প্রশ্ন: যখন তোমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, সুপারিশের প্রকারগুলো কী কী?

উত্তর: বল, শাফা‘আত তিন প্রকার:

১) সু-সাব্যস্ত ও গ্রহণযোগ্য শাফা‘আত যা কেবল আল্লাহর কাছেই চাওয়া হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

قُل لِّلَّهِ ٱلشَّفَٰعَةُ جَمِيعٗاۖ [الزمر: ٤٣]

“বল, সকল সুপারিশ আল্লাহর জন্যই”। [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৪৪] এ সুপারিশ হচ্ছে জাহান্নামের আগুন থেকে নিরাপত্তা ও জান্নাতের নি‘আমত লাভ করে সফল হওয়ার প্রার্থনা। এর জন্য রয়েছে দু’টি শর্ত:

ক) সুপারিশ-কারীর জন্যে সুপারিশ করার অনুমতি থাকা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, مَن ذَا ٱلَّذِي يَشۡفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذۡنِهِۦۚ [البقرة: ٢٥٥] “কে আছে যে তার নিকট তাঁর অনুমতি ছাড়া সুপারিশ করবে?” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২৫৫]

খ) সুপারিশকৃত (যার জন্য সুপারিশ করা হবে) ব্যক্তির প্রতি সন্তুষ্টি থাকা। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَلَا يَشۡفَعُونَ إِلَّا لِمَنِ ٱرۡتَضَىٰ [الانبياء: ٢٨] “আর তারা সুপারিশ করবে না, তবে যার জন্যে তিনি সন্তুষ্ট হবেন”। [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ২৮] আল্লাহ তা‘আলা এ দু’টি শর্তকে তার বাণীতে একত্র করে বলেন, وَكَم مِّن مَّلَكٖ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ لَا تُغۡنِي شَفَٰعَتُهُمۡ شَيۡ‍ًٔا إِلَّا مِنۢ بَعۡدِ أَن يَأۡذَنَ ٱللَّهُ لِمَن يَشَآءُ وَيَرۡضَىٰٓ [النجم : ٢٦] “আর আসমানসমূহে অনেক ফিরিশতা আছে, যাদের সুপারিশ কোন উপকারে আসবে না, তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন এবং যার প্রতি তিনি সন্তুষ্ট, তার ব্যাপারে অনুমতি দেওয়ার পর”। [সূরা আন-নাজম, আয়াত: ২৬] অতএব যে শাফা‘আত দ্বারা উপকৃত হতে চায় সে যেন আল্লাহর নিকট তা প্রার্থনা করে। তিনিই তার মালিক এবং তার অনুমতি প্রদানকারী। তিনি ব্যতীত কারো নিকট এটি প্রার্থনা করা যায় না। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যখন তুমি প্রার্থনা করবে আল্লাহর কাছেই করবে”। (তিরমিযী) অতএব তুমি বল, হে আল্লাহ! আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করো, যাদের জন্য কিয়ামতের দিন তোমার নবী সুপারিশ করবেন।

২) অগ্রহণযোগ্য সুপারিশ; যে বিষয়ে আল্লাহ ছাড়া আর কেউ ক্ষমতা রাখে না তা গাইরুল্লাহ এর কাছে চাওয়া হয়। এটি শির্কী সুপারিশ।

৩) মাখলুকের পারস্পরিক দুনিয়াবী সুপারিশ: এটি হচ্ছে দুনিয়াতে জীবিত মাখলুকের একে অপরের জন্যে ঐসব বিষয়ে সুপারিশ করা, যে ব্যাপারে তারা সক্ষম। দুনিয়াবী প্রয়োজনে এটির জন্য একে অপরের মুখাপেক্ষী হয়। এটি যদি কল্যাণের ক্ষেত্রে হয় তাহলে মুস্তাহাব। আর যদি মন্দের ক্ষেত্রে হয় তাহলে হারাম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, مَّن يَشۡفَعۡ شَفَٰعَةً حَسَنَةٗ يَكُن لَّهُۥ نَصِيبٞ مِّنۡهَاۖ وَمَن يَشۡفَعۡ شَفَٰعَةٗ سَيِّئَةٗ يَكُن لَّهُۥ كِفۡلٞ مِّنۡهَاۗ [النساء : ٨٥] “যে ভাল সুপারিশ করবে, তার জন্য এ থেকে একটি অংশ থাকবে এবং যে মন্দ সুপারিশ করবে তার জন্যেও তা থেকে একটি অংশ”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৮৫]