পরিচ্ছেদঃ
১১৮৩। এ মুহুর্তে আমার বন্ধু জীবরীল আমার নিকট থেকে বের হলেন। তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মাদ সেই সত্ত্বার কসম যিনি আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন, আল্লাহর বান্দাদের মধ্য থেকে তাঁর এক বান্দা রয়েছে যে সমুদ্রের এমন এক পাহাড়ের চূড়ায় পাঁচশত বছর ইবাদাত করেছে যার প্রস্থ ও দৈর্ঘ ৩০৩০=৯০০ হাত (গজ)। সমুদ্রটিকে প্রত্যেক দিক থেকেই চার হাজার ফারসাখ (বারো হাজার মাইল) পরিবেষ্টিত করে রেখেছে। আল্লাহ্ তা’আলা তার জন্য একটি মিষ্টি ঝর্ণা চালু করেছেন যার প্রস্থ আংগুলের সমান। সে ঝর্ণাটা মিষ্টি পানি প্রবাহিত করছে। অতঃপর মিষ্টি পানিগুলো পাহাড়ের নিচে জমছে। আল্লাহ্ তার জন্য আঙ্গুরের একটি বৃক্ষ বের করেছেন, বৃক্ষটি তার জন্য প্রতি রাতে আঙ্গুর বের করছে। সে তাকে তার দিনের জন্য (প্রয়োজনীয়) খাদ্য প্রদান করছে। যখন সন্ধ্যা হচ্ছে তখন সে নেমে অযুর পানি গ্রহণ করছে এবং সে আঙ্গুর গ্রহণ করছে, অতঃপর ভক্ষণ করছে, এরপর সালাতের জন্য দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। সে তার প্রতিপালকের নিকট প্রার্থনা জানালো মৃত্যুর সময় তার আত্মাকে যেন সাজদারত অবস্থায় কবয করা হয় এবং যমীন সহ অন্য কোন কিছুকেই যেন তাকে নষ্ট করার সুযোগ দেয়া না হয় এবং তাকে সাজদারত অবস্থাতেই যেন (কিয়ামতের দিন) উঠানো হয়।
জীবরল বললেনঃ তাই করা হলো। আমরা যখন (যমীনে) অবতরণ করি এবং যখন (আকাশে) উঠে যায় তখন তার সম্পর্কে এটাই জানি যে, তাকে কিয়ামতের দিন উঠিয়ে আল্লাহ রব্বুল আলামীনের সামনে দাঁড় করানো হবে। অতঃপর প্রতিপালক আল্লাহ্ তাকে বলবেনঃ আমার রহমতের বিনিময়ে আমার বান্দাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। তখন সে বলবেঃ বরং আমার আমলের বিনিময়ে। অতঃপর প্রতিপালক আল্লাহ্ বলবেনঃ আমার রহমতের বিনিময়ে আমার বান্দাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। তখন সে বলবেঃ হে আমার প্রতিপালক। বরং আমার আমলের বিনিময়ে। অতঃপর প্রতিপালক আল্লাহ্ বলবেনঃ আমার রহমতের বিনিময়ে আমার বান্দাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। তখন সে বলবেঃ হে আমার প্রতিপালক। বরং আমার আমলের বিনিময়ে। এ সময় আল্লাহ্ তাআলা ফেরেশতাদেরকে বলবেনঃ তোমরা আমার এ বান্দার প্রতি প্রদত্ত নেয়ামাতকে আর তার কৃত আমলকে মাপো।
অতঃপর শুধুমাত্র চোখের নেয়ামাত এরূপ পাওয়া যাবে যে পাঁচশত বছরের ইবাদাতকে ছেয়ে ফেলছে আর শরীরের অবশিষ্ট নেয়ামাত তার প্রতি অনুগ্রহ স্বরূপ। এ সময় আল্লাহ্ তা’আলা বলবেনঃ আমার বান্দাকে তোমরা জাহান্নামে দাও। জীবরীল বললেনঃ তাকে জাহান্নামের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে। এ সময় সে ডাক দিয়ে বলবে - হে আমার প্রতিপালক তোমার রহমতের বিনিময়ে তুমি আমাকে জান্নাত প্রদান কর। আল্লাহ্ তা’আলা বলবেনঃ তোমরা তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আস। তাকে আল্লাহর সামনে দাঁড় করানো হবে আর আল্লাহ্ বলবেনঃ হে আমার বান্দা! তুমি যখন কিছুই ছিলে না তখন তোমাকে কে সৃষ্টি করেছে? সে বলবেঃ হে আমার প্রতিপালক! আপনি। আল্লাহ্ বলবেনঃ তা কি