১২ সূরাঃ ইউসুফ | Yusuf | سورة يوسف - আয়াতঃ ৬৮
১২:৬৮ وَ لَمَّا دَخَلُوۡا مِنۡ حَیۡثُ اَمَرَهُمۡ اَبُوۡهُمۡ ؕ مَا كَانَ یُغۡنِیۡ عَنۡهُمۡ مِّنَ اللّٰهِ مِنۡ شَیۡءٍ اِلَّا حَاجَۃً فِیۡ نَفۡسِ یَعۡقُوۡبَ قَضٰهَا ؕ وَ اِنَّهٗ لَذُوۡ عِلۡمٍ لِّمَا عَلَّمۡنٰهُ وَ لٰكِنَّ اَكۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۶۸﴾
و لما دخلوا من حیث امرهم ابوهم ما كان یغنی عنهم من الله من شیء الا حاجۃ فی نفس یعقوب قضها و انهٗ لذو علم لما علمنه و لكن اكثر الناس لا یعلمون ﴿۶۸﴾

আর যখন তারা প্রবেশ করল, যেভাবে তাদের পিতা তাদেরকে আদেশ করেছিল, তা আল্লাহর হুকুমের বিপরীতে তাদের কোন উপকারে আসেনি, তবে তা ছিল ইয়া‘কূবের মনের একটি ইচ্ছা, যা সে ব্যক্ত করেছিল। আর সে ছিল জ্ঞানী, কারণ আমি তাকে শিখিয়েছিলাম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। আল-বায়ান

তাদের পিতা যেভাবে আদেশ করেছিল যখন তারা সেভাবে প্রবেশ করল, তখন আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে তা তাদের কোন কাজে আসল না। তবে ইয়া‘কুব তার মনের একটা অভিপ্রায় পূর্ণ করেছিল মাত্র। আমার দেয়া শিক্ষার বদৌলতে অবশ্যই সে ছিল জ্ঞানবান, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ প্রকৃত ব্যাপার সম্পর্কে অবগত নয়। তাইসিরুল

যখন তারা, তাদের পিতা তাদেরকে যেভাবে আদেশ করেছিল সেভাবেই প্রবেশ করল, তখন আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে ওটা তাদের কোন কাজে এলোনা; ইয়াকূব শুধু তার মনের একটি অভিপ্রায় পূর্ণ করেছিল এবং সে অবশ্যই জ্ঞানী ছিল। কারণ আমি তাকে শিক্ষা দিয়েছিলাম, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়। মুজিবুর রহমান

And when they entered from where their father had ordered them, it did not avail them against Allah at all except [it was] a need within the soul of Jacob, which he satisfied. And indeed, he was a possessor of knowledge because of what We had taught him, but most of the people do not know. Sahih International

৬৮. আর যখন তারা তাদের পিতা যেভাবে আদেশ করেছিলেন সেভাবেই প্রবেশ করল, তখন আল্লাহ্‌র হুকুমের বিপরীতে তা তাদের কোন কাজে আসল না; ইয়াকুব শুধু তার মনের একটি অভিপ্রায় পূর্ণ করছিলেন(১) আর অবশ্যই তিনি আমাদের দেয়া শিক্ষায় নবান ছিলেন। কিন্তু বেশীর ভাগ মানুষই জানে না।(২)

(১) এ আয়াতে পূর্ববর্তী আয়াতে বর্ণিত বিষয়টিকে আরো স্পষ্ট করে বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ ছেলেরা পিতার আদেশ পালন করে বিভিন্ন দরজা দিয়ে শহরে প্রবেশ করে। ফলে পিতার নির্দেশ কার্যকর হয়ে গেল। অবশ্য এ তদবীর আল্লাহর কোন নির্দেশকে এড়াতে পারত না, কিন্তু পিতৃ-সুলভ স্নেহ-মমতার চাহিদা ছিল যা, তা তিনি পূর্ণ করেছেন। পূর্ব আয়াতের শেষ ভাগে ইয়াকুব আলাইহিস সালাম-এর প্রশংসা করে বলা হয়েছে, ইয়াকুব বড় বিদ্বান ছিলেন, কারণ, আমি তাকে বিদ্যা দান করেছিলাম। এ কারণেই তিনি শরীআতসম্মত ও প্রশংসনীয় বাহ্যিক তদবীর অবলম্বন করলেও তার উপর ভরসা করেননি। বরং কৌশল ও আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীলতার মধ্যে যথাযথ ভারসাম্য স্থাপন করেছেন।

(২) আলোচ্য দু'আয়াত থেকে কতিপয় নির্দেশ ও মাসআলা জানা যায়- (এক) বদ নযর লাগা সত্য। [দেখুন- বুখারীঃ ৫৭৪০, মুসলিমঃ ২১৮৭] সুতরাং ক্ষতিকর খাদ্য ও ক্ষতিকর ক্রিয়াকর্ম থেকে আত্মরক্ষার তদবীর করার ন্যায় এ থেকে আত্মরক্ষার তদবীর করাও সমভাবে শরীআতসিদ্ধ। (দুই) যদি অন্য কারো কোন গুণ অথবা নেয়ামত দৃষ্টিতে বিস্ময়কর ঠেকে এবং নযর লেগে যাওয়ার আশঙ্কা হয়, তবে তা দেখে بَارَكَ اللهُ অথবা مَا شَاءَ الله বলা দরকার, যাতে অন্যের কোন ক্ষতি না হয়। (তিন) নযর লাগা থেকে আত্মরক্ষার জন্য শরীআতসম্মত যে কোন তদবীর করা জায়েয। তন্মধ্যে দোআ, কুরআন-হাদীসভিত্তিক ঝাড়-ফুক দ্বারা প্রতিকার করাও অন্যতম। [কুরতুবী, সংক্ষেপিত]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৬৮) যখন তারা তাদের পিতা তাদেরকে যেভাবে আদেশ করেছিল সেভাবেই প্রবেশ করল, তখন আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে ওটা তাদের কোন কাজে আসল না; ইয়াকূব শুধু তার মনের একটি অভিপ্রায় পূর্ণ করেছিল মাত্র।[1] আর সে অবশ্যই জ্ঞানী ছিল; কারণ আমি তাকে শিক্ষা দিয়েছিলাম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা অবগত নয়। [2]

[1] অর্থাৎ, এই কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত ভাগ্যকে মুলতবি বা রদ করা সম্ভব নয়, তবুও ইয়াকূব (আঃ)-এর মনে বদনজর লেগে যাওয়ার যে আশঙ্কা ছিল, তার ভিত্তিতে তিনি এরূপ বলেছিলেন।

[2] অর্থাৎ এই কৌশল অবলম্বন ইলাহী অহীর আলোকে ছিল এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে পারে না --এ আকীদাও আল্লাহর শিখানো জ্ঞানের উপর ভিত্তি করেই ছিল, যে ব্যাপারে অধিকাংশ লোকই অজ্ঞ।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান