নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি
হোদায়বিয়ায় অবতরণ ও পানির সংকট (النزول بالحديبية وضيق المياه)

মিসওয়ার বিন মাখরামাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) যুদ্ধ এড়ানোর জন্য মহাসড়ক ছেড়ে ডান দিকে পাহাড়ী পথ ধরে অগ্রসর হ’তে থাকেন এবং মক্কার নিম্নাঞ্চলে হোদায়বিয়ার শেষ প্রান্তে একটি ঝর্ণার নিকটে গিয়ে অবতরণ করেন। ঐ সময় রাসূল (ছাঃ)-এর উষ্ট্রী ‘ক্বাছওয়া’ বসে পড়ে। লোকেরা বলল, ক্বাছওয়া নাখোশ হয়েছে(خَلَأَتِ الْقَصْوَاءُ)। উত্তরে রাসূল (ছাঃ) বললেন,مَا خَلَأَتِ الْقَصْوَاءُ وَمَا ذَاكَ لَهَا بِخُلُقٍ وَلَكِنْ حَبَسَهَا حَابِسُ الْفِيلِ ‘ক্বাছওয়া নাখোশ হয়নি, আর এটা তার চরিত্রে নেই। কিন্তু তাকে আটকে দিয়েছেন সেই সত্তা যিনি (আবরাহার) হস্তীকে (কা‘বায় হামলা করা থেকে) আটকিয়েছিলেন’। তৃষ্ণার্ত সাথীদের পানির সমস্যা সমাধানে উক্ত ঝর্ণা অতি অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যর্থ হয়ে গেল। ফলে সবাই রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে পানির আবেদন করল। তখন তিনি নিজের শরাধার থেকে একটি তীর বের করে তাদের হাতে দিলেন এবং সেটাকে ঝর্ণায় নিক্ষেপ করার জন্য বললেন। ‘অতঃপর আল্লাহর কসম! ঝর্ণায় অতক্ষণ পর্যন্ত পানি জোশ মারতে থাকল, যতক্ষণ না তারা পরিতৃপ্ত হ’লেন এবং সেখান থেকে (মদীনায়) ফিরে গেলেন’।[1] জাবের ও বারা বিন আযেব (রাঃ)-এর বর্ণনায় এসেছে, তিনি একটি পানির পাত্র চাইলেন। অতঃপর তা থেকে ওযূ করলেন। অতঃপর অবশিষ্ট পানি কূয়ায় ফেলতে বললেন। অতঃপর সেখান থেকে ঝর্ণাধারার ন্যায় পানি প্রবাহিত হ’তে থাকল’।[2] বস্ত্ততঃ এটি ছিল রাসূল (ছাঃ)-এর অন্যতম মু‘জেযা।

[1]. বুখারী হা/২৭৩২; মিশকাত হা/৪০৪২ ‘জিহাদ’ অধ্যায়-১৯, ‘সন্ধি’ অনুচ্ছেদ-৯; ইবনু কাছীর হাদীছটি সূরা ফাৎহ ২৬ আয়াত ও সূরা ফীল-এর তাফসীরে উদ্ধৃত করেছেন।

[2]. বুখারী হা/৩৫৭৬, ৪১৫০; মিশকাত হা/৫৮৮২-৮৩ ‘ফাযায়েল ও শামায়েল’ অধ্যায়-২৯, ‘মু‘জিযা সমূহ’ অনুচ্ছেদ-৭।