ওরা ইসলামের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না

আমাদের সাহস হারাবার কিছু নেই। ইসলামের শত্রুরা যতই আদাপানি খেয়ে চেষ্টা করুক আমরা ঠিক থাকলে ইসলামের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। তাদের সব কৌশল বিফলে যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ وَمَكَرُواْ وَمَكَرَ ٱللَّهُۖ وَٱللَّهُ خَيۡرُ ٱلۡمَٰكِرِينَ ٥٤ ﴾ [ال عمران: ٥٤]

‘আর তারা কুটকৌশল করেছে এবং আল্লাহ কৌশল করেছেন। আর আল্লাহ উত্তম কৌশলকারী।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ৫৪)

ওদেরর ইসলাম নির্মূলের চেষ্টা কোনোদিন সফল হবে না। বরং ইসলাম তার আলোয় উদ্ভাসিত হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ يُرِيدُونَ أَن يُطۡفِ‍ُٔواْ نُورَ ٱللَّهِ بِأَفۡوَٰهِهِمۡ وَيَأۡبَى ٱللَّهُ إِلَّآ أَن يُتِمَّ نُورَهُۥ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡكَٰفِرُونَ ٣٢ هُوَ ٱلَّذِيٓ أَرۡسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلۡهُدَىٰ وَدِينِ ٱلۡحَقِّ لِيُظۡهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡمُشۡرِكُونَ ٣٣ ﴾ [التوبة: ٣٢، ٣٣]

‘তারা আল্লাহর নূরকে নির্বাপিত করতে চায় তাদের মুখের (ফুঁক) দ্বারা, কিন্তু আল্লাহ তো তাঁর নূর পরিপূর্ণ করা ছাড়া অন্য কিছু চান না, যদিও কাফিররা অপছন্দ করে। তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দীনসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে তিনি একে সকল দীনের ওপর বিজয়ী করেন, যদিও মুশরিকরা অপছন্দ করে।’ (সূরা আত-তাওবা, আয়াত : ৩২-৩৩)

আরেক আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ يُرِيدُونَ لِيُطۡفِ‍ُٔواْ نُورَ ٱللَّهِ بِأَفۡوَٰهِهِمۡ وَٱللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِۦ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡكَٰفِرُونَ ٨ ﴾ [الصف: ٨]

‘তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নূরকে পূর্ণতাদানকারী। যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে।’ (সূরা আস-সফ, আয়াত : ৮)

আমাদের কাজ হবে সর্বোচ্চ চেষ্টা ব্যয় করা এবং সম্ভাব্য সব কৌশল প্রয়োগ করা। নিচে উল্লেখিত আল্লাহর বাণী থেকেই আমরা নিজেদের কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে পারি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ ٱدۡعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِٱلۡحِكۡمَةِ وَٱلۡمَوۡعِظَةِ ٱلۡحَسَنَةِۖ وَجَٰدِلۡهُم بِٱلَّتِي هِيَ أَحۡسَنُۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعۡلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِۦ وَهُوَ أَعۡلَمُ بِٱلۡمُهۡتَدِينَ ١٢٥ ﴾ [النحل: ١٢٥]

‘তুমি তোমরা রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহ্বান কর এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সঙ্গে বিতর্ক কর। নিশ্চয় একমাত্র তোমার রবই জানেন কে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে এবং হিদায়াতপ্রাপ্তদের তিনি খুব ভাল করেই জানেন।’ (সূরা আন-নাহল, আয়াত : ১২৫)

ইসলামের শত্রুদের নির্মূলে চেষ্টা যদি সর্বোচ্চ হয় তবে আল্লাহ আমাদের বিজয়ী করবেনই। প্রয়োজনে তিনি ফেরেশতা দিয়ে আমাদের সাহায্য করবেন। নিচের আয়াতগুলোয় লক্ষ্য করুন। আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন,

﴿ وَأَعِدُّواْ لَهُم مَّا ٱسۡتَطَعۡتُم مِّن قُوَّةٖ وَمِن رِّبَاطِ ٱلۡخَيۡلِ تُرۡهِبُونَ بِهِۦ عَدُوَّ ٱللَّهِ وَعَدُوَّكُمۡ وَءَاخَرِينَ مِن دُونِهِمۡ لَا تَعۡلَمُونَهُمُ ٱللَّهُ يَعۡلَمُهُمۡۚ وَمَا تُنفِقُواْ مِن شَيۡءٖ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ يُوَفَّ إِلَيۡكُمۡ وَأَنتُمۡ لَا تُظۡلَمُونَ ٦٠ ۞وَإِن جَنَحُواْ لِلسَّلۡمِ فَٱجۡنَحۡ لَهَا وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡعَلِيمُ ٦١ وَإِن يُرِيدُوٓاْ أَن يَخۡدَعُوكَ فَإِنَّ حَسۡبَكَ ٱللَّهُۚ هُوَ ٱلَّذِيٓ أَيَّدَكَ بِنَصۡرِهِۦ وَبِٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٦٢ ﴾ [الانفال: ٦٠، ٦٢]

