হে ভাইসব!

নিশ্চয় বড় ধরনের অন্যায় ও মহাবিপদ হলো পুরুষদের সাথে নারীগণের মেশামেশি এবং তাদের সাথে ধাক্কাধাক্কি ও ঘষাঘষি করা। আর এ অবস্থা বিরাজমান অধিকাংশ বাজার ও শপিং মলে, আর এটা শরী‘আত পরিপন্থী এবং পূর্ববর্তী সৎব্যক্তিগণের হিদায়াত ও নির্দেশনার বিপরীত। কারণ, কোনো একদিন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদ থেকে বের হলেন, এমতাবস্থায় দেখা গেল নারীগণ পুরুষদের সাথে মিশে গেছে, তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:

«اسْتَأْخِرْنَ، فَإِنَّهُ لَيْسَ لَكُنَّ أَنْ تَحْقُقْنَ الطَّرِيقَ، عَلَيْكُنَّ بِحَافَاتِ الطَّرِيقِ». فَكَانَتِ الْمَرْأَةُ تَلْتَصِقُ بِالْجِدَارِ حَتَّى إِنَّ ثَوْبَهَا لَيَتَعَلَّقُ بِالْجِدَارِ مِنْ لُصُوقِهَا بِهِ».

“(হে নারীগণ) তোমরা অপেক্ষা কর এবং পরে আস। কারণ, রাস্তার মধ্যখান দিয়ে চলার অধিকার তোমাদের নেই। তোমাদের জন্য আবশ্যক হলো রাস্তার পাশ দিয়ে চলাচল করা। তারপর নারী এমনভাবে দেয়াল ঘেষে চলতে লাগল, শেষ পর্যন্ত দেয়াল সংলগ্ন হওয়ার কারণে তার কাপড় দেয়ালের সাথে ঝুলে থাকত।”[1]

আর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুরুষদের সাথে নারীগণের মিশে যাওয়ার প্রশ্নে খুব সতর্ক করেছেন, এমনকি ইবাদাতের স্থানগুলোতে পর্যন্ত তিনি এ বিষয়ে সাবধান করেছেন। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেন:

«خَيْرُ صُفُوفِ النِّسَاءِ آخِرُهَا، وَشَرُّهَا أَوَّلُهَا».

“নারীদের সর্বোত্তম সারি বা কাতার হলো শেষ কাতার এবং সবচেয়ে মন্দ কাতার হলো তাদের প্রথম কাতার।”[2]

আর নারীগণের শেষ কাতার উত্তম হওয়ার একমাত্র কারণ হলো পুরুষদের থেকে তা দূরে হওয়ার কারণে এবং তাদের (নারীদের) জন্য তাদের সাথে মিশে যাওয়া ও তাদেরকে দেখার সুযোগ না থাকার কারণে। আর এর মধ্যে নারীকে পুরুষগণ ও তাদের সাথে তার মিশে যাওয়া থেকে দূরে রাখার জন্য শরী‘আতের আন্তরিকতার ওপর সুস্পষ্ট দলীল রয়েছে এবং এর মধ্যে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। সুতরাং আমাদের নারীদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা হলো, তারা তাদের ঘরের মধ্যে অবস্থান করবে, যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿وَقَرۡنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجۡنَ تَبَرُّجَ ٱلۡجَٰهِلِيَّةِ ٱلۡأُولَىٰ﴾ [الاحزاب: ٣٣]

“আর তোমরা নিজ ঘরে অবস্থান করবে এবং প্রাচীন জাহেলী যুগের প্রদর্শনীর মতো নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না”। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৩৩] আর তারা বাজার বা মেলার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হবে না, আর প্রথম দিকে এটা তাদের জন্য কষ্টকর মনে হবে; কিন্তু স্বল্প সময়ের ব্যবধানে এতে তারা অভ্যস্ত হয়ে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত তাদের জন্য তা সহজ বা হালকা হয়ে যাবে। ফলে তারা হয়ে যাবে পর্দানশিন, লজ্জবতী ও ঘরের শোভা। আর পুরুষ দায়িত্বশীল ও প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গের জন্য আবশ্যক হলো এ বিষয়টি উপলব্ধি করা এবং আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর যে দায়িত্ব ও আমানত বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন, তা যথাযথভাবে পালন করা, যাতে আল্লাহ তাদের সকল কর্মকাণ্ডকে সংশোধন করে দেন এবং তাদেরকে ফিতনা থেকে রক্ষা করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ قُوٓاْ أَنفُسَكُمۡ وَأَهۡلِيكُمۡ نَارٗا وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلۡحِجَارَةُ عَلَيۡهَا مَلَٰٓئِكَةٌ غِلَاظٞ شِدَادٞ لَّا يَعۡصُونَ ٱللَّهَ مَآ أَمَرَهُمۡ وَيَفۡعَلُونَ مَا يُؤۡمَرُونَ ٦﴾ [التحريم: ٦]

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে রক্ষা কর আগুন থেকে, যার ইন্ধন হবে মানুষ এবং পাথর, যাতে নিয়োজিত আছে নির্মম, কঠোরস্বভাব ফিরিশতাগণ, যারা অমান্য করে না তা, যা আল্লাহ তাদেরকে আদেশ করেন। আর তারা যা করতে আদেশপ্রাপ্ত হয় তা-ই করে”। [সূরা আত-তাহরীম, আয়াত: ৬]

>
[1] আবু দাউদ, হাদীস নং- ৫২৭৪। আলবানী হাদীসটিকে ‘হাসান’ বলেছেন।

[2] ইবন মাজাহ, হাদীস নং- ১০০০। আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।