তোমার পক্ষ থেকে ছিল নাকি আমার রহমতের কারণে ছিল? সে বলবেঃ বরং তোমার রহমতের কারণে ছিল। আল্লাহ্ বলবেনঃ তোমাকে পাঁচশত বছর ইবাদাত করার শক্তি কে প্রদান করেছিল? আল্লাহ্ বলবেনঃ তোমাকে পানির গভীরতার মাঝে পাহাড়ে কে তোমাকে স্থান দান করেছিল? তোমার জন্য লবণাক্ত পানির মধ্য থেকে মিঠা পানি বের করেছিল কে? তোমার জন্য প্রতি রাতে আঙ্গুর বের করত কে? অথচ তা বের করা হয় বছরে মাত্র একবার। তুমি আমার নিকট চেয়েছিলে তোমার আত্মাকে যেন সাজদারত অবস্থায় আমি কবয করি। আমি তোমার জন্য তা করেছি? সে বলবেঃ তুমি হে আমার প্রতিপালক। আল্লাহ্ তা’আলা বলবেনঃ সে সবই তো আমার রহমত, আমার রহমত দ্বারাই তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবো। তোমরা আমার বান্দাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। হে আমার বান্দা! তুমি কতই না উত্তম বান্দা ছিলে। অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। জীবরীল বললেনঃ হে মুহাম্মাদ সব কিছুই আল্লাহর রহমতে।
হাদীসটি দুর্বল।
হাদীসটি খারায়েতী “ফাষীলাতুশ শুকর” গ্রন্থে (১৩৩-১৩৪), ওকায়লী "আযযুয়াফা" গ্রন্থে (১৬৫), তাম্মাম “আল-ফাওয়াইদ” গ্রন্থে (২/২৬৫-২৬৬), ইবনু কুদামা "আল-ফাওয়াইদ" গ্রন্থে (২/৬/১-২) ও হাকিম (৪/২৫০-২৫১) সুলায়মান ইবনু হারাম সূত্রে মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদির হতে, তিনি জাবের ইবনু আবদিল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
হাকিম বলেনঃ হাদীসটির সনদ সহীহ। আর ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওযিয়াহ “শিফাউল গালীল” গ্রন্থে (পৃঃ ১১৪) তার অনুসরণ করে তিনিও সহীহ আখ্যা দিয়েছেন। তার থেকে এরূপ মন্তব্য আশ্চর্যজনক। কারণ বর্ণনাকারী সুলাইমান মাজহুল (অপরিচিত) যেমনটি ওকায়লীর উদ্ধৃতিতে বর্ণিত হয়েছে।
হাফিয যাহাবী হাকিমের সমালোচনা করে বলেছেনঃ আল্লাহর কসম সনদটি সেরূপ নয়, বর্ণনাকারী সুলায়মান নির্ভরযোগ্য নন।
তিনি "আল-মিযান" গ্রন্থে সুলায়মানের জীবনী বর্ণনা করতে গিয়ে উল্লেখ করেছেন, আযদী বলেনঃ সুলায়মানের হাদীস সহীহ নয়।
ওকায়লী বলেনঃ তিনি মাজহুল (অপরিচিত), তার হাদীস নিরাপদ নয়। এরপর হাফিয যাহাবী বলেনঃ এ হাদীসটি সহীহ নয়। আল্লাহ তা’আলা বলছেনঃادْخُلُواْ الْجَنَّةَ بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ "তোমরা যে আমল করতে তার বিনিময়ে জান্নাতে প্রবেশ কর।" (সূরা নাহলঃ ৩২)। কিন্তু কোন ব্যক্তিকেই তার কৃত আমল আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করবে না যেমনটি সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। বরং সৎ আমলগুলোও আমাদের প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে তার দয়া এবং তার নেয়ামাত।
