পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৮০১-[১২] আবূ হুমায়দ আস্ সা’ইদী (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দশজন সাহাবীর উপস্থিতিতে বললেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) সম্পর্কে আপনাদের চেয়ে বেশি জানি। তারা বললেন, তা আমাদেরকে বলুন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তিনি সালাতের জন্য দাঁড়ালে দু’ হাত উঠাতেন, এমনকি তা দু’ কাঁধ বরাবর উপরে তুলতেন। তারপর তাকবীর বলতেন। এরপর ’ক্বিরাআত (কিরআত)’ পাঠ করতেন। এরপর রুকূ’তে যেতেন। দু’ হাতের তালু দু’ হাঁটুর উপর রাখতেন। পিঠ সোজা রাখতেন। অর্থাৎ- মাথা নীচের দিকেও ঝুকাতেন না, আবার উপরের দিকেও উঠাতেন না। এরপর (রুকূ’ থেকে) মাথা উঠিয়ে বলতেন ’’সামি’আল্লা-হু লিমান হামিদাহ’’। তারপর সোজা হয়ে হাত উপরে উঠাতেন, এমনকি তা কাঁধ বরাবর করতেন এবং বলতেন, ’আল্লা-হু আকবার’। এরপর সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করার জন্য জমিনের দিকে ঝুঁকতেন। সাজদার মধ্যে দুই হাতকে বাহু থেকে আলাদা করে রাখতেন। দু’ পায়ের আঙ্গুলগুলোকে ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র দিকে ফিরিয়ে দিতেন। তারপর মাথা উঠাতেন। বাম পা বিছিয়ে দিয়ে এর উপর বসতেন। এরপর সোজা হয়ে থাকতেন, যাতে তাঁর সমস্ত হাড় নিজ নিজ জায়গায় এসে যায়।

তারপর তিনি দাঁড়াতেন। দ্বিতীয় রাক্’আতও এভাবে আদায় করতেন। দু’ রাক্’আত আদায় করে দাঁড়াবার পর তাকবীর বলতেন ও কাঁধ পর্যন্ত দু’ হাত উঠাতেন, যেভাবে প্রথম সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শুরু করার সময় করতেন। এরপর তাঁর বাকী সালাত এভাবে তিনি আদায় করতেন। শেষ রাক্’আতের শেষ সাজদার পর, যার পরে সালাম ফিরানো হয়, নিজের বাম পা ডান দিকে বের করে দিতেন এবং এর উপর বসতেন। তারপর সালাম ফিরাতেন। তারা বলেন, আপনি সত্য বলেছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এভাবেই সালাত আদায় করতেন। (আবূ দাঊদ, দারিমী, তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ্)[1] আর তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ এ বর্ণনাটিকে এই অর্থে নকল করেছেন। ইমাম তিরমিযী বলেছেন, এ হাদীসটি হাসান ও সহীহ।

আবূ দাঊদ-এর আর এক বর্ণনায় আবূ হুমায়দ-এর হাদীসে আছেঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকূ’ করলেন। দু’ হাত দিয়ে দু’ হাঁটু আঁকড়ে মজবুত করে ধরলেন। এ সময় তাঁর দু’ হাত ধনুকের মতো করে দু’ পাঁজর হতে পৃথক রাখলেন। আবূ হুমায়দ (রাঃ)আরও বলেন, এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করলেন। নাক ও কপাল মাটির সাথে ঠেকালেন। দু’ হাতকে পাঁজর হতে পৃথক রাখলেন। দু’ হাত কাঁধ সমান জমিনে রাখলেন। দু’ উরুকে রাখলেন পেট থেকে আলাদা করে। এভাবে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সিজদা্ করলেন। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বাম পা বিছিয়ে দিয়ে এর উপর বসলেন। ডান পায়ের সম্মুখ ভাগকে ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র দিকে ফিরিয়ে দিলেন। ডান হাতের তালু ডান উরুর উপর এবং বাম হাতের তালু বাম উরুর উপর রাখলেন এবং শাহাদাত অঙ্গুলি দিয়ে ইশারা করলেন। আবূ দাঊদ-এর আর এক বর্ণনায় আছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দুই রাক্’আতের পর বাম পায়ের পেটের উপর বসতেন। ডান পা রাখতেন খাড়া করে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) চতুর্থ রাক্’আতে বাম নিতম্বকে জমিনে ঠেকাতেন আর পা দু’টিকে একদিক দিয়ে বের করে দিতেন (ডান দিকে)।[2]

عَن أبي حميد السَّاعِدِيّ قَالَ فِي عشرَة مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَا أَعْلَمُكُمْ بِصَلَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالُوا فَاعْرِضْ. قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلَاة يرفع يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ ثُمَّ يُكَبِّرُ ثُمَّ يَقْرَأُ ثُمَّ يُكَبِّرُ وَيَرْفَعُ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ ثُمَّ يَرْكَعُ وَيَضَعُ رَاحَتَيْهِ عَلَى رُكْبَتَيْهِ ثُمَّ يَعْتَدِلُ فَلَا يُصَبِّي رَأْسَهُ وَلَا يُقْنِعُ ثُمَّ يَرْفَعُ رَأْسَهُ فَيَقُولُ: «سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ» ثُمَّ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ مُعْتَدِلًا ثُمَّ يَقُولُ: «اللَّهُ أَكْبَرُ» ثُمَّ يَهْوِي إِلَى الْأَرْضِ سَاجِدًا فَيُجَافِي يَدَيْهِ عَن جَنْبَيْهِ وَيفتح أَصَابِعَ رِجْلَيْهِ ثُمَّ يَرْفَعُ رَأْسَهُ وَيُثْنِي رِجْلَهُ الْيُسْرَى فَيَقْعُدُ عَلَيْهَا ثُمَّ يَعْتَدِلُ حَتَّى يَرْجِعَ كل عظم إِلَى مَوْضِعِهِ مُعْتَدِلًا ثُمَّ يَسْجُدُ ثُمَّ يَقُولُ: «اللَّهُ أَكْبَرُ» وَيَرْفَعُ وَيَثْنِي رِجْلَهُ الْيُسْرَى فَيَقْعُدُ عَلَيْهَا ثُمَّ يَعْتَدِلُ حَتَّى يَرْجِعَ كُلُّ عَظْمٍ إِلَى مَوْضِعِهِ ثُمَّ يَنْهَضُ ثُمَّ يَصْنَعُ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ إِذَا قَامَ مِنَ الرَّكْعَتَيْنِ كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ كَمَا كَبَّرَ عِنْدَ افْتِتَاحِ الصَّلَاةِ ثُمَّ يَصْنَعُ ذَلِكَ فِي بَقِيَّةِ صَلَاتِهِ حَتَّى إِذَا كَانَتِ السَّجْدَةُ الَّتِي فِيهَا التَّسْلِيمُ أَخَّرَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَقَعَدَ مُتَوَرِّكًا عَلَى شِقِّهِ الْأَيْسَرِ ثُمَّ سَلَّمَ. قَالُوا: صَدَقْتَ هَكَذَا كَانَ يُصَلِّي. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد والدارمي وَرَوَى التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ مَعْنَاهُ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
وَفِي رِوَايَةٍ لِأَبِي دَاوُدَ مِنْ حَدِيثِ أَبِي حُمَيْدٍ: ثُمَّ رَكَعَ فَوَضَعَ يَدَيْهِ عَلَى رُكْبَتَيْهِ كَأَنَّهُ قَابِضٌ عَلَيْهِمَا وَوَتَّرَ يَدَيْهِ فَنَحَّاهُمَا عَنْ جَنْبَيْهِ وَقَالَ: ثُمَّ سَجَدَ فَأَمْكَنَ أَنْفَهُ وَجَبْهَتَهُ الْأَرْضَ وَنَحَّى يَدَيْهِ عَنْ جَنْبَيْهِ وَوَضَعَ كَفَّيْهِ حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ وَفَرَّجَ بَيْنَ فَخِذَيْهِ غَيْرَ حَامِلٍ بَطْنَهُ عَلَى شَيْءٍ مِنْ فَخِذَيْهِ حَتَّى فَرَغَ ثُمَّ جَلَسَ فَافْتَرَشَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَأَقْبَلَ بِصَدْرِ الْيُمْنَى عَلَى قِبْلَتِهِ وَوَضَعَ كَفَّهُ الْيُمْنَى عَلَى رُكْبَتِهِ الْيُمْنَى وَكَفَّهُ الْيُسْرَى عَلَى رُكْبَتِهِ الْيُسْرَى وَأَشَارَ بِأُصْبُعِهِ يَعْنِي السَّبَّابَةَ. وَفِي أُخْرَى لَهُ: وَإِذَا قَعَدَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ قَعَدَ عَلَى بَطْنِ قَدَمِهِ الْيُسْرَى وَنَصَبَ الْيُمْنَى وَإِذَا كَانَ فِي الرَّابِعَةِ أَفْضَى بِوَرِكِهِ الْيُسْرَى إِلَى الْأَرْضِ وَأَخْرَجَ قَدَمَيْهِ مِنْ نَاحِيَةٍ وَاحِدَة

عن ابي حميد الساعدي قال في عشرة من اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم: انا اعلمكم بصلاة رسول الله صلى الله عليه وسلم قالوا فاعرض. قال: كان النبي صلى الله عليه وسلم اذا قام الى الصلاة يرفع يديه حتى يحاذي بهما منكبيه ثم يكبر ثم يقرا ثم يكبر ويرفع يديه حتى يحاذي بهما منكبيه ثم يركع ويضع راحتيه على ركبتيه ثم يعتدل فلا يصبي راسه ولا يقنع ثم يرفع راسه فيقول: «سمع الله لمن حمده» ثم يرفع يديه حتى يحاذي بهما منكبيه معتدلا ثم يقول: «الله اكبر» ثم يهوي الى الارض ساجدا فيجافي يديه عن جنبيه ويفتح اصابع رجليه ثم يرفع راسه ويثني رجله اليسرى فيقعد عليها ثم يعتدل حتى يرجع كل عظم الى موضعه معتدلا ثم يسجد ثم يقول: «الله اكبر» ويرفع ويثني رجله اليسرى فيقعد عليها ثم يعتدل حتى يرجع كل عظم الى موضعه ثم ينهض ثم يصنع في الركعة الثانية مثل ذلك ثم اذا قام من الركعتين كبر ورفع يديه حتى يحاذي بهما منكبيه كما كبر عند افتتاح الصلاة ثم يصنع ذلك في بقية صلاته حتى اذا كانت السجدة التي فيها التسليم اخر رجله اليسرى وقعد متوركا على شقه الايسر ثم سلم. قالوا: صدقت هكذا كان يصلي. رواه ابو داود والدارمي وروى الترمذي وابن ماجه معناه وقال الترمذي: هذا حديث حسن صحيح وفي رواية لابي داود من حديث ابي حميد: ثم ركع فوضع يديه على ركبتيه كانه قابض عليهما ووتر يديه فنحاهما عن جنبيه وقال: ثم سجد فامكن انفه وجبهته الارض ونحى يديه عن جنبيه ووضع كفيه حذو منكبيه وفرج بين فخذيه غير حامل بطنه على شيء من فخذيه حتى فرغ ثم جلس فافترش رجله اليسرى واقبل بصدر اليمنى على قبلته ووضع كفه اليمنى على ركبته اليمنى وكفه اليسرى على ركبته اليسرى واشار باصبعه يعني السبابة. وفي اخرى له: واذا قعد في الركعتين قعد على بطن قدمه اليسرى ونصب اليمنى واذا كان في الرابعة افضى بوركه اليسرى الى الارض واخرج قدميه من ناحية واحدة

