২২৫৬

পরিচ্ছেদঃ ২৭. লি‘আন সম্পর্কে

২২৫৬। ইবনু ’আব্বাস (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, হিলাল ইবনু উমাইয়্যাহ (রাযি.), যিনি (তাবূক অভিযানে পিছনে পড়ে থাকা) তিনজনের একজন। আল্লাহ পরবর্তীতে তাদের তওবা কবুল করেছেন। একদা রাতের প্রথম অংশে তিনি খামার থেকে ফিরে এসে তার স্ত্রীর সাথে অন্য এক পুরুষকে দেখতে পান। তিনি তাদের অবৈধ কাজ স্বচক্ষে দেখলেন এবং তাদের কথাবার্তাও নিজ কানে শুনলেন। তথাপি কোনোরূপ বাড়াবাড়ি না করে রাত কাটালেন। তিনি সকাল বেলায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! রাতের প্রথমভাগ আমি আমার খামার থেকে ফিরে এসে আমার স্ত্রীর সাথে এক পুরুষকে দেখতে পেলাম।

তাদের অবৈধ মেলামেশা আমি চাক্ষুষ দেখেছি এবং নিজ কানে তাদের কথাবার্তা শুনেছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কথায় অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাঁর কাছে বিষয়টি গুরুতর মনে হলো। অতঃপর এ আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ ’’এবং যারা নিজেদের স্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করে এবং তারা নিজেরা ছাড়া অন্য কোনো সাক্ষীও নেই, তাদের প্রত্যেককে শপথ করতে হবে...’’ পূর্ণ দু’টি আয়াত অবতীর্ণ হলো।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উপর ওয়াহী অবতীর্ণ হওয়ার কঠিন অবস্থা প্রশমিত হলে বললেনঃ হে হিলাল! সুসংবাদ গ্রহণ করো। অবশ্যই আল্লাহ তোমাকে দুশ্চিন্তা ও বিপদ থেকে মুক্ত করেছেন। হিলাল (রাযি.) বললেন, আমি আমার প্রতিপালকের কাছে এমনই আশা করেছিলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তার স্ত্রীর কাছে লোক পাঠিয়ে তাকে আসতে বলো। সে আসলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে আয়াতটি পাঠ করে শুনান, নসিহত করেন এবং তাদেরকে বললেনঃ পরকালের আযাব দুনিয়ার আযাবের চেয়ে খুবই ভয়াবহ।

হিলাল (রাযি.) বললেন, আল্লাহর শপথ! স্ত্রীর বিরুদ্ধে আমি যে তুলনায় খুবই ভয়াবহ। হিলাল (রাযি.) বললেন, আল্লাহর শপথ! স্ত্রীর বিরুদ্ধে আমি যে অভিশাপ পেশ করেছি, তা অবশ্যই সত্য। কিন্তু মহিলাটি বললো, সে মিথ্যা বলছে। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা এদের উভয়ের মধ্যে লি’অঅন করাও।

অতঃপর হিলালকে সাক্ষ্য দিতে বলা হলে তিনি চারবার শপথ করেন যে, তিনি তার দাবীতে সত্যবাদী। পঞ্চম শপথটি পড়ার সময় তাকে বলা হলো, হে হিলাল! আল্লাহকে ভয় করো। কেননা দুনিয়ায় শাস্তি আখিরাতের শাস্তির চেয়ে অনেক কম। আর যদি তুমি মিথ্যাবাদী হও তাহলে এ শপথ অবশ্যই তোমার উপর বিপদ আনবেই। তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ! তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করার কারণে আল্লাহ আমার পিঠে যেমন দোররা লাগাননি, তেমনি এ বিষয়ে আমাকে শাস্তি থেকেও বাঁচাবেন। এ বলে তিনি পঞ্চম শপথ করলেন যে, ’তার নিজের উপর আল্লাহর গযব নামবে যদি সে মিথ্যাবাদী হয়।’

অতঃপর মহিলাটিকে বলা হলো, তুমিও শপথ করো। সেও চারবার আল্লাহর শপথ করলো যে, স্বামী তার দাবীতে মিথ্যাবাদী। আর পঞ্চমবার শপথের সময় হলে তাকেও বলা হলো যে, আল্লাহকে ভয় করো। কেননা দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের শাস্তির তুলনায় অনেক হালকা। এ পঞ্চম শপথ অবশ্যই তোমার উপর আযাব এনে ছাড়বে। একথা শুনে সে কিছুক্ষণ থমকে দাঁড়ালো, এবং কিছুক্ষণ পর বললো, আল্লাহর শপথ! আমি আমার খান্দানকে কলঙ্কিত করবো না এবং এই বলে পঞ্চমবারে শপথটি করলো যে, তার নিজের উপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হোক, যদি সে (স্বামী) সত্যবাদী হয়ে থাকে।

পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উভয়ে মধ্যে বিচ্ছেদ করালেন এবং জানিয়ে দিলেন যে, তার গর্ভস্থ সন্তানের পরিচয় তার পিতা থেকে হবে না, মহিলাটির উপর যিনার অপবাদ দেয়া যাবে না এবং সন্তানটিকে জারজ বরে কলঙ্কিত করা যাবে না। আর যে ব্যক্তি উক্ত মহিলা ও তার সন্তানকে অপবাদ দিবে, তার উপর মিথ্যা বলার শাস্তি প্রয়োগ হবে। এ মহিলা তার স্বামী থেকে খোরাকী পাবে না। কারণ তারা তালাক ছাড়াই বিচ্ছেদ হয়েছে, এবং তার স্বামী মারা যায়নি।

তিনি আরো বললেনঃ যদি মহিলাটি বাজ পাখির মতো লাল-কালো বর্ণের, হালকা নিতম্ব, সামান্য কুঁজো এবং সরু নলাবিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে, তাহলে সেটা হবে হিলালের ঔরসজাত। আর যদি সে গমের রং, কোঁকড়া চুল, মোটা বাহু, মোটা নলাওয়ালা ও বড় নিতম্ববিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে, তাহলে তা ঐ ব্যক্তির ঔরসের যাকে সম্পর্কিত করে অপবাদ দেয়া হয়েছে। সন্তান জন্মের পর দেখা গেলো, সে মহিলাটি গমের রং, কোঁকড়া চুল, ভারী বাহু, মোটা নলাওয়ালা ও বড় নিতম্ববিশিষ্ট সন্তান প্রসব করেছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ শপথের আয়াত অবতীর্ণ না হলে আমি অবশ্যই তাকে পাথর মেরে হত্যা করতাম। ইকরিমা (রহ.) বলেন, পরবর্তীতে ঐ সন্তানটি মুদার গোত্রের প্রশাসক নিযুক্ত হয়। কিন্তু তাকে পিতার সাথে সম্পৃক্ত করে ডাকা হতো না।[1]

দুর্বল।

بَابٌ فِي اللِّعَانِ

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ مَنْصُورٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: جَاءَ هِلَالُ بْنُ أُمَيَّةَ وَهُوَ أَحَدُ الثَّلَاثَةِ، الَّذِينَ تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ، فَجَاءَ مِنْ أَرْضِهِ عَشِيًّا فَوَجَدَ عِنْدَ أَهْلِهِ رَجُلًا، فَرَأَى بِعَيْنِهِ وَسَمِعَ بِأُذُنِهِ، فَلَمْ يَهِجْهُ حَتَّى أَصْبَحَ، ثُمَّ غَدَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي جِئْتُ أَهْلِي عِشَاءً، فَوَجَدْتُ عِنْدَهُمْ رَجُلًا، فَرَأَيْتُ بِعَيْنَيَّ، وَسَمِعْتُ بِأُذُنَيَّ، فَكَرِهَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا جَاءَ بِهِ، وَاشْتَدَّ عَلَيْهِ، فَنَزَلَتْ: (وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلَّا أَنْفُسُهُمْ فَشَهَادَةُ أَحَدِهِمْ) [النور: ٦] الْآيَتَيْنِ كِلْتَيْهِمَا، فَسُرِّيَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: أَبْشِرْ يَا هِلَالُ، قَدْ جَعَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَكَ فَرَجًا وَمَخْرَجًا، قَالَ هِلَالٌ: قَدْ كُنْتُ أَرْجُو ذَلِكَ مِنْ رَبِّي، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَرْسِلُوا إِلَيْهَا، فَجَاءَتْ، فَتَلَاهَا عَلَيْهِمَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَذَكَّرَهُمَا وَأَخْبَرَهُمَا أَنَّ عَذَابَ الْآخِرَةِ أَشَدُّ مِنْ عَذَابِ الدُّنْيَا، فَقَالَ هِلَالٌ: وَاللَّهِ لَقَدْ صَدَقْتُ عَلَيْهَا، فَقَالَتْ: قَدْ كَذَبَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَاعِنُوا بَيْنَهُمَا، فَقِيلَ لِهِلَالٍ: اشْهَدْ، فَشَهِدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الصَّادِقِينَ، فَلَمَّا كَانَتِ الْخَامِسَةُ قِيلَ لَهُ يَا هِلَالُ: اتَّقِ اللَّهَ، فَإِنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الْآخِرَةِ، وَإِنَّ هَذِهِ الْمُوجِبَةُ الَّتِي تُوجِبُ عَلَيْكَ الْعَذَابَ، فَقَالَ: وَاللَّهِ لَا يُعَذِّبُنِي اللَّهُ عَلَيْهَا كَمَا لَمْ يُجَلِّدْنِي عَلَيْهَا، فَشَهِدَ الْخَامِسَةَ أَنَّ لَعْنَةَ اللَّهِ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنَ الْكَاذِبِينَ، ثُمَّ قِيلَ لَهَا: اشْهَدِي، فَشَهِدَتْ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ، إِنَّهُ لَمِنَ الْكَاذِبِينَ، فَلَمَّا كَانَتِ الْخَامِسَةُ قِيلَ لَهَا: اتَّقِي اللَّهَ، فَإِنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الْآخِرَةِ، وَإِنَّ هَذِهِ الْمُوجِبَةُ الَّتِي تُوجِبُ عَلَيْكِ الْعَذَابَ، فَتَلَكَّأَتْ سَاعَةً، ثُمَّ قَالَتْ: وَاللَّهِ لَا أَفْضَحُ قَوْمِي، فَشَهِدَتِ الْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنَ الصَّادِقِينَ، فَفَرَّقَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَهُمَا، وَقَضَى أَنْ لَا يُدْعَى وَلَدُهَا لِأَبٍ، وَلَا تُرْمَى، وَلَا يُرْمَى وَلَدُهَا، وَمَنْ رَمَاهَا أَوْ رَمَى وَلَدَهَا فَعَلَيْهِ الْحَدُّ، وَقَضَى أَنْ لَا بَيْتَ لَهَا عَلَيْهِ، وَلَا قُوتَ مِنْ أَجْلِ أَنَّهُمَا يَتَفَرَّقَانِ مِنْ غَيْرِ طَلَاقٍ، وَلَا مُتَوَفَّى عَنْهَا، وَقَالَ: إِنْ جَاءَتْ بِهِ أُصَيْهِبَ أُرَيْصِحَ أُثُيْبِجَ حَمْشَ السَّاقَيْنِ فَهُوَ لِهِلَالٍ، وَإِنْ جَاءَتْ بِهِ أَوْرَقَ جَعْدًا جُمَالِيًّا خَدَلَّجَ السَّاقَيْنِ سَابِغَ الْأَلْيَتَيْنِ فَهُوَ لِلَّذِي رُمِيَتْ بِهِ، فَجَاءَتْ بِهِ أَوْرَقَ جَعْدًا جَمَالِيًّا خَدَلَّجَ السَّاقَيْنِ سَابِغَ الْأَلْيَتَيْنِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَوْلَا الْأَيْمَانُ لَكَانَ لِي وَلَهَا شَأْنٌ، قَالَ عِكْرِمَةُ: فَكَانَ بَعْدَ ذَلِكَ أَمِيرًا عَلَى مُضَرَ وَمَا يُدْعَى لِأَبٍ ضعيف


