খলিফা হওয়ার পরদিনই আবু বকর কাপড়ের গাঁঠরী মাথায় নিয়ে বাজারের পথে রওয়ানা হলেন। তিনি ছিলেন কাপড়ের ব্যবসায়ী। এতেই তাঁর সংসার চলত। কিন্তু উম্মাহর প্রতি খিলাফতের দায়িত্ব পালনের যুক্তিতে উমর তাঁকে ব্যবসার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করলেন। তিনি তাকে আবু ওবায়দার কাছে নিয়ে গেলেন। বায়তুল মাল থেকে তাঁর জন্য প্রতিদিন অর্ধেক ভেড়া ও বাৎসরিক ২০০০ দীনার বেতন নির্ধারণ করা হলো। এছাড়া শীতের ও গ্রীষ্মের কাপড়।

পরবতীতে এ বেতন বাড়িয়ে দৈনিক একটি ভেড়া ও বাৎসরিক ৩০০০ দীনার করা হল, এটি তাঁর প্রয়োজন ছিল। মিম্বরে দাঁড়িয়ে এ ব্যাপারে তিনি উম্মাহর সম্মতি নিলেন। তাঁদের খাবার ছিল রুটি, মাংস আর তিনি ছিলেন অত্যন্ত অতিথিপরায়ণ। মৃত্যুর সময় তিনি যা রেখে গিয়েছিলেন তা হচ্ছে একটি দাস, একটি গামলা, একটি চাদর, তা তিনি পরবর্তী খালিফাকে ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আর তাঁর যা কিছু স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ছিল, তা বিক্রি করে বাইতুল মাল থেকে যা নিয়েছিলেন, তা ফেরৎ দিতে বলে গিয়েছিলেন। একথা শুনে উমর কেঁদে বলেছিলেন: আবু বকর তাঁর পরবর্তীদের জন্য কঠিন দৃষ্টান্ত রেখে গেলেন।

খলিফা হওয়ার পরও তিনি আগে যা করতেন, তাই করেছেন। প্রতিবেশী ছোট ছোট মেয়েদের দুধ দোয়ানোর কাজে আগের মতই সাহায্য করতেন। উমর এক বৃদ্ধার বাড়িতে প্রতিদিন ভোরে যেতেন ও তার কাজ করে দিতেন। একদিন গিয়ে দেখলেন, কে যেন আগেই কাজগুলি করে দিয়ে গেছেন। রোজই এমন হতে থাকল। তারপর একদিন উমর দেখতে পেলেন, কাজ শেষ করে যিনি বেরিয়ে আসছেন, তিনি হচ্ছেন আবু বকর।