ব্যাখ্যা: এ হাদীস নির্দেশ করে যে, আবূ হুমায়দ (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের বিবরণ দিয়েছেন কথার মাধ্যমে এবং তার থেকে আর এক বর্ণনা আছে, সেখানে তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের বিবরণ দিয়েছেন কর্মের মাধ্যমে। ‘আল্লামা হাফিয (রহঃ) বলেন, এ দু’ রিওয়ায়াতের মাঝে এভাবে সমন্বয় করা সম্ভব যে, একবার সালাতের বিবরণ আসছে কথায় আর একবার সালাতের বিবরণ আসছে কাজের মাধ্যমে যা আরো সুস্পষ্ট।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৮০২-[১৩] ওয়ায়িল ইবনু হূজর (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার জন্য দাঁড়াবার সময় দেখেছেন। তিনি তাঁর দু’ হাত কাঁধ বরাবর উপরে উঠালেন। দু’ হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি দু’টি কান পর্যন্ত উঠিয়ে ’আল্লা-হু আকবার’ বললেন।[1] আবূ দাঊদ-এর আর এক বর্ণনায আছে, বৃদ্ধাঙ্গুলকে কানের লতি পর্যন্ত উঠালেন।[2]

وَعَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ: أَنَّهُ أَبْصَرَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ قَامَ إِلَى الصَّلَاةِ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى كَانَتَا بِحِيَالِ مَنْكِبَيْهِ وحاذى بإبهاميه أُذُنَيْهِ ثُمَّ كَبَّرَ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ. وَفِي رِوَايَةٍ لَهُ: يَرْفَعُ إِبْهَامَيْهِ إِلَى شَحْمَةِ أُذُنَيْهِ

وعن واىل بن حجر: انه ابصر النبي صلى الله عليه وسلم حين قام الى الصلاة رفع يديه حتى كانتا بحيال منكبيه وحاذى بابهاميه اذنيه ثم كبر. رواه ابو داود. وفي رواية له: يرفع ابهاميه الى شحمة اذنيه

ব্যাখ্যা: নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের ইচ্ছা করে দাঁড়াতেন তখন তাঁর দু’ হাত কাঁধ বরাবর উপরে উঠাতেন। তার দু’ বৃদ্ধাঙ্গুল কান বরাবর করতেন।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৮০৩-[১৪] ক্ববীসাহ্ ইবনু হুলব (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইমামতি করতেন। তিনি (দাঁড়ানো অবস্থায়) বাম হাতকে ডান হাত দিয়ে ধরতেন। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ্)[1]

وَعَنْ قَبِيصَةَ بْنِ هُلْبٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَؤُمُّنَا فَيَأْخُذُ شِمَالَهُ بِيَمِينِهِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَه

وعن قبيصة بن هلب عن ابيه قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يومنا فياخذ شماله بيمينه. رواه الترمذي وابن ماجه

ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’ হাতকে তার সিনার উপর রাখতেন। রিওয়ায়াতে আছে, আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখেছি তিনি দু’হাতকে সিনার উপর রাখতেন।

ইবনু হুলব (রাঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখলাম তিনি তাঁর হাতকে তাঁর সিনার উপর রাখলেন এবং বাম হাতকে ডান হাত দ্বারা ধরলেন।

তাউস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিজ ডান হাত বাম হাতের উপর রাখলেন। তারপর সিনার উপর উভয় হাত বাঁধলেন এমতাবস্থায় যে, তখন তিনি সালাতরত। এ হাদীস সকলের নিকট দলীল স্বরূপ।

মোটকথা হাত রাখা সুন্নাত। হাত ছাড়া সুন্নাত নয়। রাখার স্থান প্রমাণিত সিনা হলো। অন্য স্থানে রাখার কোন বিধান নেই। যারা দাবী করে এক হাতের তালু অন্য হাতের তালুর উপর সালাতের মধ্যে নাভীর নিচে বাঁধবে। এটা সর্বসম্মতভাবে য‘ঈফ হাদীস।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৮০৪-[১৫] রিফা’আহ্ ইবনু রাফি’ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি মসজিদে এসে সালাত আদায় করলেন। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তাঁকে সালাম জানালেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, তুমি আবার সালাত আদায় কর। তোমার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হয়নি। লোকটি বলল, হে আল্লাহর রসূল! কিভাবে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবো তা আমাকে শিখিয়ে দিন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)মুখী হয়ে প্রথমে তাকবীর বলবে। তারপর সূরাহ্ ফাতিহা পাঠ করবে। এর সাথে আর যা পারো (কুরআন থেকে) পড়ে নিবে। তারপর রুকূ’ করবে। (রুকূ’তে) তোমার দু’ হাতের তালু তোমার দু’ হাঁটুর উপর রাখবে। রুকূ’তে প্রশান্তিতে থাকবে এবং পিঠ সটান সোজা রাখবে। রুকূ’ হতে উঠে পিঠ সোজা করে মাথা তুলে দাঁড়াবে যাতে হাড়গুলো নিজ নিজ জায়গায় এসে যায়। তারপর সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করবে। সাজদায় প্রশান্তির সাথে থাকবে।[1]

(হাদীসের মূল পাঠ মাসাবীহ থেকে গৃহীত। এ হাদীসটি আবূ দাঊদ সামান্য শাব্দিক পার্থক্যসহ বর্ণনা করেছেন। তিরমিযী, নাসায়ীও প্রায় অনুরূপ বর্ণনা করেছেন)। তিরমিযীর বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সালাতের জন্য দাঁড়াতে ইচ্ছা করলে আল্লাহ যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করবে। এরপর কালিমাহ্ শাহাদাত পাঠ করবে। ’ইক্বামাত(ইকামত/একামত) বলবে (সালাত শুরু করবে)। তোমার কুরআন জানা থাকলে তা পড়বে, অন্যথায় আল্লাহর ’হামদ’, তাকবীর, তাহলীল করবে। তারপর রুকূ করবে।[2]

وَعَن رِفَاعَة بن رَافع قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ فَصَلَّى فِي الْمَسْجِدِ ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعِدْ صَلَاتَكَ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ» . فَقَالَ: عَلِّمْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ أُصَلِّي؟ قَالَ: «إِذَا تَوَجَّهَتْ إِلَى الْقِبْلَةِ فَكَبِّرْ ثُمَّ اقْرَأْ بِأُمِّ الْقُرْآنِ وَمَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ تَقْرَأَ فَإِذَا رَكَعَتْ فَاجْعَلْ رَاحَتَيْكَ عَلَى رُكْبَتَيْكَ وَمَكِّنْ رُكُوعَكَ وَامْدُدْ ظَهْرَكَ فَإِذَا رَفَعْتَ فَأَقِمْ صُلْبَكَ وَارْفَعْ رَأْسَكَ حَتَّى تَرْجِعَ الْعِظَامُ إِلَى مَفَاصِلِهَا فَإِذَا سَجَدْتَ فَمَكِّنِ السُّجُودَ فَإِذَا رَفَعْتَ فَاجْلِسْ عَلَى فَخِذِكَ الْيُسْرَى ثُمَّ اصْنَعْ ذَلِكَ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ وَسَجْدَةٍ حَتَّى تَطْمَئِنَّ. هَذَا لَفَظُ» الْمَصَابِيحِ . وَرَوَاهُ أَبُو دَاوُدُ مَعَ تَغْيِيرٍ يَسِيرٍ وَرَوَى التِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ مَعْنَاهُ. وَفِي رِوَايَةٍ لِلتِّرْمِذِيِّ قَالَ: «إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلَاةِ فَتَوَضَّأْ كَمَا أَمَرَكَ اللَّهُ بِهِ ثُمَّ تَشَهَّدْ فَأَقِمْ فَإِنْ كَانَ مَعَكَ قُرْآنٌ فَاقْرَأْ وَإِلَّا فَاحْمَدِ اللَّهَ وَكَبِّرْهُ وَهَلله ثمَّ اركع»

وعن رفاعة بن رافع قال: جاء رجل فصلى في المسجد ثم جاء فسلم على النبي صلى الله عليه وسلم فقال النبي صلى الله عليه وسلم: «اعد صلاتك فانك لم تصل» . فقال: علمني يا رسول الله كيف اصلي؟ قال: «اذا توجهت الى القبلة فكبر ثم اقرا بام القران وما شاء الله ان تقرا فاذا ركعت فاجعل راحتيك على ركبتيك ومكن ركوعك وامدد ظهرك فاذا رفعت فاقم صلبك وارفع راسك حتى ترجع العظام الى مفاصلها فاذا سجدت فمكن السجود فاذا رفعت فاجلس على فخذك اليسرى ثم اصنع ذلك في كل ركعة وسجدة حتى تطمىن. هذا لفظ» المصابيح . ورواه ابو داود مع تغيير يسير وروى الترمذي والنساىي معناه. وفي رواية للترمذي قال: «اذا قمت الى الصلاة فتوضا كما امرك الله به ثم تشهد فاقم فان كان معك قران فاقرا والا فاحمد الله وكبره وهلله ثم اركع»

