الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على أشرف الأنبياء والمرسلين نبينا محمد وعلى آله وصحبه ومن تبعهم بإحسان إلى يوم الدين أما بعد
আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে মানুষ ও জিন সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁর এবাদতের জন্য। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
‘‘আমি জিন এবং মানুষকে একমাত্র আমার এবাদত করার জন্যই সৃষ্টি করেছি’’। (সূরা যারিয়াতঃ ৫৬)। আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,
أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ
‘‘তোমরা কি ধারণা করো যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবেনা? অতএব প্রকৃত বাদশাহ আল্লাহ্ হচ্ছেন সুমহান। তিনি ব্যতীত অন্য কোন সত্য মাবুদ নেই। তিনিই সম্মানিত আরশের মালিক’’। (সূরা মুমিনুনঃ ১১৫-১১৬) সূরা নিসার ৩৬ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,
وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا
‘‘তোমরা আল্লাহর এবাদত করো এবং তাঁর সাথে অন্য কিছুকে শরীক করোনা’’। এককভাবে আল্লাহর এবাদত করাই হচ্ছে সেই তাওহীদ, যার জ্ঞান অর্জন করা এবং যা মেনে চলা সকল আদম সন্তানের উপর সর্বপ্রথম ফরয। আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
فَاعْلَمْ أَنَّهُ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ
‘‘জেনে রেখো, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন সত্য মাবুদ নেই। অতঃপর ক্ষমা প্রার্থনা করো তোমার গুনাহর জন্য এবং মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্য’’। (সূরা মুহাম্মাদঃ ১৯)
আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ আদম (আঃ) থেকে শুরু করে নূহ (আঃ)এর জাতি পর্যন্ত একহাজার বছরের ব্যবধান ছিল। এ দীর্ঘ সময়ের মধ্যে সকল মানুষই তাওহীদের উপর ছিল। সকলেই এক আল্লাহর এবাদত করতো। তাদের মধ্যে শির্কের কোন অস্তিত্বই ছিলনা।
অতঃপর নূহ (আঃ)এর জাতির মধ্যে সর্বপ্রথম শির্কের আবির্ভাব হয়। কতিপয় সৎ লোককে নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কারণেই তাদের মধ্যে শির্ক প্রবেশ করে। মূলতঃ তাদের মাধ্যমেই পৃথিবীর মধ্যে শির্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সহীহ বুখারীতে আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি আল্লাহ তাআলার বাণীঃ
وَقَالُوا لَا تَذَرُنَّ آَلِهَتَكُمْ وَلَا تَذَرُنَّ وَدًّا وَلَا سُوَاعًا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسْرًا
‘‘কাফেররা বললঃ তোমরা নিজেদের মাবুদগুলোকে পরিত্যাগ করোনা। বিশেষ করে ওয়াদ, সুআ, ইয়াগুছ, ইয়াঊক এবং নাসরকে কখনও পরিত্যাগ করোনা’’-এর ব্যাখ্যায় বলেন, এগুলো হচ্ছে নূহ (আঃ)-এর গোত্রের কতিপয় সৎ ব্যক্তির নাম। তারা যখন মৃত্যু বরণ করল, তখন শয়তান তাদের কওমকে বুঝিয়ে বললঃ যেসব জায়গায় তাদের মজলিস বসত সেসব জায়গাতে তাদের মূর্তি স্থাপন করো এবং তাদের সম্মানার্থে তাদের নামেই মূর্তিগুলোর নামকরণ করো। তখন তারা তাই করল। তাদের জীবদ্দশায় মূর্তিগুলোর পূজা করা হয়নি ঠিকই; কিন্তু মূর্তি স্থাপনকারীরা যখন মৃত্যু বরণ করল এবং পরবর্তীরা মূর্তি স্থাপনের ইতিহাস ভুলে গেল, তখনই মূর্তিগুলোর এবাদত শুরু হল।
