গ. আল্লাহর দিকে দা‘ওয়াত প্রদানের হুকুম (حكم الدعوة إلى الله)

প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর দা‘ওয়াতী কাজ করা ওয়াজিব। প্রত্যেকে তার জ্ঞান ও সামর্থ অনুযায়ী দা‘ওয়াত দিবে, যাতে দ্বীন পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর জন্য হয়ে যায় এবং আল্লাহর কালেমা সুউচ্চ হয়। সেজন্য, দা‘ওয়াত দান উম্মতের সকলের উপর আবশ্যক। অনুরূপভাবে, তা জাতির সকলের জন্য প্রয়োজনও বটে। কারণ দা‘ওয়াত দান হেদায়াত প্রাপ্তি, ঈমান বৃদ্ধি ও বেশি বেশি সৎ আমল করার বড় মাধ্যম।

১। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(قُلْ هَذِهِ سَبِيلِي أَدْعُو إِلَى اللَّهِ عَلَى بَصِيرَةٍ أَنَا وَمَنِ اتَّبَعَنِي وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ (108)) ... [يوسف: 108].

‘বলুন, ইহাই আমার পথ, আমি ও আমার অনুসারীগণ ডাকি আল্লাহর দিকে জাগ্রত জ্ঞান সহকারে। আল্লাহ পবিত্র এবং আমি শিরককারীদের অন্তর্ভুক্ত নই’ (সূরা ইউসুফ: ১০৮)।

২। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:

ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُمْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ

‘তুমি তোমার রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহবান কর এবং সুন্দরতর পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর। নিশ্চয় একমাত্র তোমার রব-ই জানেন কে তাঁর পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে এবং হেদায়াতপ্রাপ্তদের তিনি খুব ভাল করেই জানেন’ (সূরা আন-নাহল: ১২৫)।

৩। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:

وَلْتَكُنْ مِنْكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ

‘আর যেন তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের দিকে আহবান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ হতে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম’ (সূরা আলে ইমরান: ১০৪)।

وَعَنْ أبِي بَكْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أنَّ النَّبِيَّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ فِي حِجةِ الوَداعِ: « ..إنَّ دِمَاءَكُمْ، وَأمْوَالَكُمْ، وَأعْرَاضَكُمْ، بَيْنَكُمْ حَرَامٌ، كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا، فِي شَهْرِكُمْ هَذَا، فِي بَلَدِكُمْ هَذَا، لِيُبَلِّغ الشَّاهِدُ الغَائِبَ، فَإنَّ الشَّاهِدَ عَسَى أنْيُبَلِّغَ مَنْ هُوَ أوْعَى لَهُ مِنْهُ». متفق عليه، أخرجه البخاري برقم (67) واللفظ له، ومسلم برقم (1679)

৪। আবু বকর (রা.) হতে বর্ণিত। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিদায় হজ্জের সময় বলেন: তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধনসম্পদ, তোমাদের সম্মান তোমাদের পরস্পরের জন্য হারাম, যেমন আজকের তোমাদের এ দিন, তোমাদের এ মাস, তোমাদের এ শহর মর্যাদা সম্পন্ন। এখানে উপস্থিত ব্যক্তিরা (আমার এ বাণী) যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির নিকট পৌঁছে দেয়। কেননা, উপস্থিত ব্যক্তি সম্ভবত এমন ব্যক্তির নিকট পৌঁছাবে, যে এ বাণীকে তার চেয়ে অধিক অনুধাবন করতে পারবে (ছহীহ বুখারী, হা/৬৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১৬৭৯)।

وَعَنْ عَبْدِاللهِ بْنِ عَمْرو رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أنَّ النَّبِيَّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «بَلِّغُوا عَنِّي وَلَوْ آيَةً، وَحَدِّثُوا عَنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ وَلا حَرَجَ، وَمَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّداً فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ». أخرجه البخاري برقم (3461).

৫। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রা.) হতে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: আমার কথা পৌঁছিয়ে দাও, যদি তা এক আয়াতও হয়। আর বানী ইসরাঈলের ঘটনাবলী বর্ণনা করতে পারো, এতে কোন দোষ নেই। কিন্তু যে ব্যক্তি ইচ্ছে করে আমার উপর মিথ্যারোপ করবে, সে জাহান্নামকেই তার ঠিকানা বানিয়ে নিবে (ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৬১)।