ব্যাখ্যা: এ লোক সংক্ষিপ্ত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছেন যে সালাতে রুকূ‘ সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) পরিপূর্ণ করা হয়নি।

এ হাদীস সুস্পষ্ট প্রমাণ করে যে, রুকূ' সাজদায় সোজা হয়ে দাঁড়ানো, বসা ফরয। কেননা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আদেশ পুনরায় সালাত আদায়ের। তিনি আর কিছু বলেননি। এটা শর্তহীন নির্দেশ। আর শর্তহীন নির্দেশ ফরয সাব্যস্ত করে। কেননা পুনরায় সালাত আদায় প্রয়োজন হয় সালাত ফাসিদ হওয়ার কারণে।

তোমাকে কুরআন থেকে সূরাহ্ আল ফাতিহাহ্ বাদে আল্লাহ তা‘আলা দান করছেন তা পড়ো যা এ হাদীসে প্রমাণ রয়েছে যে, সূরাহ্ আল ফাতিহাহ্ ছাড়া যা কিছু বাড়তি ক্বিরাআত (কিরআত) পড়া আবশ্যক।

যা তোমার কাছে সহজ হয়। এ থেকে এই দলীল গ্রহণ করা যায় যে, ফাতিহাহ্ পড়ার পর কুরআন হতে আরো কিছু পড়তে হবে। সূরাহ্ ফাতিহাহ্ অবশ্যই পড়তে হবে। কারণ এটা ছাড়া সালাত হবে না।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৮০৫-[১৬] ফাযল ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নফল দু’ রাক্’আত। প্রত্যেক দু’ রাক্’আতেই ’তাশাহুদ’ ভয়ভীতি ও বিনয় এবং দীনহীনতার ভাব আছে। তারপর তুমি তোমার দু’ হাত উঠাবে। ফাযল বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’’তুমি তোমার দু’ হাত তোমার রবের নিকট দু’আর জন্য উঠাতে হাতের বুকের দিককে তোমার মুখের দিকে ফিরাবে। আর বারবার বলবে, হে আল্লাহ! অর্থাৎ- দু’আ বার বার করবে। আর যে এভাবে করবে না তার সালাত এরূপ এরূপ। আর এক বর্ণনায় আছে, তার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) অসম্পূর্ণ। (তিরমিযী)[1]

وَعَنِ الْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الصَّلَاةُ مَثْنَى مثنى تشهد فِي كل رَكْعَتَيْنِ وَتَخَشُّعٌ وَتَضَرُّعٌ وَتَمَسْكُنٌ ثُمَّ تُقْنِعُ يَدَيْكَ يَقُول ك تَرْفَعُهُمَا إِلَى رَبِّكَ مُسْتَقْبِلًا بِبُطُونِهِمَا وَجْهَكَ وَتَقُولُ يَا رَبِّ يَا رَبِّ وَمَنْ لَمْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَهُوَ كَذَا وَكَذَا» . وَفِي رِوَايَةٍ: «فَهُوَ خداج» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن الفضل بن عباس قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «الصلاة مثنى مثنى تشهد في كل ركعتين وتخشع وتضرع وتمسكن ثم تقنع يديك يقول ك ترفعهما الى ربك مستقبلا ببطونهما وجهك وتقول يا رب يا رب ومن لم يفعل ذلك فهو كذا وكذا» . وفي رواية: «فهو خداج» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: প্রতি দু’ রাক্‘আতের পর তাশাহুদ পড়বে। প্রতি দু’ রাক্‘আতে একটি তাশাহুদ আছে। দু’ রাক্‘আতে সালাম ফেরাতে হবে। এখানে উত্তমের আলোচনা হয়েছে। নফল সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) রাতের বেলায় দু’ রাক্‘আত করে আদায় উত্তম। কেননা এ ব্যাপারে হাদীসে বর্ণনা রয়েছে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৫ পর্যন্ত, সর্বমোট ৫ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে