৩। গ্রাম-গঞ্জ, বাড়ি-ঘর, হাট-বাজার সর্বত্রই দা‘ওয়াতের বিস্তার ঘটানো (دعوة الناس وغشيانهم في المدن والقرى والبيوت والأسواق)

আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ) সম্পর্কে বলেন:

﴿اذْهَبْ أَنْتَ وَأَخُوكَ بِآيَاتِي وَلَا تَنِيَا فِي ذِكْرِي (42) اذْهَبَا إِلَى فِرْعَوْنَ إِنَّهُطَغَى (43) فَقُولَا لَهُ قَوْلًا لَيِّنًا لَعَلَّهُ يَتَذَكَّرُ أَوْ يَخْشَى (44) قَالَا رَبَّنَا إِنَّنَا نَخَافُ أَنْ يَفْرُطَ عَلَيْنَا أَوْ أَنْ يَطْغَى (45) قَالَ لَا تَخَافَا إِنَّنِي مَعَكُمَا أَسْمَعُ وَأَرَى (46) ﴾[طه: 42 - 46]

‘তুমি ও তোমার ভাই আমার আয়াতসমূহ নিয়ে যাও এবং আমাকে স্মরণ করার ক্ষেত্রে কোনরূপ অলসতা করো না। (৪২) তোমরা দু’জন ফির‘আউনের নিকট যাও, কেননা সে তো সীমালংঘন করেছে। (৪৩) তোমরা তার সাথে নরম কথা বলবে। হয়তোবা সে উপদেশ গ্রহণ করবে অথবা ভয় করবে। (৪৪) তারা বলল, হে আমাদের রব! আমরা তো আশংকা করছি যে, সে আমাদের উপর বাড়াবাড়ি করবে অথবা সীমালংঘন করবে। (৪৫) তিনি বললেন, তোমরা ভয় করো না। আমি তো তোমাদের সাথেই আছি। আমি সবকিছু শুনি ও দেখি’ (সূরা ত্বহা: ৪২-৪৬)। আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

(قُلْ هَذِهِ سَبِيلِي أَدْعُو إِلَى اللَّهِ عَلَى بَصِيرَةٍ أَنَا وَمَنِ اتَّبَعَنِي وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ ) [يوسف: 108]

‘বলুন, ইহাই আমার পথ, আমি ও আমার অনুসারীগণ ডাকি আল্লাহর দিকে জাগ্রত জ্ঞান সহকারে। আল্লাহ পবিত্র এবং আমি শিরককারীদের অন্তর্ভুক্ত নই’ (সূরা ইউসুফ: ১০৮)।

وكان - صلى الله عليه وسلم - يطوف على الناس في مكة في موسم الحج ويقول لهم: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ قُولُوا: لاَ إِلَهَ إِلاَّ الله تُفْلِحُوا». صحيح/ أخرجه أحمد برقم (16603)

রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হজ্জের সময় মক্কায় মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের বলতেন, হে মানব সমাজ! তোমরা বল, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, তাহলে সফলকাম হবে (মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৬০৩, ছহীহ)।

وَعَنْ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنّ النّبِيّ - صلى الله عليه وسلم - رَكِبَ حِمَاراً، عَلَيْهِ إكَافٌ، تَحْتَهُ قَطِيفَةٌ فَدَكِيّةٌ، وَأَرْدَفَ وَرَاءَهُ أُسَامَةَ، وَهُوَ يَعُودُ سَعْدَ بْنَ عُبَادَةَ فِي بَنِي الحَارِثِ بْنِ الخَزْرَجِ، وَذَاكَ قَبْلَ وَقْعَةِ بَدْرٍ، حَتّىَ مَرّ بِمَجْلِسٍ فِيهِ أَخْلاَطٌ مِنَ المُسْلِمِينَ وَالمُشْرِكِينَ عَبَدَةِ الأَوْثَانِ، واليَهُودِ. فِيهِمْ عَبْدالله بْنُ أُبَيٍّ، وَفِي المَجْلِسِ عَبْدالله بْنُ رَوَاحَةَ، فَلَمّا غَشِيَتِ المَجْلِسَ عَجَاجَةُ الدّابّةِ، خَمّرَ عَبْدالله بْنُ أُبَيّ أَنْفَهُ بِرِدَائِهِ. ثُمّ قَالَ: لاَ تُغَبّرُوا عَلَيْنَا. فَسَلّمَ عَلَيْهِمُ النّبِيّ - صلى الله عليه وسلم -. ثُمّ وَقَفَ فَنَزَلَ. فَدَعَاهُمْ إلَى الله وَقَرَأَ عَلَيْهِمُ القُرْآنَ. متفق عليه، أخرجه البخاري برقم (5663) , ومسلم برقم (1798)، واللفظ له.

উসামাহ্ ইবনু যায়দ (রা.) হতে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি গাধায় আরোহণ করলেন, যার উপর জীন (বসার গদি) ছিল এবং তার নিচে একটি ফদকী মখমল বিছানো ছিল। তিনি তার পশ্চাতে উসামাহ (রা.) কে বসালেন। বনী হারিছ ইবনু খাযরাজ গোত্রের এলাকায় তিনি সা‘দ ইবনু উবাদা (রা.)-কে (অসুস্থ অবস্থায়) দেখতে যাচ্ছিলেন। এটি ছিল বদর যুদ্ধের পূর্বের ঘটনা। তিনি এমন একটি মজলিস অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন, যেখানে মুসলিম, মুশরিক, পৌত্তলিক ও ইয়াহূদীরা একত্রে বসেছিল। তাদের মধ্যে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইও ছিল এবং মজলিসে আব্দুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রা.)ও ছিলেন। যখন মজলিসটি সাওয়ারীর ধূলায় আচ্ছন্ন হয়ে গেল, তখন আব্দুল্লাহ ইবনু উবাই তার নাক চাদর দিয়ে ঢেকে নিল। এরপর বলল, আপনারা আমাদের উপর ধূলি উঠাবেন না। তখন নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের সালাম দিলেন। তারপর তিনি সেখানে থামলেন এবং নামলেন। আর তাদের আল্লাহর পথে দা‘ওয়াত দিলেন এবং তাদের সম্মুখে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করলেন (ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৬৩; ছহীহ মুসলিম, হা/১৭৯৮)।