পরিচ্ছেদঃ ৬৪: কৃতজ্ঞ ধনীর মাহাত্ম্য
কৃতজ্ঞ ধনী ঐ ব্যক্তি যে বৈধ পন্থায় ধনার্জন করে এবং তা বৈধ ও বিধেয় পথে ব্যয় করে।
এ ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা বলেন,
﴿ فَأَمَّا مَنۡ أَعۡطَىٰ وَٱتَّقَىٰ ٥ وَصَدَّقَ بِٱلۡحُسۡنَىٰ ٦ فَسَنُيَسِّرُهُۥ لِلۡيُسۡرَىٰ ﴾ [الليل: ٥، ٧]
অর্থাৎ “সুতরাং যে দান করে ও আল্লাহকে ভয় করে, এবং সদ্বিষয়কে সত্যজ্ঞান করে। অচিরেই আমি তার জন্য সুগম করে দেব (জান্নাতের) সহজ পথ।” (সূরা লায়ল ৫-৭ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ وَسَيُجَنَّبُهَا ٱلۡأَتۡقَى ١٧ ٱلَّذِي يُؤۡتِي مَالَهُۥ يَتَزَكَّىٰ ١٨ وَمَا لِأَحَدٍ عِندَهُۥ مِن نِّعۡمَةٖ تُجۡزَىٰٓ ١٩ إِلَّا ٱبۡتِغَآءَ وَجۡهِ رَبِّهِ ٱلۡأَعۡلَىٰ ٢٠ وَلَسَوۡفَ يَرۡضَىٰ ٢١ ﴾ [الليل: ١٧، ٢١]
অর্থাৎ “আর আল্লাহভীরুকে তা থেকে দূরে রাখা হবে। যে আত্মশুদ্ধির জন্য তার ধন-সম্পদ দান করে এবং তার প্রতি কারো কোন অনুগ্রহের প্রতিদানে নয়। কেবল তার মহান পালনকর্তার সন্তুষ্টি লাভের প্রত্যাশায়। আর সে অচিরেই সন্তুষ্ট হবে।” (সূরা ঐ ১৭-২১ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ إِن تُبۡدُواْ ٱلصَّدَقَٰتِ فَنِعِمَّا هِيَۖ وَإِن تُخۡفُوهَا وَتُؤۡتُوهَا ٱلۡفُقَرَآءَ فَهُوَ خَيۡرٞ لَّكُمۡۚ وَيُكَفِّرُ عَنكُم مِّن سَئَِّاتِكُمۡۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِيرٞ ٢٧١ ﴾ [البقرة: ٢٧١]
অর্থাৎ “তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান কর, তবে তা উত্তম। আর যদি তা গোপনে কর এবং অভাবগ্রস্তকে দাও, তবে তা তোমাদের জন্য আরও উত্তম। এতে তিনি তোমাদের কিছু কিছু পাপ মোচন করবেন, বস্তুত তোমরা যা কর, আল্লাহ তা অবহিত।” (সূরা বাক্বারাহ ২৭১ আয়াত)
তিনি আরো বলেছেন,
<صلى الله عليه وسلمm>﴿ لَن تَنَالُواْ ٱلۡبِرَّ حَتَّىٰ تُنفِقُواْ مِمَّا تُحِبُّونَۚ وَمَا تُنفِقُواْ مِن شَيۡءٖ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِهِۦ عَلِيمٞ ٩٢ ﴾ [ال عمران: ٩٢]
অর্থাৎ “তোমরা কখনও পুণ্য লাভ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমাদের প্রিয় জিনিস আল্লাহর পথে ব্যয় করেছ। আর তোমরা যা কিছু ব্যয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।” (সূরা আলে ইমরান ৯২ আয়াত)
১/৫৭৬। ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ’আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’কেবলমাত্র দু’টি বিষয়ে ঈর্ষা করা যায়ঃ
(১) ঐ ব্যক্তির প্রতি যাকে মহান আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, অতঃপর তাকে হক পথে অকাতরে দান করার ক্ষমতা দান করেছেন এবং
(২) ঐ ব্যক্তির প্রতি যাকে মহান আল্লাহ হিকমত দান করেছেন, অতঃপর সে তার দ্বারা ফায়সালা করে ও তা শিক্ষা দেয়।’’
(বুখারী ও মুসলিম এটি ৫৪৯ নম্বরে গত হয়েছে।) [1]
بَابُ فَضْلِ الغَنِيِّ الشَّاكِرِ - (64)
وعن ابن مسعود رضي الله عنه، عن النبيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «لا حَسَدَ إِلاَّ في اثْنَتَيْنِ: رَجُلٌ آتَاهُ اللهُ مَالاً، فَسَلَّطَهُ عَلَى هَلَكَتِهِ في الحَقّ، وَرَجُلٌ آتَاهُ اللهُ حِكْمَةً، فَهُوَ يَقْضِي بِهَا ويُعَلِّمُهَا » متفقٌ عَلَيْهِ
(64) Chapter: Excellence of a Grateful Rich Man
Excellence of a Grateful Rich Man
Allah, the Exalted, says:
"As for him who gives (in charity) and keeps his duty to Allah and fears Him, and believes in Al-Husna. We
will make smooth for him the path of ease (goodness).'' (92:5-7)
"And Al-Muttaqun (the pious and righteous) will be far removed from it (Hell). He who spends his wealth for
increase in self-purification. And who has (in mind) no favour from anyone to be paid back. Except to seek
the Countenance of his Rubb, the Most High. He surely, will be pleased (when he will enter Jannah).'' (92:17-
21)
"If you disclose your Sadaqat (alms-giving), it is well; but if you conceal them and give them to the poor, that
is better for you. (Allah) will expiate you some of your sins. And Allah is Well-Acquainted with what you do.''
(2:271)
"By no means shall you attain Al-Birr (piety, righteousness - here it means Allah's reward, i.e., Jannah),
unless you spend (in Allah's Cause) of that which you love; and whatever of good you spend, Allah knows it
well.'' (3:92)
-----------
Ibn Mas'ud (May Allah be pleased with him) reported:
Messenger of Allah (ﷺ) said, "Envy is permitted only in two cases: A man whom Allah gives wealth, and he disposes of it rightfully, and a man to whom Allah gives knowledge which he applies and teaches it."
[Al-Bukhari and Muslim].
Commentary: This Hadith has already been mentioned. Yet, its relevance with this chapter has prompted us to repeat it here. It lays emphasis on two points. First, if Allah gives wealth to a man, his sense of gratitude should be expressed in his spending it in good ways according to the Divine command. Second, if Allah has endowed somebody with knowledge and wisdom, he should be thankful to his Rubb by way of putting it into practice and by imparting it to others. It means one can aspire for knowledge and richness, provided one's motive is to benefit others. Envy is a bad quality which Muslims must shun. In this Hadith, however, envy (or Ghibtah) refers to the feeling of wishing to have what somebody else has or to be like somebody else without these blessings be taken
away from the envied person.
পরিচ্ছেদঃ ৬৪: কৃতজ্ঞ ধনীর মাহাত্ম্য
২/৫৭৭। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ’আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’কেবলমাত্র দু’টি বিষয়ে ঈর্ষা করা যায়ঃ
(১) ঐ ব্যক্তির (হিংসা করা যায়) যাকে আল্লাহ কুরআন (শিক্ষা) দিয়েছেন অতঃপর সে দিবারাত্রি তার যত্ন করে (তেলাওয়াত ও আমল করে) এবং
(২) ঐ ব্যক্তির (হিংসা করা যায়) যাকে মহান আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, অতঃপর সে দিবারাত্রি তা দান করে।’’
(বুখারী ও মুসলিম) [1]
بَابُ فَضْلِ الغَنِيِّ الشَّاكِرِ - (64)
وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «لاَ حَسَدَ إِلاَّ في اثْنَتَيْنِ: رَجُلٌ آتَاهُ اللهُ القُرْآنَ، فَهُوَ يَقُومُ بِهِ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ، وَرَجُلٌ آتَاهُ مَالاً، فَهُوَ يُنْفِقُهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ». متفقٌ عَلَيْهِ
(64) Chapter: Excellence of a Grateful Rich Man
Ibn 'Umar (May Allah be pleased with him) reported:
Messenger of Allah (ﷺ) said: "Envy is justified in regard to two types of persons only: a man whom Allah has given knowledge of the Qur'an, and so he recites it during the night and during the day; and a man whom Allah has given wealth and so he spends from it during the night and during the day."
[Al-Bukhari and Muslim].
Commentary: Ahadith permit us to envy (in the positive sense of the word: see commentary on the previous Hadith) only two traits of character of somebody. Grammatically, the texts of these Ahadith imply both feminine and masculine genders. In the preceding Hadith, the word 'knowledge' has been used. It stands for the Word of Allah. To apply and teach knowledge means to put into practise the teachings of the Qur'an. And that includes the recitation of the Qur'an (both in Salat and otherwise), imparting its teaching and passing judgements in its light. From this point of view both the Ahadith convey the similar sense, and similarly we may also read into them two persons or two traits of character.
পরিচ্ছেদঃ ৬৪: কৃতজ্ঞ ধনীর মাহাত্ম্য
৩/৫৭৮। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ’আনহু থেকে বর্ণিত, একদা গরীব মুহাজির (সাহাবাগণ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, ’হে আল্লাহর রাসূল! ধনীরাই তো উঁচু উঁচু মর্যাদা ও চিরস্থায়ী সম্পদের অধিকারী হয়ে গেল।’ তিনি বললেন, ’’তা কিভাবে?’’ তাঁরা বললেন, ’তারা নামায পড়ছে যেমন আমরা নামায পড়ছি, তারা রোযা রাখছে যেমন আমরা রাখছি। কিন্তু তারা সাদকাহ করছে, আর আমরা করতে পারছি না। তারা দাস মুক্ত করছে, আর আমরা পারছি না।’ এ কথা শুনে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’আমি কি তোমাদেরকে এমন জিনিস শিখিয়ে দেব না, যার দ্বারা তোমরা তোমাদের অগ্রবর্তীদের মর্যাদা লাভ করবে, তোমাদের পরবর্তীদের থেকে অগ্রবর্তী থাকবে এবং তোমাদের মত কাজ যে করবে, সে ছাড়া অন্য কেউ তোমাদের চাইতে শ্রেষ্ঠতর হতে পারবে না?’’
তাঁরা বললেন, ’অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল! (আমাদেরকে তা শিখিয়ে দিন।)’ তিনি বললেন, ’’প্রত্যেক (ফরয) নামাযের পরে ৩৩ বার করে ’সুবহানাল্লাহ’, ’আল্লাহু আকবার’ ও ’আল-হামদু লিল্লাহ’ বলবে।’’ অতঃপর গরীব মুহাজিরগণ পুনরায় আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, ’আমরা যে আমল করছি, সে আমল আমাদের ধনী ভাইয়েরা শোনার পর তারাও আমল শুরু করে দিয়েছে? (এখন তো তারা আবার আমাদের চেয়ে অগ্রবর্তী হয়ে যাবে।)’ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’এ হল আল্লাহর অনুগ্রহ; তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন।’’ (বুখারী, মুসলিম শব্দগুলি মুসলিমের) [1]
بَابُ فَضْلِ الغَنِيِّ الشَّاكِرِ - (64)
وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أنَّ فُقَراءَ المُهَاجِرينَ أتَوْا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، فَقَالَوا: ذَهَبَ أهْلُ الدُّثُورِ بِالدَّرَجَاتِ العُلَى، وَالنَّعِيم المُقِيمِ، فَقَالَ: «وَمَا ذَاك ؟» فَقَالَوا: يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي، وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ، وَيَتَصَدَّقُونَ وَلاَ نَتَصَدَّقُ، وَيَعْتِقُونَ وَلاَ نَعْتِقُ، فَقَالَ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم:«أفَلا أُعَلِّمُكُمْ شَيْئاً تُدْرِكُونَ بِهِ مَنْ سَبَقَكُمْ، وَتَسْبِقُونَ بِهِ مَنْ بَعْدَكُمْ، وَلاَ يَكُونُ أحَدٌ أفْضَلَ مِنْكُمْ إِلاَّ مَنْ صَنَعَ مِثْلَ مَا صَنَعْتُمْ؟» قَالُوا: بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «تُسَبِّحُونَ وَتُكَبِّرُونَ وَتَحْمِدُونَ، دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاثاً وَثَلاثِينَ مَرَّةً » فَرَجَعَ فُقَرَاء المُهَاجِرِينَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَقَالَوا: سَمِعَ إخْوَانُنَا أهلُ الأمْوالِ بِمَا فَعَلْنَا، فَفَعَلُوا مِثلَهُ ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «ذَلِكَ فَضْلُ اللهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ ». متفقٌ عَلَيْهِ، وَهَذا لفظ رواية مسلم
(64) Chapter: Excellence of a Grateful Rich Man
Abu Hurairah (May Allah be pleased with him) reported:
Some of the poor Emigrants came to Messenger of Allah (ﷺ) and said to him, "The wealthy have obtained all high ranks and everlasting bliss." He asked, "How is that?" They replied: "They offer Salat as we do, and observe Saum (fasting) as we do, but they give in Sadaqah (charity) and we do not, and they emancipate slaves and we cannot." He (ﷺ) said, "Shall I not teach you something whereby you will catch up with those who have preceded you and will get ahead of those who follow you, and no one will surpass you unless he does the same as you do?" They said, "Surely, O Messenger of Allah." He said, "Say: Subhan Allah, and Allahu Akbar, and praise Him (by saying Al-hamdu lillah) thirty-three times at the end of every Salat." They returned to him and said: "Our brothers, the possessors of wealth, having heard what we are doing, have started doing the same." Messenger of Allah (ﷺ) said, "This is Grace of Allah which He gives to whom He wishes."
[Al- Bukhari and Muslim].
Commentary: The wording of the Hadith apparently reveals that Subhan Allah "Glory be to Allah'', Al-hamdu lillah "Praise be to Allah'', and Aallhu Akbar "Allah is the Greatest'' should be recited thirty-three times. If each group of words is said eleven times, the total number will become thirty-three. But Al-Hafiz Ibn Hajar believes that each formula should be uttered thirty-three times, that is to say, after each prayer "Subhan Allah'', "Al-hamdu lillah'' and "Allahu Akbar'' should be uttered thirty-three times each. But according to some hadith, Imam An-Nawawi is of the view that "Allahu Akbar'' should be said thirty-four times and in the end "La ilaha illallahu Wahdahu la sharika Lahu, Lahul-mulku wa Lahul-hamdu, wa Huwa `ala kulli shai'in Qadir'' (none has the right to be worshipped but Allah, He is One; He has no partners; to Him belongs the dominion and all the praise; and He has power over all things) should be recited. Should we recite them together or separately? Al-Qadi `Iyad is of the opinion that it is better to recite them separately, but Imam An-Nawawi is of the view that both ways are correct. In fact, in both ways
the number remains the same. Besides, an addition must not be made to the Sunnah of Messenger of Allah (PBUH). Practically we knew that it is necessary to use the prescription of a physician without making any alteration in its
elements; otherwise, it will not work properly. Similarly, there are spiritual benefits, blessings and efficacy in the number told by the Prophet (PBUH). Any alteration in it will nullify its blessing and efficacy. (Fath Al-Bari). This Hadith reveals how fervently the Companions were inclined towards good and how concerned about surpassing those who were better than them in some forms of good deeds. Indeed, all Muslims are equal with regard to the practice of religious principles. But what gives an edge to the rich over their poor coreligionists are the financial forms of worship, that is, charity and almsgiving, which the latter are unable to do.