প্রশ্ন: যখন তোমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, তাওহীদের প্রকারগুলো কী কী?

উত্তর: বল, তাওহীদ তিন প্রকার:

১) তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ: আর তা হলো, এ দৃঢ় বিশ্বাস করা যে, আল্লাহই সৃষ্টিকর্তা, রিজিক দাতা, সমস্ত মাখলুকের ব্যব্যস্থাপক, তাঁর কোনো শরীক ও সাহায্যকারী নেই। এটি হলো, আল্লাহকে স্বীয় কর্মসমূহে এক বলে বিশ্বাস করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

هَلۡ مِنۡ خَٰلِقٍ غَيۡرُ ٱللَّهِ يَرۡزُقُكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِۚ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ [فاطر: ٣]

“আল্লাহ ছাড়া আর কোনো স্রষ্টা আছে কি, যে তোমাদেরকে আসমান ও যমীন থেকে রিজিক দিবে? তিনি ছাড়া আর কোনো সত্য ইলাহ নেই”। [সূরা ফাতির, আয়াত: ৩] তিনি আরো বলেন,

إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلرَّزَّاقُ ذُو ٱلۡقُوَّةِ ٱلۡمَتِينُ [الذاريات: ٥٨]

“নিশ্চয় আল্লাহ রিযিকদাতা, তিনি শক্তিধর, পরাক্রমশালী”। [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৮] তিনি আরো বলেন,

يُدَبِّرُ ٱلۡأَمۡرَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ إِلَى ٱلۡأَرۡضِ [السجدة : ٥]

“তিনি আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত সকল কার্য পরিচালনা করেন”। [সূরা আস-সাজদাহ, আয়াত: ৫] তিনি আরো বলেন,

أَلَا لَهُ ٱلۡخَلۡقُ وَٱلۡأَمۡرُۗ تَبَارَكَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلۡعَٰلَمِينَ [الاعراف: ٥٣]

“জেনে রাখ, সৃষ্টি ও নির্দেশ তাঁরই। আল্লাহ মহান, যিনি সকল সৃষ্টির রব”। [সূরা আরাফ, আয়াত: ৫৪]
 

২) তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ: ইবাদতে আল্লাহকে এক জানা। তিনি একক, তার কোন শরীক নেই। এটিই হচ্ছে বান্দার ইবাদতগত কর্মগুলোর মাধ্যমে আল্লাহকে একক করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَآءَ وَيُقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤۡتُواْ ٱلزَّكَوٰةَۚ وَذَٰلِكَ دِينُ ٱلۡقَيِّمَةِ [البينة: ٥]

“আর তাদেরকে কেবল এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, তারা যেন আল্লাহর ইবাদত করে তার জন্য দীনকে (ইবাদতকে) একনিষ্ঠ করে”। [সূরা আল-বায়্যিনাহ: ৫] তিনি আরো বলেন,

وَمَآ أَرۡسَلۡنَا مِن قَبۡلِكَ مِن رَّسُولٍ إِلَّا نُوحِيٓ إِلَيۡهِ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّآ أَنَا۠ فَٱعۡبُدُونِ [الانبياء: ٢٥]

“আর তোমার পূর্বে এমন কোনো রাসূল আমি পাঠাইনি, যার প্রতি আমি এই ওহী নাযিল করিনি যে, আমি ছাড়া আর কোনো সত্য ইলাহ নেই। সুতরাং তোমরা আমার ইবাদত করো”। [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ২৫] তাওহীদের এ প্রকারভেদ কেবল একটি ইলমী (জ্ঞানগত) বিশ্লেষণ মাত্র। অন্যথায় এগুলো কুরআন ও সুন্নাহর অনুসারী তাওহীদপন্থীর আকীদাহ-বিশ্বাসে একটির সাথে অপরটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

৩) তাওহীদুল আসমা ওয়াস-সিফাত: কুরআন ও হাদীসে আল্লাহ তা‘আলার যেসব অতি সুন্দর নাম ও পূর্ণতার গুণাবলী রয়েছে, কোন প্রকার ধরণ, উদাহরণ বর্ণনা করা এবং বিকৃতি ও অকার্যকর করা ছাড়াই তাতে দৃঢ় বিশ্বাস করাকে তাওহীদুল আসমা ওয়াস্ সিফাত বলা হয়। তাঁর সদৃশ কোনো কিছুই নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ [الشورى: ١١]

“তাঁর সদৃশ কোনো জিনিস নেই, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা”। [সূরা আশ-শুরা, আয়াত: ১১] তিনি আরো বলেন,

وَلِلَّهِ ٱلۡأَسۡمَآءُ ٱلۡحُسۡنَىٰ فَٱدۡعُوهُ بِهَاۖ [الاعراف: ١٧٩]

“আল্লাহর অনেক অতি সুন্দর নাম রয়েছে, অতএব সেগুলো দ্বারা তাঁকে ডাকো”। [সূরা আরাফ, আয়াত: ১৮০]