জান্নাত-জাহান্নাম ভূমিকা আবদুল হামীদ ফাইযী ১ টি

الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على رسوله الكريم، وعلى آله وصحبه اجمعين، وبعد

মহান আল্লাহ জ্বিন ও ইনসানকে তার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। সেই ইবাদতের অসীলায় তাদের জন্য পুরস্কার রেখেছেন জান্নাত। তিনি মানুষের আত্মাকে আহবান করে বলেছেন,

يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ (27) ارْجِعِي إِلَىٰ رَبِّكِ رَاضِيَةً مَّرْضِيَّةً (28) فَادْخُلِي فِي عِبَادِي (29) وَادْخُلِي جَنَّتِي (30)

অর্থাৎ, হে উদ্বেগশূন্য চিত্ত! তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট ফিরে এস সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে। সুতরাং তুমি আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হও এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর। (ফাজরঃ ২৭-৩০)

তিনি তার প্রস্তুতকৃত জান্নাতের প্রতি অধিক অধিক আগ্রহান্বিত হতে মানুষকে আহবান করেছেন। তিনি তা পাওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি, ছুটাছুটি ও প্রতিযোগিতা করতে আদেশ করেছেন,

وَسَارِعُوا إِلَىٰ مَغْفِرَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِينَ

অর্থাৎ, তোমরা প্রতিযোগিতা (ত্বরা) কর, তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে ক্ষমা এবং বেহেস্তের জন্য, যার প্রস্থ আকাশ ও পৃথিবীর সমান, যা ধর্মভীরুদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। (আলে ইমরানঃ ১৩৩)।

পক্ষান্তরে মানুষকে ভয় দেখিয়েছেন তার প্রস্তুতকৃত জাহান্নামের। তিনি বলেছেন,

وَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ

অর্থাৎ, তোমরা সেই আগুনকে ভয় কর, যা অবিশ্বাসীদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। (আলে ইমরানঃ ১৩১)

তিনি যেমন মানুষকে আদেশ করেছেন, সে যেন নিজেকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করে, তেমনি আদেশ করেছেন, সে যেন তার পরিবারকেও রক্ষা করে। তিনি বলেছেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلَائِكَةٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ

অর্থাৎ, হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবারপরিজনকে রক্ষা কর অগ্নি হতে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে নিয়ােজিত আছে নির্মম-হৃদয়, কঠোর-স্বভাব ফিরিস্তাগণ, যারা আল্লাহ যা তাদেরকে আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং তারা যা করতে আদিষ্ট হয়, তাই করে। (তাহরীমঃ ৬)

মুমিন বান্দার সেই প্রয়াস নিরন্তর। জাহান্নাম থেকে মুক্তিলাভ করে জান্নাতে স্থানলাভ করাই সবচেয়ে বড় সফলতা। আর সেই সফলতা লাভ হবে মহান সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভ করার মধ্য দিয়ে। তাই মুসলিম কালেমা পড়ে, সকল ফরয আদায় করে, সকল হারাম বর্জন করে। অধিক মর্যাদা লাভের জন্য অতিরিক্ত নফল ইবাদতও করে। অনুরূপ একটি মাহাত্ম্যপূর্ণ ইবাদত মানুষকে জান্নাতের দিকে আহবান করা এবং জাহান্নাম থেকে সতর্ক করা। আমরা এই ইবাদতের মাধ্যমেও চাই আল্লাহর সন্তুষ্টি ও মহা পুরস্কার জান্নাত। আল্লাহ যেন আমাদেরকে, আমাদের পিতা-মাতা ও ওস্তাদগণকে তার চিরসুখময় জান্নাতে স্থান দান করেন। আমীন। পুস্তিকাটি রচনা করতে যে সকল লেখকের পুস্তকের সাহায্য নেওয়া হয়েছে, মহান আল্লাহ তাদেরকেও জান্নাত নসীব করুন। আমীন।

বিনীত-আব্দুল হামীদ মাদানী
আল-মাজমাআহ ৮/১১/২০১০