Ibn ‘Abbas said “Hilal bin Umayyah was one of the three persons whose repentance was accepted by Allaah. One night he returned from his land and found a man along with his wife. He witnessed with his eyes and heard with his ears. He did not threaten him till the morning.” Next day he went to the Apostle of Allaah(ﷺ) in the morning and said Apostle of Allaah(ﷺ) “I came to my wife in the night and found a man along with her. I saw with my own eyes and heard with my own ears. The Apostle of Allaah(ﷺ) disliked what he described and he took it seriously. There upon the following Qur’anic verse came down “And those who make charges against their spouses but have no witnesses except themselves, let the testimony of one of them ....” When the Apostle of Allaah(ﷺ) came to himself (after the revelation ended) he said “Glad tidings to you Hilal, Allaah the exalted has made ease and a way out for you.” Hilal said “I expected that from my Lord. The Apostle of Allaah(ﷺ) said “Send for her. She then came.” The Apostle of Allaah(ﷺ) recited the verses to them and he reminded them and told them that the punishment in the next world was more severe than that in n this world. Hilal said “I swear by Allah I spoke the truth against her.” She said “He told a lie.” The Apostle of Allaah(ﷺ) said “Apply the method of invoking curses on one another. Hilal was told “Bear witness. So he bore witness before Allaah four times that he spoke the truth.” When he was about to utter the fifth time he was told “Hilal fear Allah, for the punishment in this world is easier than that in the next world and this is the deciding one, that will surely cause punishment to you.” He said “I swear by Allaah. Allah will not punish me for this (act), as He did not cause me to be flogged for this (act).” So he bore witness a fifth time invoking the curse of Allah on him if he was of those who tell a lie. Then the people said to her, Testify. So she gave testimony before Allaah that he was a liar. When she was going to testify the fifth time she was told “Fear Allah, for the punishment in this world is easier than that in the next world. This is the deciding one that will surely cause punishment to you.” She hesitated for a moment. And then said “By Allah, I will not disgrace my people.” So she testified a fifth time invoking the curse of Allah on her if he spoke the truth. Apostle of Allaah(ﷺ) separated them from each other and decided that the child will not be attributed to its father. Neither she nor her child will be accused of adultery. He who accuses her or her child will be liable to punishment. He also decided that there will be no dwelling and maintenance for her (from the husband) as they were separated without divorce and death. He then said “If she gives birth to a child with reddish hair, light buttocks, wide belly and light shins he will be the child of Hilal. If she bears a dusky child with curly hair, fat limbs, fat shins and fat buttocks he will be the child of the one who was accused of adultery. She gave birth to a child with curly hair, fat limbs, fat shins and fat buttocks. The Apostle of Allaah(ﷺ) said “Had there been no oaths, I would have dealt with her severely.” ‘Ikrimah said “Later on he became the chief of the tribe of Mudar. He was not attributed to his father.”


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