গায়ের মাহরাম মহিলার সাথে নির্জনে অবস্থান

মানুষের মধ্যে ফিতনা ও অশান্তি সৃষ্টি করতে শয়তান সদা তৎপর। কি করে তাদের দ্বারা হারাম কাজ করানো যায় এ চিন্তা তার অহর্নিশ। তাই আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সতর্ক করতে গিয়ে বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَتَّبِعُواْ خُطُوَٰتِ ٱلشَّيۡطَٰنِۚ وَمَن يَتَّبِعۡ خُطُوَٰتِ ٱلشَّيۡطَٰنِ فَإِنَّهُۥ يَأۡمُرُ بِٱلۡفَحۡشَآءِ وَٱلۡمُنكَرِۚ ﴾ [النور: ٢١]

‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না। যে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাকে তো সে অশ্লীল ও অন্যায় কাজেরই হুকুম দেয়”। [সূরা আন-নূর, আয়াত: ২১]

শয়তান মানুষের শিরা-উপশিরায় চলাচল করে।[1] কোনো গায়ের মাহরাম মহিলার সাথে একাকী অবস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে অশ্লীল কাজে লিপ্ত করা শয়তানেরই একটি চক্রান্ত। এজন্যই শরী‘আত উক্ত রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ إِلَّا كَانَ ثَالِثَهُمَا الشَّيْطَانُ»

“কোনো পুরুষ একজন মহিলার সাথে নির্জনের মিলিত হলে তাদের তৃতীয় সঙ্গী হয় শয়তান”।[2]

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«لَا يَدْخُلَنَّ رَجُلٌ، بَعْدَ يَوْمِي هَذَا، عَلَى مُغِيبَةٍ، إِلَّا وَمَعَهُ رَجُلٌ أَوِ اثْنَانِ»

“আমার আজকের এ দিন থেকে কোনো পুরুষ একজন কিংবা দু’জন পুরুষকে সঙ্গে করে ব্যতীত কোনো স্বামী থেকে দূরে থাকা মহিলার সাথে নির্জনে দেখা করতে পারবে না”।[3]

সুতরাং ঘর হোক কিংবা স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়েই হোক, আর বাড়ীর কক্ষেই হোক, কিংবা মোটর গাড়ীতেই হোক, কোথাও কোনো পুরুষ লোক বিবাহ বৈধ এমন কোনো মহিলার সাথে একাকী থাকতে পারবে না। নিজের ভাবী, পরিচারিকা, রুগিনী ইত্যাকার কারও সাথেই নির্জনবাস বৈধ নয়।অনেক মানুষ আছে যারা আত্মবিশ্বাসের বলে হোক কিংবা দ্বিতীয় পক্ষের ওপর নির্ভর করেই হোক উপরোক্ত মহিলাদের সাথে একাকী অবস্থানে খুবই উদার মনোভাব পোষণ করে। তারা এভাবে মেলামেশাকে খারাপ কিছুই মনে করে না। অথচ এরই মধ্য দিয়ে ব্যভিচারের সূত্রপাত হয়, সমাজ দেহ কলুষিত হয় এবং সমাজে অবৈধ সন্তানদের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়।

>
[1] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২১৭৫।

[2] তিরমিযী; মিশকাত, হাদীস নং ৩১১৮।

[3] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২১৭৩।