সূরাঃ আত-তাওবা | At-Tawba | سورة التوبة - আয়াত নং - ৫১ মাদানী

৯ : ৫১ قُلۡ لَّنۡ یُّصِیۡبَنَاۤ اِلَّا مَا كَتَبَ اللّٰهُ لَنَا ۚ هُوَ مَوۡلٰىنَا ۚ وَ عَلَی اللّٰهِ فَلۡیَتَوَكَّلِ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۵۱﴾

বল, ‘আমাদেরকে শুধু তা-ই আক্রান্ত করবে যা আল্লাহ আমাদের জন্য লিখে রেখেছেন। তিনিই আমাদের অভিভাবক, আর আল্লাহর উপরই যেন মুমিনরা তাওয়াক্কুল করে’। আল-বায়ান

বলে দাও, ‘আল্লাহ আমাদের জন্য যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন তাছাড়া অন্য কিছুই আমাদের ঘটবে না, তিনিই আমাদের রক্ষক, আর আল্লাহর উপরই মু’মিনদের ভরসা করা দরকার।’ তাইসিরুল

বলঃ আল্লাহ আমাদের জন্য যা নির্ধারণ করে দিয়েছেন তা ছাড়া অন্য কোন বিপদ আমাদের উপর আপতিত হবেনা, তিনিই আমাদের কর্ম বিধায়ক, আর সকল মু’মিনের কর্তব্য হল, তারা যেন নিজেদের যাবতীয় কাজে আল্লাহর উপরই নির্ভর করে। মুজিবুর রহমান

Say, "Never will we be struck except by what Allah has decreed for us; He is our protector." And upon Allah let the believers rely. Sahih International

৫১. বলুন, আমাদের জন্য আল্লাহ যা লিখেছেন তা ছাড়া আমাদের অন্য কিছু ঘটবে না; তিনি আমাদের অভিভাবক। আর আল্লাহর উপরই মুমিনদের নির্ভর করা উচিত।(১)

(১) এ আয়াতে আল্লাহ তা'আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুসলিমদেরকে মুনাফিকদের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে আসল সত্যকে সদা সামনে রাখার নির্দেশ দিয়ে বলছেনঃ “বলুনঃ আমাদের বিপদতো অতটুকুই হবে যতটুকু আল্লাহ আমাদের জন্য লিখে রেখেছেন”। অর্থাৎ আমরা যে সকল অবস্থার সম্মুখীন হই, তা আগেই আল্লাহ আমাদের জন্যে নির্ধারিত করে রেখেছেন। তিনিই আমাদের কার্যনির্বাহক ও সাহায্যকারী। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাহ বলেছেন, “প্রতিটি বস্তুরই হাকীকত রয়েছে। কোন বান্দাই প্রকৃত ঈমানের পর্যায়ে পৌছতে পারবে না, যতক্ষণ না এটা দৃঢ়ভাবে জানবে যে, তার যা ঘটেছে তা কখনো তাকে ছেড়ে যেতো না। আর যা তাকে ছেড়ে গেছে তা কখনো তার জন্য ঘটতো না।” [মুসনাদে আহমাদ: ৬/৪৪১-৪৪২] তাই মুসলিমদের আবশ্যক আল্লাহর প্রতি ভালবাসা রাখা এবং পার্থিব উপায় উপকরণকে নিছক মাধ্যম মনে করা। আর মনে করা যে, এগুলোর উপর ভাল মন্দ নির্ভরশীল নয়। প্রকৃত ব্যাপার আল্লাহর হাতে। আমার উপর দায়িত্ব হবে সঠিক কাজটি করে যাওয়া এবং আল্লাহর উপর ভরসা করা। তাঁরই কাছে সার্বিক সহযোগিতা কামনা।

হাদীসে এসেছে, ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, আমি একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পিছনে বসা ছিলাম। তখন তিনি বললেন, হে বৎস! নিশ্চয় আমি তোমাকে কিছু বাক্য শিখিয়ে দেব, তুমি আল্লাহকে হিফাযত কর, তিনিও তোমার হিফাযত করবেন, তুমি আল্লাহ্‌র হিফাযত কর, তুমি তাকে তোমার দিকে পাবে। যখন তুমি কোন কিছু চাইবে তখন তা চাইবে কেবল আল্লাহর কাছে। আর যখন সাহায্য চাইবে তখন কেবল আল্লাহর সাহায্য চাইবে। আর জেনে রাখ, যদি উম্মতের সবাই তোমার কোন উপকার করতে একত্রিত হয়, তারা তোমার কোন উপকার করতে সমর্থ হবে না, তবে শুধু ঐটুকুই পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। আর তারা যদি সবাই তোমার কোন ক্ষতি করতে ইচ্ছা করে, তবে শুধু ঐটুকু করতে পারবে যা আল্লাহ তোমার উপর লিখে রেখেছেন। কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে, আর গ্রন্থটি শুকিয়ে গেছে। [তিরমিযী: ২৫১৬]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৫১) তুমি বলে দাও, ‘আল্লাহ আমাদের জন্য যা নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তা ছাড়া অন্য কোন বিপদ আমাদের উপর আসতে পারে না। তিনিই আমাদের কর্মবিধায়ক। আর বিশ্বাসীদের উচিত, কেবল আল্লাহর উপরই ভরসা করা।’ [1]

[1] এ কথা মুনাফিক্বদের জবাবে মুসলিমদেরকে ধৈর্য, দৃঢ়তা এবং উৎসাহ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কেননা, যখন মানুষ এ কথার বিশ্বাস রাখে যে, আল্লাহর লিখিত কর্ম অবশ্যই ঘটবে এবং যা কিছু বিপদ ও মঙ্গল আমাদের কাছে আসবে, তা আল্লাহর নির্ধারিত তকদীরের অংশবিশেষ। তখন মানুষের জন্য বিপদ বরদাস্ত করা সহজ হয়ে যায় এবং তার উৎসাহে বৃদ্ধি সাধন হয়।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান