লা-তাহযান [হতাশ হবেন না] লা-তাহযান - অনুচ্ছেদ সূচি ড. আয়িদ আল করনী
১৪৮. সুখের উপাদান

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি মনের শান্তিতে, সুস্থ দেহে দিবসের পূর্ণ খোরাক নিয়ে রাত কাটাল তাকে যেন গোটা দুনিয়াটা দেয়া হলো।” এ হাদীসটি ইমাম তিরমিয়ী বর্ণনা করেছেন।

এর অর্থ এই যে, কারো যদি যথেষ্ট খাবার থাকে ও নিরাপদে ঘুমানোর জায়গা থাকে তবে তার পৃথিবীর সর্বোত্তম জিনিস আছে। অনেকেই জীবনে এ পর্যায়ে আছে তবুও তারা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তার রাসূলকে বলেন- “আমি আপনার উপর আমার নেয়ামতকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি।” (৫-সূরা ময়িদাঃ আয়াত-৩)

এ আয়াত পড়ার পর আপনার উচিত নিজেকে এ প্রশ্ন করা- নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য কি নেয়ামত পূর্ণ করে দেয়া হয়েছিল? এটা কি দী পার্থিব সম্পদ ছিল? এটা কি দালান-কোঠা-অট্টালিকা ও সোনা-রূপার মালিকানা ছিল?

আল্লাহ যে নেয়ামতের কথা বলছেন তা এসব নয়; কেননা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধনী ছিলেন না।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাটির তৈরি ঘরে ঘুমাতেন। তার ঘরের ছাদ বা চাল খেজুরের ডাল দিয়ে তৈরি ছিল। প্রচণ্ড ক্ষুধার জ্বালায় তিনি মাঝে মাঝে পেটে পাথর বেধে রাখতেন আর এতে ক্ষুধার জ্বালা কিছুটা কমত। তার মাদুর ছিল খেজুর গাছের ডাল যাতে তিনি শয়নকালে তার পার্শ্বদেশে ব্যাথা পেতেন। তিনি তার বর্মখানিকে একটি ইহুদীর নিকট টাকা পরিশোধ করার আগ পর্যন্ত বন্ধক রেখে কিছু গম ক্রয় করেছিলেন। মাঝে মাঝে তিনি একটানা তিনদিন পর্যন্ত একটি পচা খেজুরও খেতে পেতেন না।

“এবং অবশ্যই পরকাল আপনার জন্য দুনিয়ার চেয়ে উত্তম। আর অচিরেই আপনার প্রতিপালক অবশ্যই আপনাকে এমন দান করবেন যার ফলে আপনি সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন।” (৯৩-সূরা আদ দোহাঃ আয়াত-৪-৫)