৫৯১২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা

৫৯১২-[৪৫] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তাবুকের যুদ্ধের সময় যখন লোকজন ভীষণ ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ল, তখন ’উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এখন লোকজনের কাছে যে পরিমাণ অতিরিক্ত খাদ্যদ্রব্য অবশিষ্ট আছে, সেগুলো আনিয়ে নিন এবং তার উপর আল্লাহর কাছে বরকতের জন্য দুআ করুন। তিনি (সা.) বললেন, হ্যাঁ, তাই করা হবে। তখন তিনি (সা.) একখানা চামড়ার দস্তরখান আনালেন। তা বিছানো হলো, অতঃপর তিনি তাদের অবশিষ্ট খাদ্যদ্রব্যগুলো আনতে বললেন। তাতে কোন লোক আনল এক মুষ্টি বুট, আর কেউ আনল এক মুষ্টি খেজুর, আর কেউ আনল কিছু রুটির টুকরা। অবশেষে সবকিছু মিলিয়ে দস্তরখানের উপর সামান্য পরিমাণ বস্তুই একত্রিত করা হলো। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) তার মধ্যে বরকতের জন্য দু’আ করলেন। অতঃপর বললেন, তোমাদের (যার যা খুশি) নিজ নিজ পাত্রগুলোতে নিয়ে নাও। অতএব তারা নিজ নিজ পাত্রগুলোতে নিতে লাগল। এমনকি সেনাদলের মধ্যে এমন কোন পাত্র রইল না যা তারা ভর্তি করে নিল না।
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বলেন, লোকেরা সকলে তৃপ্তি করে খেল এবং কিছু খাদ্য অতিরিক্তও রয়ে গেল। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তা’আলা ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। আর নিশ্চয় আমি আল্লাহর রাসূল। আর যে ব্যক্তি এ দু’টি কথার উপর পূর্ণ বিশ্বাস রেখে আল্লাহর সাথে মিলিত হবে (অর্থাৎ মৃত্যুবরণ করবে), কোন কিছু তাকে জান্নাতে প্রবেশ হতে বাধা দিতে পারবে না। (মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب فِي المعجزا)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: لَمَّا كَانَ يَوْمُ غزوةِ تَبُوك أصابَ النَّاس مجاعةٌ فَقَالَ عُمَرُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُهُمْ بِفَضْلِ أَزْوَادِهِمْ ثُمَّ ادْعُ اللَّهَ لَهُمْ عَلَيْهًا بِالْبَرَكَةِ فَقَالَ: نعم قَالَ فَدَعَا بِنِطَعٍ فَبُسِطَ ثُمَّ دَعَا بِفَضْلِ أَزْوَادِهِمْ فَجَعَلَ الرَّجُلُ يَجِيءُ بِكَفِّ ذُرَةٍ وَيَجِيءُ الْآخَرُ بِكَفِّ تَمْرٍ وَيَجِيءُ الْآخَرُ بِكِسْرَةٍ حَتَّى اجْتَمَعَ عَلَى النِّطَعِ شَيْءٌ يَسِيرٌ فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْبَرَكَةِ ثُمَّ قَالَ خُذُوا فِي أوعيتكم فَأَخَذُوا فِي أَوْعِيَتِهِمْ حَتَّى مَا تَرَكُوا فِي الْعَسْكَر وعَاء إِلا ملؤوه قَالَ فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا وَفَضَلَتْ فَضْلَةٌ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ لَا يَلْقَى اللَّهَ بِهِمَا عَبْدٌ غَيْرُ شاكٍّ فيحجبَ عَن الْجنَّة» . رَوَاهُ مُسلم

رواہ مسلم (45 / 27)، (139) ۔
(صَحِيح)

وعن ابي هريرة قال: لما كان يوم غزوة تبوك اصاب الناس مجاعة فقال عمر: يا رسول الله ادعهم بفضل ازوادهم ثم ادع الله لهم عليها بالبركة فقال: نعم قال فدعا بنطع فبسط ثم دعا بفضل ازوادهم فجعل الرجل يجيء بكف ذرة ويجيء الاخر بكف تمر ويجيء الاخر بكسرة حتى اجتمع على النطع شيء يسير فدعا رسول الله صلى الله عليه وسلم بالبركة ثم قال خذوا في اوعيتكم فاخذوا في اوعيتهم حتى ما تركوا في العسكر وعاء الا ملووه قال فاكلوا حتى شبعوا وفضلت فضلة فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اشهد ان لا اله الا الله واني رسول الله لا يلقى الله بهما عبد غير شاك فيحجب عن الجنة» . رواه مسلم رواہ مسلم (45 / 27)، (139) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: উক্ত তাবূক যুদ্ধের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাবূক একটি জায়গার নাম। যার দূরত্ব মদীনাহ থেকে এক মাসের পথ।
‘আল্লামাহ্ সুয়ূত্বী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এটি সংঘটিত হয়েছিল নবম হিজরীর রজব মাসে। আর তা ছিল রাসূল (সা.)-এর স্বশরীরে অংশগ্রহণমূলক সর্বশেষ যুদ্ধ।
মিরকাত প্রণেতা বলেন, এ হাদীসে ঘটনা কিছু সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
যেহেতু বর্ণিত হয়েছে যে, তাবুক যুদ্ধের সময় সাহাবীরা প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত হলো তখন তারা রাসূল (সা.)-কে বলল, যদি আপনি আমাদেরকে উট যাবাহ করার অনুমতি দিতেন তাহলে আমরা যাবাহ করে পাকিয়ে খেতাম। তখন আল্লাহর রাসূল (সা.) বললেন, তোমরা তাই করো। কিন্তু ‘উমার (রাঃ) এসে বললেন, যদি আপনি তা অনুমতি দেন তাহলে আমরা বাহন কোথায় পাবো? তার চেয়ে বরং আপনি তাদেরকে অবশিষ্ট খাদ্য পাথেয় জমা করতে বলুন এবং বরকতের দু'আ করুন। তারপর আল্লাহর রাসূল (সা.) বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর তিনি (সা.) বরকতের জন্য দু'আ করলেন।
(قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ) অর্থাৎ তারপর রাসূল (সা.) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল। এটি বলে এদিকে ইশারা করা হয়েছে যে, মু'জিযা দেখা বিশ্বাসীদের মাঝে আরো বিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়।
(لَا يَلْقَى اللَّهَ بِهِمَا عَبْدٌ...) অর্থাৎ, যে কোন বান্দা আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে এই দুই সাক্ষ্য দিয়ে...।
ইবনু মালিক (রহিমাহুল্লাহ) এর ব্যাখ্যায় বলেন, যে ব্যক্তি কোন সন্দেহ ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়া এই দুই সাক্ষ্য প্রদান করে মারা যাবে সে কখনোই জান্নাত থেকে দূরে থাকবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)