সুতরাং পৃথিবীতে শির্ক আসার সাথে সাথেই আল্লাহ তাআলা নূহ (আঃ)-কে পাঠালেন। তিনি তাঁর জাতিকে শির্ক বর্জন করে এক আল্লাহর এবাদতের দিকে আহবান জানালেন। ৯৫০ বছর তিনি স্বীয় সম্প্রদায়কে শির্ক বর্জন ও তাওহীদের প্রতি দাওয়াত দিলেন। এ পথে সর্বপ্রকার প্রচেষ্টা চালালেন। কিন্তু তাঁর জাতির অল্প সংখ্যক লোকই ঈমান আনয়ন করলো। তাদের সীমা লংঘন ও অবাধ্যতার কারণে আল্লাহ তাআলা নূহ (আঃ)এর জাতিকে মহাপ্লাবনের মাধ্যমে ধ্বংস করলেন। নূহ (আঃ)এর পরও নবী-রাসূল আগমণের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলো। আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اُعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ
‘‘আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি। তাঁর মাধ্যমে এ নির্দেশ দিয়েছি যে, তোমরা আল্লাহর এবাদত করো এবং তাগুত থেকে দূরে থাকো’’। (সূরা নাহলঃ ৩৬) সূরা আরাফের ৫৯ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
لَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَى قَوْمِهِ فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ
‘‘নিশ্চয়ই আমি নুহকে তার সম্প্রদায়ের প্রতি পাঠিয়েছি। তিনি বললেনঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র এবাদত করো। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোনো সত্য মাবুদ নেই। তা না করলে আমি তোমাদের উপর একটি মহা দিবসের শাস্তির আশঙ্কা করছি। একই সূরার ৬৫ নং আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা আরো বলেনঃ
وَإِلَى عَادٍ أَخَاهُمْ هُودًا قَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ أَفَلَا تَتَّقُونَ
‘‘আদ সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছি তাদেরই ভাই হুদকে। তিনি বললেনঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র এবাদত করো। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন সত্য উপাস্য নেই। আল্লাহ্ তাআলা আরো বলেনঃ
وَإِلَى ثَمُودَ أَخَاهُمْ صَالِحًا قَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ
‘‘আর সামুদ সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছি তাদেরই ভাই সালেহকে। তিনি বললেনঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র এবাদত করো। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন সত্য মাবুদ নেই’’। (সূরা আরাফঃ ৭৩) আল্লাহ্ তাআলা আরো বলেনঃ
وَإِلَى مَدْيَنَ أَخَاهُمْ شُعَيْبًا قَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ
‘‘আমি মাদায়েনের প্রতি তাদের ভাই শুআইবকে প্রেরণ করেছি। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র এবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন সত্য উপাস্য নেই’’। (সূরা আরাফঃ ৮৫) সূরা হুদের আরো কয়েকটি আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন যে, নবীগণ সর্বপ্রথম তাওহীদ দিয়েই তাদের দাওয়াত শুরু করেছেন এবং এই তাওহীদের দিকেই নিজ নিজ উম্মতদেরকে আহবান জানিয়েছেন।
সবশেষে আল্লাহ তাআলা সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবীকে এমন জাতির কাছে প্রেরণ করলেন, যারা নবী-রাসূলদের দ্বীনকে ভুলে গিয়ে নানা প্রকার শির্কে লিপ্ত হয়েছিল। এমনকি আল্লাহর সম্মানিত ঘর কাবা শরীফেও তারা মূর্তি ঢুকিয়েছিল। অতঃপর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের মাঝে প্রেরিত হলেন। তিনি মক্কাবাসীদেরকে বললেনঃ
«يَا أَيُّهَا النَّاسُ قُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ تُفْلِحُوا»
‘‘হে লোক সকল! তোমরা বলোঃ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্। এতে তোমরা সফল হবে’’। সুতরাং সকল প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষের উপর এটিই সর্বপ্রথম ওয়াজিব। আরব, অনারব, জিন ইনসান, রাজা-প্রজা, ধনী-গরীব নির্বিশেষে পৃথিবীর সকল অধিবাসীই এক আল্লাহর এবাদত করবে, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্র ঘোষণা দিবে, তাঁর সাথে অন্য কিছুর এবাদত করবেনা। কোন নবী, ফেরেশতা, পাথর, কবর, অলী বা অন্য কারো এবাদত করবেনা। কেননা সকল প্রকার এবাদতের হকদার একমাত্র আল্লাহ। এতে অন্য কারো কোন অংশ নেই।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় ১৩ বছর অবস্থান করে মানুষকে এই পবিত্র কালেমার দাওয়াত দিলেন এবং এই পথে মক্কাবাসীদের পক্ষ হতে নানা রকম যুলুম-নির্যাতন সহ্য করলেন। অতঃপর মদীনায় হিজরত করে সেখানে ১০ বছর বসবাস করে মানুষকে আল্লাহর দ্বীনের দিকে দাওয়াত দিলেন এবং আল্লাহর রাস্তায় সর্বোত্তম জিহাদ করলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর দাওয়াতকে পূর্ণতা দান করলেন। মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে সেই দাওয়াত সাফল্য অর্জন করল। তাঁর জীবদ্দশাতেই মক্কা-মদীনাসহ আরবের বিশাল অংশে তাওহীদ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলো। লোকেরা দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করল।
অতঃপর তিনি মৃত্যু বরণ করলেন। তাঁর পরে সাহাবীগণও এই তাওহীদের প্রচার ও প্রসারে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়লেন। সমগ্র আরব ভূমি শির্ক থেকে পবিত্র হল। ইরাক ও মিশর পর্যন্ত ইসলামের বিজয় সম্প্রসারিত হলো। এই তাওহীদের বদৌলতেই মুসলিমগণ পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা লাভ করলো। তাদের জন্য আল্লাহর ওয়াদা বাস্তবায়িত হলো। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
﴿هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ﴾
‘‘তিনিই তাঁর রাসূলকে হেদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে একে অন্য সমস্ত ধর্মের উপর জয়যুক্ত করেন। যদিও এতে মুশরিকরা অসন্তুষ্ট হয়’’। (সূরা ফাতাহঃ ২৮)
ইসলামের গৌরবময় তিন যুগ অতিবাহিত হওয়ার পর মুসলিমদের মাঝে পুনরায় শির্কের অনুপ্রবেশ ঘটল। মুসলিমদের ঈমান ও আকীদাহ যখন দুর্বল হয়ে পড়ল তখন তাদের দুর্বলতার সুযোগে নূহ (আঃ)এর গোত্রের মধ্যে যেই পথ দিয়ে শির্ক প্রবেশ করেছিল, একই পথ দিয়েই এই উম্মতের মধ্যেও নতুনভাবে শির্ক প্রবেশ করল। অজ্ঞ মুসলিমরা সৎ লোকদেরকে নিয়ে বাড়াবাড়ি শুরু করে এবং তাদের কবরের উপর গম্বুজ, মিনার, মসজিদ ইত্যাদি নির্মাণ করতে থাকে। মৃতদের কাছে দুআ করা, প্রয়োজন পূরণের জন্য তাদেরকে আহবান করা, তাদের জন্য পশু যবেহ করা, মানত করা এবং অন্যান্য সকল প্রকার এবাদত শুরু হয়ে যায়। মক্কা-মদীনাসহ সমগ্র আরব উপদ্বীপ এবং আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে আইয়্যামে জাহেলীয়াতের শির্কের চর্চা শুরু হয়।
আল্লাহ তাআলার অশেষ মেহেরবাণীতে এই উম্মতকে শির্ক থেকে পবিত্র করার জন্য এবং তাদের মাঝে তাওহীদের দাওয়াতকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য যুগে যুগে অসংখ্য মর্দে মুজাহিদ প্রেরণ করেন। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া এবং তাঁর সুযোগ্য শিষ্য ইমাম ইবনুল কাইয়িমের নাম এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ্য। তারা তাদের লেখনীর মাধ্যমে মুসলিম জাতির মাঝে তাওহীদের দাওয়াতকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে পথহারা অগণিত মানুষ তাওহীদের পথে ফিরে আসে।
এরই ধারাবাহিকতায় হিজরী ১২শতকে আগমণ করেন বিপ্লবী সংস্কারক শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহাব (রঃ)। তখন সমগ্র আরব উপদ্বীপ এবং এর আশপাশের অঞ্চলগুলো শির্কে ভরপুর হয়ে গিয়েছিল। যৌবনে পদার্পন করে তিনি মুসলিমদের মাঝে এ সমস্ত শির্ক দেখে গভীরভাবে মর্মাহত হন এবং শির্কের কবলে নিমজ্জিত মুসলিম জাতিকে তাওহীদের দিকে ফিরিয়ে আনার জন্য দাওয়াত ও সংস্কারের কাজ শুরু করেন। জোরালো ভাষণ-বক্তৃতা ও লেখনির মাধ্যমে মুসলিমদেরকে তাওহীদের দিকে আহবান জানান এবং শির্কের প্রতিবাদ করেন। তাওহীদের মাসআলাগুলোর বিস্তারিত বিবরণ এবং শির্ক-বিদআতের প্রতিবাদে অনেক মূল্যবান কিতাব রচনা করেন। তার মধ্যে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ হচ্ছে শাইখের রচিত কিতাবুত্ তাওহীদ। এতে তিনি তাওহীদে উলুহীয়াতের বিশদ বিবরণ দিয়েছেন এবং মুসলিম দেশসমূহে যে সমস্ত শির্ক-বিদআত ও কুসংস্কার ছড়িয়ে পড়েছিল তার জোরালো প্রতিবাদ করেছেন। শাইখের দাওয়াতের ফলাফল এখনো বিদ্যমান রয়েছে। তাঁর পথ ধরেই আলেমগণ যুগ যুগ ধরে মানুষকে তাওহীদের দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছেন।
পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় এই কিতাবটির অনুবাদ হয়েছে। হয়েছে বাংলা ভাষাতেও। কিন্তু এই কিতাবটি সংক্ষিপ্ত হওয়ার কারণে আলেমগণ এর ছোট বড় অনেক ব্যাখ্যাগ্রন্থ রচনা করেছেন। এতে লেখকের উদ্দেশ্য আরো সুস্পষ্ট হয়েছে।
যে সমস্ত মুসলিম অঞ্চল শির্ক-বিদআতের ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত রয়েছে তার মধ্যে আমাদের দেশও অন্যতম। কবর ও মাজারকে কেন্দ্র করে সকল প্রকার শির্কের চর্চাই হচ্ছে এখানে। এ দেশের অধিকাংশ অধিবাসী মুসলিম হলেও তাওহীদ ও তার বিপরীত বিষয় শির্ক সম্পর্কে তাদের জ্ঞান একেবারেই নগণ্য। তাই বাংলা ভাষাতে কিতাবুত তাওহীদের পাশাপাশি ব্যাখ্যাগ্রন্থগুলোরও অনুবাদ হওয়া এবং বাংলাভাষীদের মাঝে ব্যাপক প্রচার ও প্রসার হওয়া এখন সময়ের দাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই এ সব ব্যাখ্যাগ্রন্থ হতে বাংলায় অনুবাদের জন্য আমরা কিতাবুত তাওহীদের অন্যতম ব্যাখ্যাগ্রন্থ قرة عيون الموحدين নামক কিতাবটিকে বেছে নেই। এই ব্যাখ্যা গ্রন্থের লেখক হচ্ছেন শাইখেরই সুযোগ্য নাতি শাইখ আব্দুর রাহমান বিন হাসান রাহিমাহুল্লাহ।
অল্প সময়ের মধ্যে এর অনুবাদের কাজ শেষ হওয়ায় আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পরকালে নাজাতের উপায় ও বাংলাভাষী মুসলিম ভাইদের লাইব্রেরীসমূহে সামান্য স্থান দখল করে নেয়াই এ কাজের পিছনে আমার একমাত্র লক্ষ্য।
হে আল্লাহ! তুমি এই কিতাবের লেখক, অনুবাদক, সম্পাদক ও প্রকাশনার কাজে সহযোগিতাকারীদের সকলকে তোমার রহমত দ্বারা ঢেকে নাও এবং নবী, সিদ্দীক, শহীদ এবং সালেহীনদের সাথে জান্নাতুল ফিরদাউসে তাদের স্থান করে দাও। আমীন।
শাইখ আব্দুল্লাহ শাহেদ আল-মাদানী
মোবাইল সৌদি আরবঃ +৯৬৬৫০৩০৭৬৩৯০
বাংলাদেশঃ +৮৮০১৭৩২৩২২১৫৯
ই-মেইলঃ ashahed1975@gmail.