একজন মুসলিমের ওপর ফরয হলো, সাওম পালন করা ও কিয়ামুল লাইল করার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা যেসব কথা ও কর্ম হারাম করেছেন তা থেকে রক্ষার অনুশীলন করা। কারণ, সাওম দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর আনুগত্য করা, আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়সমূহের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা। আর স্বীয় মাওলার আনুগত্য করার মাধ্যমে প্রবৃত্তির চাহিদার বিপরীতে চলার জন্য মানবাত্মার সাথে সার্বক্ষণিক সংগ্রাম করা। আল্লাহ তা‘আলা যে সব বিষয়সমূহ নিষেধ করেছেন তার ওপর ধৈর্যের অনুশীলন করা। সাওমের উদ্দেশ্য শুধু খাওয়া, পান করা ও যাবতীয় সাওম ভঙ্গকারী বিষয়সমূহ থেকে বিরত থাকাই নয়। এ বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করেছেন আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ বর্ণনা পাওয়া যায়, যাতে তিনি বলেন,
«الصِّيَامُ جُنَّةٌ فَلاَ يَرْفُثْ وَلاَ يَجْهَلْ، وَإِنِ امْرُؤٌ قَاتَلَهُ أَوْ شَاتَمَهُ فَلْيَقُلْ: إِنِّي صَائِمٌ مَرَّتَيْنِ »
“সাওম ঢালস্বরূপ, ফলে সাওম পালনকারী যেন অশ্লীল ও অপকর্ম না করে, যদি কোনো লোক গায়ে পড়ে বিবাদ করে বা গালি দেয় সে যেন বলে আমি সাওম পালনকারী, দু’ বার”।[1]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ সনদে আরও একটি হাদীস বর্ণিত রয়েছে, যাতে তিনি বলেন,
«مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالعَمَلَ بِهِ، فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ»
“যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও তদনুযায়ী আমল করা ছাড়ল না, তার খানা ও পান করা ছেড়ে দেওয়াতে কোনো লাভ নেই”।[2] উল্লিখিত হাদীস এবং এ ছাড়াও আরও অন্যান্য হাদীস দ্বারা এ কথা প্রমাণিত যে, একজন সাওম পালনকারীর ওপর ওয়াজিব হলো, আল্লাহ তা‘আলা যেসব বিষয়কে নিষিদ্ধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা এবং আল্লাহ তা‘আলা যা করার নির্দেশ দিয়েছেন তা যথাযথভাবে পালন করা। এ ধরনের সাওম দ্বারা এ আশা করা যায় যে, একজন সাওম পালনকারী আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রাপ্ত হবেন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি লাভ করবেন। আর সাওম পালনকারী তার সিয়াম ও কিয়াম কবুল হওয়ার আশা করতে পারেন।
[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৩