خرج من عندي خليلي جبريل آنفا فقال: يا محمد! والذي بعثك بالحق إن لله عبدا من عبيده عبد الله خمسمائة سنة على رأس جبل في البحر عرضه وطوله ثلاثون ذراعا في ثلاثين ذراعا، والبحر محيط به أربعة آلاف فرسخ من كل ناحية وأخرج الله تعالى له عينا عذبة بعرض الإصبح تبض بماء عذب فتستنقع في أسفل الجبل، وشجرة رمان تخرج له كل ليلة رمانة فتغذيه يومه فإذا أمسى نزل فأصاب من الوضوء وأخذ تلك الرمانة فأكلها ثم قام لصلاته، فسأل ربه عز وجل عند وقت الأجل أن يقبضه ساجدا وأن لا يجعل للأرض ولا لشيء يفسده عليه سبيلا حتى يبعثه الله وهو ساجد، قال: ففعل، فنحن نمر عليه إذا هبطنا وإذا عرجنا فنجد له في العلم أنه يبعث يوم القيامة فيوقف بين يدي الله عز وجل فيقول له الرب: أدخلوا عبدي الجنة برحمتي فيقول: بل بعملي، فيقول الرب: أدخلوا عبدي الجنة برحمتي فيقول: بل بعملي، فيقول الرب: أدخلوا عبدي الجنة برحمتي: فيقول: يا رب بل بعملي، فيقول الرب: أدخلوا عبدي الجنة برحمتي، فيقول: رب بل بعملي، فيقول الله عز وجل للملائكة: قايسوا عبدي بنعمتي عليه وبعمله، فتوجد نعمة البصر قد أحاطت بعبادة خمسمائة سنة وبقيت نعمة الجسد فضلا عليه، فيقول: أدخلوا عبدي النار، قال: فيجر إلى النار فينادي: رب برحمتك أدخلني الجنة، فيقول: ردوه، فيوقف بين يديه فيقول: يا عبدي من خلقك ولم تك شيئا؟ فيقول: أنت يا رب، فيقول: كان ذلك من قِبلك أوبرحمتي؟ فيقول: بل برحمتك، فيقول: من قواك لعبادة خمسمائة عام؟ فيقول: أنت يا رب، فيقول: من أنزلك في جبل وسط اللجة وأخرج لك الماء العذب من الماء المالح، وأخرج لك كل ليلة رمانة وإنما تخرج مرة في السنة، وسألتني أن أقبضك ساجدا ففعلت ذلك بك؟ فيقول: أنت يا رب، فقال الله عز وجل: فذلك برحمتي، وبرحمتي أدخلك الجنة، أدخلوا عبدي الجنة فنعم العبد كنت يا عبدي، فيدخله الله الجنة. قال جبريل عليه السلام: إنما الأشياء برحمة الله تعالى يا محمد ضعيف - أخرجه الخرائطي في " فضيلة الشكر " (133 - 134) والعقيلي في " الضعفاء 165) وتمام في " الفوائد " (265/2 - 266/1) وابن قدامة في " الفوائد 2/6/1 - 2) وكذا الحاكم (4/250 - 251) من طريق سليمان بن هرم عن محمد بن المنكدر عن جابر بن عبد الله رضي الله عنه قال: خرج علينا النبي صلى الله عليه وسلم فقال: فذكره. وقال الحاكم: " صحيح الإسناد ". كذا قال! وتبعه ابن القيم في " شفاء العليل " (ص 114) ، وهو منه عجيب ن فإن سليمان هذا مجهول كما يأتي عن العقيلي، وقول الحاكم عقب تصحيحه المذكور: " والليث لا يروي عن المجهولين " مجرد دعوى لا دليل عليها، والحاكم نفسه أول من ينقضها فقد روى في " المستدرك " (4/230) حديثا آخر من رواية الليث عن إسحاق بن بزرج بسنده عن الحسن بن علي، وقال عقبه " لولا جهالة إسحاق لحكمت للحديث بالصحة " وهذا مناقض تمام المناقضة لدعواه السابقة، ولذلك تعقبه الذهبي بقوله " قلت: لا والله، وسليمان غير معتمد " وذكر في ترجمة سليمان هذا من " الميزان " " قال الأزدي: لا يصح حديثه " وقال العقيلي: مجهول وحديثه غير محفوظ " ثم قال الذهبي عقبه " لم يصح هذا، والله تعالى يقول: " ادخلوا الجنة بما كنتم تعملون " ولكن لا ينجي أحدا عمله من عذاب الله كما صح، بل أعمالنا الصالحة هي من فضل الله علينا ومن نعمه لا بحول منا ولا بقوة، فله الحمد على الحمد له " وحديث ابن بزرج المشار إليه خرجته في آخر الجزء الثاني من " تمام المنة في التعليق على فقه السنة " (صلاة العيد / التحقيق الثاني) ولعله ييسر لنا إعادة طبعه مع الجزء الأول إن شاء الله تعالى