ اللهِ إلَى الْمُنْذِرِ بْنِ سَاوَى سَلاَمٌ عَلَيْكَ فَإِنِّي أَحْمَدُ إلَيْك اللهَ الَّذِيْ لاَ إلَهَ إلاَّ هُوَ وَأَشْهَدُ أَنْ لاَ إلَهَ إلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ، أَمَّا بَعْدُ : فَإِنِّيْ أُذَكِّرُكَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ فَإِنَّهُ مَنْ يَنْصَحْ فَإِنَّمَا يَنْصَحُ لِنَفْسِهِ وَإِنَّهُ مَنْ يُطِعْ رُسُلِيْ وَيَتَّبِعْ أَمْرَهُمْ فَقَدْ أَطَاعَنِيْ وَمَنْ نَصَحَ لَهُمْ فَقَدْ نَصَحَ لِيْ وَإِنَّ رُسُلِيْ قَدْ أَثْنَوْا عَلَيْكَ خَيْرًا وَإِنِّي قَدْ شَفَعْتُكَ فِيْ قَوْمِك فَاتْرُكْ لِلْمُسْلِمِيْنَ مَا أَسْلَمُوْا عَلَيْهِ وَعَفَوْتُ عَنْ أَهْلِ الذُّنُوبِ فَاقْبَلْ مِنْهُمْ وَإِنَّكَ مَهْمَا تُصْلِحْ فَلَنْ نَعْزِلَكَ عَنْ عَمَلِكَ وَمَنْ أَقَامَ عَلَى يَهُوْدِيَّةٍ أَوْ مَجُوْسِيَّةٍ فَعَلَيْهِ الْجِزْيَةُ-
‘করুণাময় কৃপানিধান আল্লাহর নামে। আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদের পক্ষ হ’তে মুনযির বিন সাওয়ার প্রতি। আপনার উপরে শান্তি বর্ষিত হৌক! অতঃপর আমি আপনার নিকটে আল্লাহর প্রশংসা করছি, যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও তাঁর রাসূল। অতঃপর আমি আপনাকে মহান আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। কেননা যে ব্যক্তি উপদেশ গ্রহণ করে, সে তার নিজের জন্যই তা করে। যে ব্যক্তি আমার প্রেরিত দূতদের আনুগত্য করে ও তাদের নির্দেশের অনুসরণ করে, সে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করে। যে ব্যক্তি তাদের প্রতি সদাচরণ করে, সে আমার প্রতি সদাচরণ করে। আমার দূতগণ আপনার সম্পর্কে উত্তম প্রশংসা করেছে। আপনার জাতি সম্পর্কে আমি আপনার সুফারিশ কবুল করলাম। অতএব মুসলমানদেরকে তাদের অবস্থার উপরে ছেড়ে দিন। অপরাধীদের আমি ক্ষমা করলাম। আপনিও ক্ষমা করুন। অতঃপর যতদিন আপনি সংশোধনের পথে থাকবেন, ততদিন আমরা আপনাকে দায়িত্ব হ’তে অপসারণ করব না। আর যে ব্যক্তি ইহূদী বা মজূসী ধর্মের উপরে থাকবে, তার উপরে জিযিয়া কর আরোপিত হবে’।[1] ইবনুল ক্বাইয়িম এটি হোনায়েন যুদ্ধের পর ৮ম হিজরীর যুলক্বা‘দাহ মাসে জি‘ইর্রানাহ থেকে ফেরার পূর্বের এবং ইবনু হিশাম এটি ৮ম হিজরীর রামাযান মাসে মক্কা বিজয়ের পূর্বের ঘটনা বলেছেন।[2]
[2]. যাদুল মা‘আদ ১/১১৯; ইবনু হিশাম ২/৫৭৬।