‘আর তাদের মুকাবিলার জন্য তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী শক্তি ও অশ্ব বাহিনী প্রস্তুত কর, তা দ্বারা তোমরা ভয় দেখাবে আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদেরকে এবং এরা ছাড়া অন্যদেরকেও, যাদেরকে তোমরা জান না, আল্লাহ তাদেরকে জানেন। আর তোমরা যা আল্লাহর রাস্তায় খরচ কর, তা তোমাদেরকে পরিপূর্ণ দেয়া হবে, আর তোমাদেরকে যুলম করা হবে না। আর যদি তারা সন্ধির প্রতি ঝুঁকে পড়ে, তাহলে তুমিও তার প্রতি ঝুঁকে পড়, আর আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল কর, নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। আর যদি তারা তোমাকে ধোঁকা দিতে চায়, তাহলে তোমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তিনিই তোমাকে শক্তিশালী করেছেন তাঁর সাহায্য ও মুমিনদের দ্বারা। (সূরা আল-আনফাল, আয়াত : ৬০-৬২)

আমাদের কাজ নাস্তিকদের সাধ্যমত সুপথে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করা। আমরা সুপথ দেখানোর পরও যদি ফিরে না আসে তবে আল্লাহ তাদের সম্পর্কে তো বলেই দিয়েছেন। তিনিই তাদের বিচারের ভার নিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّنِ ٱفۡتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَ وَهُوَ يُدۡعَىٰٓ إِلَى ٱلۡإِسۡلَٰمِۚ وَٱللَّهُ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّٰلِمِينَ ٧ ﴾ [الصف: ٧]

‘সেই ব্যক্তির চেয়ে অধিক যালিম আর কে? যে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে, অথচ তাকে ইসলামের দিকে আহ্বান করা হয়। আর আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না।’ (সূরা আস-সফ, আয়াত : ৭)

আরেক আয়াতে অবাধ্যাচারীদের সতর্ক করে আল্লাহ বলেন,

﴿ وَلَا يَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ سَبَقُوٓاْۚ إِنَّهُمۡ لَا يُعۡجِزُونَ ٥٩ ﴾ [الانفال: ٥٩]

‘আর কাফিররা যেন কখনও মনে না করে যে, তারা (আযাবের) নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে, নিশ্চয় তারা (আল্লাহকে আযাব প্রদানে) অক্ষম করতে পারে না।’ (সূরা আল-আনফাল, আয়াত : ৫৯)

অন্য আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন,

﴿ وَمَنۡ أَعۡرَضَ عَن ذِكۡرِي فَإِنَّ لَهُۥ مَعِيشَةٗ ضَنكٗا وَنَحۡشُرُهُۥ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ أَعۡمَىٰ ١٢٤ قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرۡتَنِيٓ أَعۡمَىٰ وَقَدۡ كُنتُ بَصِيرٗا ١٢٥ قَالَ كَذَٰلِكَ أَتَتۡكَ ءَايَٰتُنَا فَنَسِيتَهَاۖ وَكَذَٰلِكَ ٱلۡيَوۡمَ تُنسَىٰ ١٢٦ وَكَذَٰلِكَ نَجۡزِي مَنۡ أَسۡرَفَ وَلَمۡ يُؤۡمِنۢ بِ‍َٔايَٰتِ رَبِّهِۦۚ وَلَعَذَابُ ٱلۡأٓخِرَةِ أَشَدُّ وَأَبۡقَىٰٓ ١٢٧ أَفَلَمۡ يَهۡدِ لَهُمۡ كَمۡ أَهۡلَكۡنَا قَبۡلَهُم مِّنَ ٱلۡقُرُونِ يَمۡشُونَ فِي مَسَٰكِنِهِمۡۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَأٓيَٰتٖ لِّأُوْلِي ٱلنُّهَىٰ ١٢٨ وَلَوۡلَا كَلِمَةٞ سَبَقَتۡ مِن رَّبِّكَ لَكَانَ لِزَامٗا وَأَجَلٞ مُّسَمّٗى ١٢٩ ﴾ [طه: ١٢٤، ١٢٩]

‘আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জন্য হবে নিশ্চয় এক সংকুচিত জীবন এবং আমি তাকে কিয়ামত দিবসে উঠাবো অন্ধ অবস্থায়। সে বলবে, ‘হে আমার রব, কেন আপনি আমাকে অন্ধ অবস্থায় উঠালেন? অথচ আমি তো ছিলাম দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন?

তিনি বলবেন, ‘এমনিভাবেই তোমার কাছে আমার নিদর্শনাবলী এসেছিল, কিন্তু তুমি তা ভুলে গিয়েছিলে এবং সেভাবেই আজ তোমাকে ভুলে যাওয়া হল’। আর এভাবেই আমি প্রতিফল দান করি তাকে, যে বাড়াবাড়ি করে এবং তার রবের নিদর্শনাবলীতে ঈমান আনে না। আর আখিরাতের আযাব তো অবশ্যই কঠোরতর ও অধিকতর স্থায়ী। এটি কি তাদেরকে সৎপথ প্রদর্শন করল না যে, আমি তাদের পূর্বে কত মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করে দিয়েছি, যাদের বাসভূমিতে তারা বিচরণ করে? নিশ্চয় এর মধ্যে রয়েছে বিবেকসম্পন্নদের জন্য নিদর্শন। আর যদি তোমার রবের পক্ষ থেকে পূর্ব সিদ্ধান্ত ও একটি কাল নির্ধারিত হয়ে না থাকত, তবে আশু শাস্তি অবশ্যম্ভাবী হত।’ (সূরা ত্ব-হা, আয়াত : ১২৪-১২৯)