রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« إِنَّ الْمُؤَذِّنَ يُغْفَرُ لَهُ مَدَى صَوْتِهِ، وَيُصَدِّقُهُ كُلُّ رَطْبٍ وَيَابِسٍ سَمِعَ صَوْته، وَالشَّاهِدُ عَلَيْهِ لَهُ خَمْسَ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً » .

“মুয়াযযিনকে তার কণ্ঠস্বর পৌঁছার প্রান্তদেশ পর্যন্ত ক্ষমা করে দেওয়া হবে এবং তার পক্ষে সাক্ষ্য ও সমর্থন দিবে তার আওয়াজ শুনা প্রত্যেকটি সজীব ও নির্জীব বস্তু; যারা তার ডাকে সাড়া দিয়ে সালাতে আসবে তার জন্য থাকবে তাদের উপরে পঁচিশটি মর্যাদা।”[1]

[1] হাদিসটি সহীহ, যা আবূ হুরায়রা, বারা ইবন ‘আযেব ও আবদুল্লাহ ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম থেকে বর্ণিত হয়েছে।

* আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসটির কয়েকটি সনদ রয়েছে:

প্রথমত: শু‘বা রহ. মূসা ইবন আবি ‘উসমান রহ. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: আমি আবূ ইয়াহইয়াকে তাঁর (আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ) থেকে হাদিস বর্ণনা করতে শুনেছি। — [ আহমাদ: (২/৪২৯ ও ৪৫৮); ইবনু হিব্বান: (১৬৬৪); আবূ দাউদ আত-তায়ালাসী: (১/৭৯ — ‘মিনহাতুল মা‘বুদ’); বায়হাকী: (১/৩৯৭) এবং আরও অনেকে]।

আমি বলি: এই সনদটি দুর্বল, মূসা ইবন আবি ‘উসমান আল-কুফী হলেন ‘মাকবুল’ (গ্রহণযোগ্য) বর্ণনাকারী; আর আবূ ইয়াহইয়া হলেন সাম‘আন আল-সলামী আল-কুফী এবং তিনিও ‘মাকবুল’ (গ্রহণযোগ্য) বর্ণনাকারী।

দ্বিতীয়ত: শু‘বা রহ. মূসা ইবন আবি ‘উসমান রহ. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: আমি আবূ ‘উসমানকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন: আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলতে শুনেছি এবং তিনি হাদিসের বাকি অংশ উল্লেখ করলেন। — [ আহমাদ: (১/৪১১) ]।

আমি বলি: এই সনদটি দুর্বল; কারণ, মূসা ইবন আবি ‘উসমান হলেন আত-তুব্বান, তিনি তার পিতা থেকে হাদিসটি বর্ণনা করেন এবং তিনি প্রথম তথা মূসা ইবন আবি ‘উসমান আল-কুফী নন; কেননা, ইবনু আবি হাতেম তাদের মধ্যে পার্থক্য করেছেন এবং হাফেয ইবনু হাজার ‘আসকালানী তা স্বীকার করেছেন, সুতরাং তাদের কথাটি গ্রহণযোগ্য কথা।

আর আবূ ‘উসমান হলেন ‘ইমরান আত-তুব্বান; আর মন বলে যে, তিনি সত্যবাদী-বিশ্বস্ত— আর আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।

তৃতীয়ত: মা‘মার-এর সনদে হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে, তিনি মানসুর থেকে বর্ণনা করেনে, তিনি ‘ইবাদ ইবন উনাইস থেকে বর্ণনা করেন এবং তিনি তাঁর (আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ) থেকে হাদিস বর্ণনা করেন।— [ আহমাদ: (২/২৬৬) ]।

আমি বলি: এই সনদটিন মধ্যে দুর্বলতা রয়েছে।

চতুর্থত: মুজাহিদ রহ. এর সনদেও হাদিসটি তাঁর (আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ) থেকে হাদিস বর্ণিত হয়েছে।— [ বায়হাকী: (২/৪৩১) ]।

পঞ্চমত: আবূ সালেহ রহ. এর সনদেও হাদিসটি তাঁর (আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ) থেকে হাদিস বর্ণিত হয়েছে।— [ বায়হাকী: (২/৪৩১) ]।

সুতরাং এসব সনদের সামগ্রিক বিবেচনায় আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত হাদিসটি ‘হাসান’ পর্যায়ের ইনশাল্লাহ।

* আর বারা ইবন ‘আযেব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত হাদিসটি ইমাম আহমাদ রহ. (৪/২৮৪) মু‘আয ইবন হিশাম রহ. এর সনদে বর্ণনা করেছেন, তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি কাতাদা রহ. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি আবূ ইসহাক আল-কুফী রহ. থেকে বর্ণনা করেন এবং তিনি তাঁর (বারা ইবন ‘আযেব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) থেকে বর্ণনা করেন।

আমি বলি: এই সনদটিন মধ্যে দুর্বলতা রয়েছে।

* আর আবদুল্লাহ ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা কর্তৃক বর্ণিত হাদিসটি ইমাম বায়হাকী রহ. (১/৪২৩) আ‘মাশ রহ. এর সনদে মুজাহিদ রহ. থেকে বর্ণনা করেন।

আমি বলি: এই সনদটি সহীহ এবং এই কারণে হাদিসটি সহীহ বলে গণ্য।