ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
আবু বকর ও উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমার জীবনের কিছু ঘটনা উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর জীবনের কিছু ঘটনা ইসলামহাউজ.কম
ভূমিকা

“হে আল্লাহ! তুমি দুই উমর, উমর ইবনুল খাত্তাব অথবা আমর ইবন হিশাম এই দুজনের একজন দ্বারা ইসলামকে শক্তিশালী কর।”

ইসলামের চরম শত্রু উমর ইবনুল খাত্তাব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উদ্দেশ্যে কা‘বায় গেলেন। তার সামনেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা হাজ্জ তিলাওয়াত করছিলেন, উমর ছিলেন তাঁর পিছনেই। কুরআনের অপূর্ব ভাষা ও অলৌকিকতা তাঁকে মোহাচ্ছন্ন করল। তিনি মনে মনে ভাবলেন, কুরাইশরা যে এঁকে কবি বলেছে, তা তো ঠিকই।

তখনই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করলেন: ‘‘নিশ্চয়ই এই কুরআন এক সম্মানিত রাসূলের বাহিত বার্তা। এটা কোনো কবির রচনা নয়, তোমরা অল্পই বিশ্বাস করে থাকে।”

তখন তাঁর মনে হলো যে কবি না হলেও নিশ্চয়ই ইনি জাদুকর। তখনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করলেন: ‘‘এটা কোন জাদুকর বা গণকের কথাও না, এটা জগতসমূহের প্রতিালকের নিকট হতে অবতীর্ণ।”

এভাবে ইসলাম উমরের অন্তরে গভীরভাবে গেঁথে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তাঁর জন্য দো‘আ করেছিলেন। তারপর উমর ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর ইসলাম গ্রহণ তখনকার মুষ্টিমেয় মুসলিম সমাজে সাহস ও উৎসাহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

দৃঢ়তা ও সাহসই শুধু তাঁর চরিত্রের বৈশিষ্ট্য ছিল তা নয়। তিনি তাঁর বিজ্ঞতা, সুবিচার ও আল্লাহভীরুতার জন্যও সুপরিচিত ছিলেন। ইসলামের ইতিহাসের অনেক বড় বড় কাজ তাঁর পরামর্শে সম্পন্ন হয়েছে। তাঁর জীবন ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনেরই অংশবিশেষ। সকল পরামর্শ, সকল যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন। বড় বড় সবকিছুতেই তিনি রাসূলের সাথে ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে খলিফা নির্বাচিত করার ব্যাপারে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। আবু বকরের খিলাফতের সময়ও তিনি ছিলেন তাঁর পরামর্শদাতা এবং সাহায্যকারী। কুরআন সংকলনের ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে তিনি আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে রাজী করান।

পরবর্তীতে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে খলিফা নির্বাচিত করে যান। তিনি তাঁর খিলাফতকালে বহু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। নিয়মিত চিঠি-পত্র, খবরাখবর আদান-প্রদান, সৈনিকদের তালিকাভুক্ত করণ-ইত্যাদি।

নানা ভাবেই তাঁর খিলাফত ছিল দৃষ্টান্তস্বরূপ। কারণ এতে ছিল ইসলামের শিক্ষার কঠোর অনুসরণ, দয়ার সাথে দৃঢ়তার মিশ্রণ, কঠোরতার সাথে সুবিচারের সমতাবিধান এবং মানুষের প্রতি দায়িত্বশীলতা। তাঁর সময়ে বিরাট এক এলাকা মুসলিম সাম্রাজ্যের অধীনে এসেছিল। ১০ বছরের কিছু বেশি সময় তিনি এই সাম্রাজ্যের খলিফা ছিলেন।