পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
২১৬৫-[৫৭] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুরআন স্পষ্ট ও শুদ্ধ করে পড়ো। এর ’গারায়িব’ অনুসরণ করো। আর কুরআনের ’গারায়িব’ হলো এর ফারায়িয ও হুদূদ (সীমা ও বিধানসমূহ)। (ইমাম বায়হাক্বী তাঁর শু’আবূল ঈমান-এ বর্ণনা করেছেন)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْرِبُوا الْقُرْآنَ وَاتَّبِعُوا غَرَائِبَهُ وَغَرَائِبُهُ فَرَائِضُهُ وَحُدُودُهُ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي شعب الْإِيمَان
ব্যাখ্যা: (أَعْرِبُوا الْقُرْاٰنَ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো কুরআনের শব্দের অর্থ উপলব্ধি করা এবং তা প্রকাশ করা। এখানে বৈয়াকারণিক পরিভাষায় যা বুঝায় তা নয়। লুম্‘আত গ্রন্থকার বলেন, এর অর্থ হলো : তার অর্থসমূহ প্রকাশ করো এবং প্রচার করো। الاعراب-এর অর্থ الابانة والافصاح প্রকাশ করা, স্পষ্ট করা। ‘আরাবী ভাষা যারা পড়তে পারে সকলের জন্য এ হুকুম। অতঃপর আহ্লে শারী‘আতদের বিশেষভাবে বলা হয়েছে যে, (وَاتَّبِعُوا غَرَائِبَه) তার গারায়িব-এ অনুসরণ করো। গারায়িব-এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, তা হলো কুরআনের ফারায়িয এবং ওয়াজিবাতসমূহ আর হুদূদ হলো আল কুরআনের নিষিদ্ধসমূহ।
‘আল্লামা ত্বীবী ফারায়িযের দ্বারা মীরাসসমূহ এবং হুদূদ দ্বারা হুদূদুল আহকাম বুঝিয়েছেন।
অথবা ফারায়িয দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ما يجب على المكلف একজন মুকাল্লাফের ওপর যা করণীয়। আর হুদূদ দ্বারা আল কুরআনের সূক্ষ্ম তত্ত্ব ও গূঢ় রহস্য এবং ভেদ কথা সম্পর্কে অবহিত হওয়া।
এ ব্যাখ্যাটি আল কুরআন সম্পর্কে বর্ণিত এ হাদীসের অতীব নিকটবর্তী; হাদীসঃ (أنزل القرآن على سبعة أحرف لكل آية منها ظهر وبطن) আল কুরআনকে সাতটি ভাষায় নাযিল করা হয়েছে, প্রত্যেকটি আয়াতের বাহির এবং ভিতর রয়েছে। (أَعْرِبُوا الْقُرْآنَ) এ কথার দিকেই ইশারা করছে যে, এর একটি বাহির আছে। এর ফারায়িয ও হুদূদ হলো ওর ভিতরের বস্ত্ত।
মুল্লা ‘আলী আল কারী (রহঃ) বলেন, এর অর্থ হলোঃ আল কুরআনের আয়াতসমূহের দুর্লভ দিকদর্শন, গারায়িবুল আহকাম, বিস্ময়কর নির্দেশ, সকল মু‘জিযার উপর চ্যালেঞ্জময় এর মু‘জিযা, সর্বোত্তম শিষ্টাচার, পরকালীন জীবন-জীনদেগী ও অবস্থার উপর ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং জান্নাতের সুখ-সামগ্রীর উপর অতীব নির্ভরযোগ্য প্রতিশ্রুতি সম্বলিত বর্ণনা বিশ্বজাতির কাছে তুলে ধরো।