প্রশ্ন: যখন তোমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, দু‘আ কি ইবাদত?

উত্তর: বল, অবশ্যই দু‘আ গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাতসমূহের একটি অন্যতম ইবাদত। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ٱدۡعُونِيٓ أَسۡتَجِبۡ لَكُمۡۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَسۡتَكۡبِرُونَ عَنۡ عِبَادَتِي سَيَدۡخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ ٦٠﴾ [غافر: ٦٠]

“আর তোমাদের রব বলেছেন, তোমরা আমাকে ডাকো। আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকার বশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ হয়, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে”। [সূরা গাফির, আয়াত: ৬০]

হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “দু‘আই ইবাদত”। হাদীসটি তিরমিযী বর্ণনা করেছেন। দীনের মধ্যে দু‘আর গুরুত্ব ও মর্যাদার জন্যই কুরআনে তিন-শতাধিক আয়াত এ সম্পর্কে এসেছে। দু‘আ দুই প্রকার: ইবাদতের দু‘আ ও চাওয়ার দু‘আ। একটি অপরটির জন্য অত্যাবশ্যকীয়।

ইবাদতের দু‘আ: উদ্দেশ্য হাসিল করা বা বিপদ প্রতিহত করা বা মুসিবত দূর করার জন্য ইখলাসের সাথে একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা দ্বারা আল্লাহর দিকে অগ্রসর হওয়া। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَذَا ٱلنُّونِ إِذ ذَّهَبَ مُغَٰضِبٗا فَظَنَّ أَن لَّن نَّقۡدِرَ عَلَيۡهِ فَنَادَىٰ فِي ٱلظُّلُمَٰتِ أَن لَّآ إِلَٰهَ إِلَّآ أَنتَ سُبۡحَٰنَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ ٱلظَّٰلِمِينَ ٨٧ فَٱسۡتَجَبۡنَا لَهُۥ وَنَجَّيۡنَٰهُ مِنَ ٱلۡغَمِّۚ وَكَذَٰلِكَ نُ‍ۨجِي ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٨٨﴾ [الانبياء: ٨٧، ٨٨]

“আর স্মরণ কর মাছ ওয়ালার কথা। যখন সে রাগান্বিত অবস্থায় চলে গিয়েছিল এবং মনে করেছিল যে, আমি তার ওপর ক্ষমতা প্রয়োগ করব না। তারপর সে অন্ধকার থেকে ডেকে বলেছিল, আপনি ছাড়া আর কোনো সত্য ইলাহ নেই। আপনি পবিত্র মহান। নিশ্চয় আমি ছিলাম যালিম। অতঃপর আমি তার ডাকে সাড়া দিলাম এবং দুশ্চিন্তা থেকে তাকে উদ্ধার করেছিলাম। আর এভাবেই আমি মুমিনদেরকে উদ্ধার করি”। [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৮৭-৮৮]

চাওয়ার দু‘আ: অর্থাৎ দু‘আকারীকে যে জিনিষ উপকার পৌঁছাবে; যেমন কোনো কল্যাণ অর্জন অথবা কোনো অকল্যাণ দূর করার প্রার্থনা করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَآ إِنَّنَآ ءَامَنَّا فَٱغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ [ال عمران: ١٦] “যারা বলে, হে আমাদের রব! নিশ্চয় আমরা ঈমান এনেছি। অতএব আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন”। [সূরা আল-ইমরান, আয়াত: ১৬]

উভয় প্রকার দু‘আ ইবাদতের মূল ও নির্যাস। আর তা সবচেয়ে সহজ ইবাদত। আর সম্পাদন করা দিক থেকে সবচেয়ে সহজ। আর মর্যাদা ও ফলাফলের দিক দিয়ে সবচেয়ে মহান। এটিই আল্লাহর ইচ্ছায় অকল্যাণ দূর ও উদ্দেশ্য হাসিল করায় সবচেয়ে শক্তিশালী উপায়।