১২২৩

পরিচ্ছেদঃ ২১৭: রমযানের রোযা ফরয, তার ফযীলত ও আনুষঙ্গিক জ্ঞাতব্য বিষয়াবলী

মহান আল্লাহ বলেন,

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَأَيَّامًا مَعْدُودَاتٍ ۚ فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۚ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ ۖ فَمَنْ تَطَوَّعَ خَيْرًا فَهُوَ خَيْرٌ لَهُ ۚ وَأَنْ تَصُومُوا خَيْرٌ لَكُمْ ۖ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَشَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِنَ الْهُدَىٰ وَالْفُرْقَانِ ۚ فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ ۖ وَمَنْ كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۗ يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ ﴾ (البقرة: ١٨٣، ١٨٥)

অর্থাৎ হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য সিয়ামের (রোযার) বিধান দেওয়া হল, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা সংযম-শীল হতে পার। (রোযা) নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্য। তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে বা সফর অবস্থায় থাকলে অন্য দিনে এ সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আর যারা রোযা রাখার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও রোযা রাখতে চায় না (যারা রোযা রাখতে অক্ষম) তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাদ্য দান করবে। পরন্তু যে ব্যক্তি খুশীর সাথে সৎকর্ম করে, তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি তোমরা রোযা রাখ, তাহলে তা তোমাদের জন্য বিশেষ কল্যাণ-প্রসূ; যদি তোমরা উপলব্ধি করতে পার। রমযান মাস, এতে মানুষের দিশারী এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী-রূপে কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। অতএব তোমাদের মধ্যে যে কেউ এ মাস পাবে, সে যেন এ মাসে অবশ্যই রোযা পালন করে। আর যে অসুস্থ অথবা মুসাফির থাকে, তাকে অন্য দিনে এ সংখ্যা পূরণ করতে হবে। (সূরা বাকারাহ ১৮৩- ১৮৫ আয়াত)


১/১২২৩। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “মহান আল্লাহ বলেন, ’আদম সন্তানের প্রতিটি সৎকর্ম তার জন্যই; কিন্তু রোযা স্বতন্ত্র, তা আমারই জন্য, আর আমিই তার প্রতিদান দেব।’ রোযা ঢাল স্বরূপ অতএব তোমাদের কেউ যেন রোযার দিনে অশ্লীল না বলে এবং হৈ-হট্টগোল না করে। আর যদি কেউ তাকে গালি-গালাজ করে অথবা তার সাথে লড়াই-ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, ’আমি রোযা রেখেছি।’ সেই মহান সত্তার শপথ! যার হাতে মুহাম্মদের জীবন আছে, নিঃসন্দেহে রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির সুগন্ধ অপেক্ষা বেশী উৎকৃষ্ট। রোজাদারের জন্য দু’টি আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে, তখন সে আনন্দিত হয়; (১) যখন সে ইফতার করে (ইফতারের জন্য সে আনন্দিত হয়)। আর (২) যখন সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, স্বীয় রোযার জন্য সে আনন্দিত হবে।” (বুখারী ও মুসলিম, এই শব্দগুলি বুখারীর)[1]

বুখারীর অন্য বর্ণনায় আছে, ’সে (রোজাদার) পানাহার ও যৌনাচার বর্জন করে একমাত্র আমারই জন্য। রোযা আমার জন্যই। আর আমি নিজে তার পুরস্কার দেব। আর প্রত্যেক নেকী দশগুণ বর্ধিত হয়।’

মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, “আদম সন্তানের প্রত্যেক সৎকর্ম কয়েকগুণ বর্ধিত করা হয়। একটি নেকী দশগুণ থেকে নিয়ে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। মহান আল্লাহ বলেন, ’কিন্তু রোযা ছাড়া। কেননা, তা আমার উদ্দেশ্যে (পালিত) হয়। আর আমি নিজেই তার পুরস্কার দেব। সে পানাহার ও কাম প্রবৃত্তি আমার (সন্তুষ্টি অর্জনের) উদ্দেশ্যেই বর্জন করে।’ রোজাদারের জন্য দু’টি আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে। একটি আনন্দ হল ইফতারের সময়, আর অপরটি তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎকালে। আর নিশ্চয় তার মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির সুগন্ধ অপেক্ষা অধিক উৎকৃষ্ট।”

(217) بَابُ وُجُوْبِ صَوْمِ رَمَضَانَوَبَيَانِ فَضْلِ الصِّيَامِ وَمَا يَتَعَلَّقُ بِهِ

وَعَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «قَالَ اللهُ - عَزَّ وَجَلَّ -: كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ لَهُ إِلاَّ الصِّيَام، فَإِنَّهُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ، وَالصِّيَامُ جُنَّةٌ، فَإِذَا كَانَ يَومُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلاَ يَرْفُثْ وَلاَ يَصْخَبْ فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ فَلْيَقُلْ: إنِّي صَائِمٌ . وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَخُلُوْفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ مِنْ رِيحِ المِسْكِ . لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ يَفْرَحُهُمَا: إِذَا أَفْطَرَ فَرِحَ بِفِطرِهِ، وَإِذَا لَقِيَ رَبَّهُ فَرِحَ بِصَوْمِهِ». متفقٌ عَلَيْهِ، وهذا لفظ روايةِ البُخَارِي. وفي روايةٍ لَهُ: «يَتْرُكُ طَعَامَهُ، وَشَرَابَهُ، وَشَهْوَتَهُ مِنْ أَجْلِي، الصِّيَامُ لِي وَأنَا أَجْزِي بِهِ، وَالحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا». وفي رواية لمسلم: «كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ يُضَاعَفُ، اَلْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِمِئَةِ ضِعْفٍ . قَالَ الله تَعَالَى: إِلاَّ الصَّوْمَ فَإِنَّهُ لِي وَأنَا أَجْزِي بِهِ؛ يَدَعُ شَهْوَتَهُ وَطَعَامَهُ مِنْ أَجْلِي. لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ: فَرْحَةٌ عِنْدَ فِطْرِهِ، وَفَرْحَةٌ عِنْدَ لِقَاءِ رَبِّهِ . وَلَخُلُوفُ فِيهِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ مِنْ رِيحِ المِسْكِ».

(217) Chapter: The Excellence of Observing Saum (Fasts) during Ramadan


Allah, the Exalted, says: "O you who believe! the fasting is prescribed for you as it was prescribed for those before you, that you may become Al-Muttaqun (the pious). (Fasting) for a fixed number of days, but if any of you is ill or on a journey, the same number (should be made up) from other days. And as for those who can fast with difficulty, (e.g., an old man), they have (a choice either to fast or) to feed a Miskin (poor person) (for every day). But whoever does good of his own accord, it is better for him. And that you fast is better for you if only you know. The month of Ramadan in which was revealed the Qur'an, a guidance for mankind and clear proofs for the guidance and the criterion (between right and wrong). So whoever of you sights (the crescent on the first night of) the month (of Ramadan, i.e., is present at his home), he must fast that month, and whoever is ill or on a journey, the same number (of days which one did not fast must be made up) from other days.'' (2:183-185) Abu Hurairah (May Allah be pleased with him) reported: The Messenger of Allah (ﷺ) said, "Allah the Exalted and Majestic said: 'Every act of the son of Adam is for him, except As-Siyam (the fasting) which is (exclusively) for Me, and I will reward him for it.' Fasting is a shield. When anyone of you is observing fast, he should neither indulge in obscene language nor should he raise his voice; and if anyone reviles him or tries to quarrel with him, he should say: 'I am fasting.' By Him in Whose Hand the soul of Muhammad is, the breath of one observing Saum is sweeter to Allah than the fragrance of musk. The one who fasts, experiences two joys: he feels pleasure when he breaks the fast. He is joyful by virtue of his fast when he meets his Rubb." [Al-Bukhari and Muslim]. In a narration by Al-Bukhari, the Messenger of Allah (ﷺ) said, "Allah says: '(The person observing Saum) has abstained from food and drink, and sexual pleasures for My sake; fasting is for Me, and I will bestow its reward. Every good deed has ten times its reward'." In a narration by Muslim, the Messenger of Allah (ﷺ) said, "The reward of every (good) deed of a person is multiplied from ten to seven hundred times. Allah (SWT) says: 'The reward of observing Saum is different from the reward of other good deeds; Saum is for Me, and I Alone will give its reward. The person observing Saum abstains from food and drink only for My sake.' The fasting person has two joyous occasions, one at the time of breaking his fast, and the other at the time of meeting his Rubb. Surely, the breath of one observing Saum is better smelling to Allah than the fragrance of musk." Commentary: "Khuluf'', is the smell that comes from the mouth of person who observes Saum. It results from the thirst and hunger which he has to suffer during the Saum. The Hadith not only tells us the merits of Saum but also brings into focus the true significance of it. Saum is not thus mere abstention from food, drink and sexual intercourse, but also keeping away from all evils and vices and embracing virtues.