তাঁর মোট ৩ পুত্র ও ৪ কন্যা ছিল। ইবরাহীম ব্যতীত বাকী ৬ সন্তানের সবাই ছিলেন খাদীজার গর্ভজাত। তিনি বেঁচে থাকা অবধি রাসূল (ছাঃ) দ্বিতীয় বিবাহ করেননি।[1] মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর সাথে বিয়ের সময় খাদীজা পূর্ব স্বামীদ্বয়ের কয়েকজন জীবিত সন্তানের মা ছিলেন। তাঁর গর্ভজাত ও পূর্বস্বামীর সন্তানেরা সকলে ইসলাম কবুল করেন ও সকলে ছাহাবী ছিলেন। খাদীজার গর্ভে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রথম সন্তান ছিল ক্বাসেম। তার নামেই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর উপনাম ছিল আবুল ক্বাসেম। অতঃপর কন্যা যয়নব, পুত্র আব্দুল্লাহ; যার লকব ছিল ত্বাইয়িব ও ত্বাহের। কারণ তিনি নবুঅত লাভের পর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। অতঃপর রুক্বাইয়া, উম্মে কুলছূম ও ফাতেমা। ক্বাসেম ছিলেন সন্তানদের মধ্যে সবার বড়। যিনি ১৭ মাস বয়সে মারা যান। নবুঅত লাভের পর আব্দুল্লাহ জন্ম গ্রহণের কিছু দিনের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করায় ‘আছ বিন ওয়ায়েল প্রমুখ কুরায়েশ নেতারা রাসূল (ছাঃ)-কে ‘আবতার’ বা নির্বংশ বলে অভিহিত করেন। কেননা সে যুগে কারু পুত্র সন্তান মারা গেলে এবং পরে পুত্র সন্তান হ’তে দেরী হ’লে আরবরা ঐ ব্যক্তিকে ‘আবতার’ বলত। অতঃপর চার কন্যার মধ্যে কে সবার বড় ও কে সবার ছোট এ নিয়ে মতভেদ আছে। তবে প্রসিদ্ধ মতে যয়নব বড় ও ফাতেমা ছিলেন ছোট।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মোট সাত সন্তানের ছয় জনই তাঁর জীবদ্দশায় মৃত্যুবরণ করেন। তাদের মধ্যে পুত্রগণ শৈশবে মারা যান। কন্যাগণ সকলে বিবাহিতা হন ও হিজরত করেন। কিন্তু ফাতেমা ব্যতীত বাকী তিন কন্যা রাসূল (ছাঃ)-এর জীবদ্দশায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর ছয় মাস পরে ফাতেমা (রাঃ) মারা যান। রাসূল (ছাঃ)-এর সর্বশেষ সন্তান ছিলেন পুত্র ‘ইবরাহীম’। তিনি ছিলেন মিসরীয় দাসী মারিয়া ক্বিবতীয়ার গর্ভজাত। যিনি মদীনায় জন্মগ্রহণ করেন এবং দুধ ছাড়ার আগেই মাত্র ১৮ মাস বয়সে ১০ম হিজরীর ২৯শে শাওয়াল মোতাবেক ৬৩২ খৃষ্টাব্দের ২৭ অথবা ৩০শে জানুয়ারী সূর্য গ্রহণের দিন সোমবার মদীনায় ইন্তেকাল করেন।[2]
[2]. বুখারী হা/১০৬০; মুসলিম হা/৯০৬; রহমাতুল্লিল ‘আলামীন ২/৯৮ পৃঃ।