কুরআন ও হাদীছের মানদন্ডে সুফীবাদ সূফীবাদ আব্দুল্লাহ্ শাহেদ আল-মাদানী
কারামাতে আওলীয়ার ক্ষেত্রে সুফীদের বাড়াবাড়িঃ

কারামতে আওলীয়ার ব্যাপারে আহ্লুস্ সুন্নাতের বিশ্বাস হচ্ছে আউলীয়াদের কারামত এবং আল্লাহ তা’আলা তাদের হাতে অলৌকিক ও সাধারণ অভ্যাসের বিপরীত যে সমস্ত ঘটনা প্রকাশ করে থাকেন আমরা তাতে বিশ্বাস করি। তবে অলী হওয়ার জন্য কারামত প্রকাশিত হওয়া জরুরী নয়। আওলীয়াদের কারামত সত্য। আল্লাহ তাআলা তাদের হাতে অলৌকিক ও সাধারণ নিয়মের বিপরীত এমন ঘটনা প্রকাশ করে থাকেন যাতে তাদের কোন হাত নেই। তবে কারামত চ্যালেঞ্জ আকারে প্রকাশিত হয় না; বরং আল্লাহই তাদের হাতে কারামত প্রকাশ করেন। এমনকি অলীগণ তা জানতেও পারেন না। পূর্ববর্তী যুগের অনেক সৎ লোক, সাহাবী, তাবেয়ী এবং পরবর্তী যুগের অনেক সৎ লোকের হাতে আল্লাহ্ কারামত প্রকাশ করেছেন। যেমন মারইয়াম (আঃ), আসহাবে কাহাফ, জুরাইজ, আব্বাদ বিন বিশর, উমার বিন খাত্তাব, উসায়েদ ইবনে হুযায়ের এমনি আরও অনেক সাহাবীর হাতে আল্লাহ তাআলা কারামত প্রকাশ করেছেন। যারা কুরআন ও হাদীছের অনুসরণ করেন, তাদের হাতেই কারামত প্রকাশ হতে পারে। যে ব্যক্তি কুরআন ও হাদীছের অনুসরণ করে না, তার হাতে যদি সাধারণ অভ্যাসের বিপরীতে কোন কিছু বের হয়, যেমন আগুনে প্রবেশ করা, শুণ্যে উড়াল দেয়া, সাগরের উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া ইত্যাদি তাহলে বুঝতে হবে যে এগুলো ধান্দাবাজি, শয়তানি ও ভন্ডামী। তা কখনও কারামত হতে পারে না। কারামত ও ভন্ডামীর মধ্যে পার্থক্য করার জন্য কুরআন ও হাদীছ হচ্ছে একমাত্র মাপকাঠি।

সুফীরা তাদের জীবিত ও মৃত কল্পিত পীর ও অলীদের মর্যাদা বাড়ানোর জন্য তাদের কারামত বর্ণনায় মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করে থাকে। এখানে বিশেষভাবে স্মরণ রাখা দরকার যে, যে সমস্ত কাজ আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ করার ক্ষমতা রাখে না কিংবা যেগুলো আল্লাহর সিফাত, তা কখনও অলীদের কারামত হতে পারে না। যেমন মৃতকে জীবিত করা, অলীদের আদেশে নদ-নদী ও আসমান-যমিনের কাজ পরিচালিত হওয়া ইলমে গায়েবের দাবী করা ইত্যাদি। আমরা সুফীদের ধারণায় অলীদের কয়েকটি বানোয়াট কারামতের উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কার করার চেষ্টা করবো।