আর যারা তাদের রবকে ভয় করেছে তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। অবশেষে তারা যখন সেখানে এসে পৌঁছবে এবং এর দরজাসমূহ খুলে দেয়া হবে তখন জান্নাতের রক্ষীরা তাদেরকে বলবে, ‘তোমাদের প্রতি সালাম, তোমরা ভাল ছিলে। অতএব স্থায়ীভাবে থাকার জন্য এখানে প্রবেশ কর’। আল-বায়ান
যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করত তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। যখন তারা সেখানে এসে পৌঁছবে, জান্নাতের দরজাগুলো (পূর্ব থেকেই) উন্মুক্ত (দেখতে পাবে)। জান্নাতের দ্বার রক্ষীরা বলবে- তোমাদের উপর শান্তি (বর্ষিত হোক), চমৎকার কাজ করেছ তোমরা, কাজেই চিরকালের জন্য এতে প্রবেশ কর। তাইসিরুল
যারা তাদের রাব্বকে ভয় করত তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। যখন তারা সেখানে উপস্থিত হবে তখন ওর দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হবে এবং জান্নাতের রক্ষীরা তাদেরকে বলবেঃ তোমাদের প্রতি সালাম, তোমরা সুখী হও এবং জান্নাতে প্রবেশ কর স্থায়ীভাবে অবস্থানের জন্য। মুজিবুর রহমান
But those who feared their Lord will be driven to Paradise in groups until, when they reach it while its gates have been opened and its keepers say, "Peace be upon you; you have become pure; so enter it to abide eternally therein," [they will enter]. Sahih International
৭৩. আর যারা তাদের রবের তাকওয়া অবলম্বন করেছে তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। অবশেষে যখন তারা জান্নাতের কাছে আসবে এবং এর দরজাসমূহ খুলে দেয়া হবে এবং জান্নাতের রক্ষীরা তাদেরকে বলবে, তোমাদের প্রতি সালাম, তোমরা ভাল ছিলে(১) সুতরাং জান্নাতে প্রবেশ কর স্থায়ীভাবে অবস্থিতির জন্য।
(১) মুজাহিদ বলেন, অর্থাৎ তোমরা আল্লাহর আনুগত্য অত্যন্ত সুন্দরভাবে করতে। [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া(৭৩) আর যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করত, তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে।[1] যখন তারা জান্নাতের নিকট উপস্থিত হবে এবং জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হবে[2] এবং তার রক্ষীরা তাদেরকে বলবে, ‘তোমাদের প্রতি সালাম (শান্তি), তোমরা সুখী হও এবং স্থায়ীভাবে বাস করার জন্য জান্নাতে প্রবেশ কর।’
[1] ঈমানদার ও আল্লাহভীরুদেরকেও দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রথমে ‘মুক্বার্রাবীন’ (নৈকট্যপ্রাপ্ত দল), তারপর ‘আবরার’ (সৎলোকদের দল), এইভাবে মর্যাদাক্রমে প্রত্যেক দল তার সমমানের দলের সাথে শামিল থাকবে। যেমন, নবীরা নবীদের সাথে, সত্যবাদীরা সত্যবাদীদের সাথে, শহীদরা শহীদদের সাথে এবং আলেমরা আলেমদের সাথে। অর্থাৎ, প্রত্যেক দল তারই ন্যায় দলের বা তার সমমানের দলের সাথে থাকবে।
[2] হাদীসে এসেছে, ‘‘জান্নাতের আটটি দরজা। তার মধ্যে একটি দরজার নাম রাইয়ান। এই দরজা দিয়ে কেবল রোযাদাররা প্রবেশ করবে।’’ (বুখারী ২২৫৭, মুসলিম ৮০৮নং) এইভাবে অন্যান্য দরজারও নাম থাকবে। যেমন, বাবুস্ স্বলাত (নামাযের দরজা)। বাবুস্ স্বাদাক্বাহ (সাদকার দরজা)। বাবুল জিহাদ (জিহাদের দরজা) প্রভৃতি। (বুখারীঃ রোযা অধ্যায়, মুসলিমঃ যাকাত অধ্যায়) প্রত্যেক দরজা চল্লিশ বছরের পথ সমতুল্য চওড়া হবে। তা সত্ত্বেও তা পরিপূর্ণ থাকবে। (মুসলিমঃ যুহুদ অধ্যায়) সর্ব প্রথম জান্নাতের দরজায় করাঘাতকারী হবেন নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)। (মুসলিম, ঈমান অধ্যায়) জান্নাতে সর্বপ্রথম আগমনকারী দলটির চেহারা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মত এবং দ্বিতীয় দলটির মুখমন্ডল আসমানে দীপ্যমান নক্ষত্রের মধ্যে সর্বাধিক উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যায় চমকাতে থাকবে। জান্নাতে তারা প্রস্রাব-পায়খানা এবং থুতু-শ্লেষ্মা হতে পাক ও পবিত্র হবে। তাদের চিরুণী হবে স্বর্ণের আর তাদের ঘর্ম হবে কস্তুরীর ন্যায় সুগন্ধময়। তাদের ধুনুচিতে সুগন্ধিময় আগর-কাঠ হবে। ডাগর চক্ষুবিশিষ্ট হুরগণ হবে তাদের স্ত্রী। তাদের উচ্চতা হবে আদম (আঃ)-এর মত ষাট হাত। (বুখারী) সহীহ বুখারীর অপর একটি বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, প্রত্যেকটি মু’মিন দু’টি করে হুর পাবে। তারা এত রূপসী ও সুন্দরী হবে যে, (স্বচ্ছ সৌন্দর্যের কারণে) তাদের গোশতপিন্ডের ভেতর থেকে পায়ের নলাস্থিত মজ্জাও দেখা যাবে।’’ (বুখারীঃ সৃষ্টির শুরু অধ্যায়) কেউ কেউ বলেছেন, এই দু’টি স্ত্রী হুর ছাড়া দুনিয়ার মহিলাদের মধ্য থেকে হবে। তবে যেহেতু (শহীদ ছাড়া সাধারণ লোকের জন্য) ৭২টি হুর পাওয়ার ব্যাপারে বর্ণিত হাদীস সনদের দিক দিয়ে সহীহ নয়, তাই বাহ্যিকভাবে এটাই সঠিক মনে হচ্ছে যে, প্রত্যেক জান্নাতী হুর সহ দু’টি করে স্ত্রী পাবে। আবার ﴿وَلَهُمْ مَا يَشْتَهُونَ﴾ (জান্নাতীরা জান্নাতে যা আশা করবে তাই পাবে) অনুসারে বেশী পাওয়ারও সম্ভাবনা আছে। আর আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞাত।
(অতিরিক্ত জানার জন্য ফাতহুল বারীর উল্লিখিত অধ্যায় দ্রষ্টব্যঃ)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান