জাহিল কর্তৃক মিথ্যা আস্থার উপর আকাঙ্খা পোষণ করা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(لَنْ يَدْخُلَ الْجَنَّةَ إِلَّا مَنْ كَانَ هُوداً أَوْ نَصَارَى) [البقرة: 111]

আর তারা বলে, ইয়াহূদী কিংবা নাসারা ব্যতীত অন্য কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না (সূরা আল-বাক্বারাহ ২:১১১)।

....................................

ব্যাখ্যা: ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানরা মিথ্যা আস্থার উপর নির্ভর করে। তারা আল্লাহর নিকট মিথ্যা আকাঙ্খা করে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা তাদের সম্পর্কে উল্লেখ করেন যে, তারা বলে, আল্লাহর বাণী:

(لَنْ تَمَسَّنَا النَّارُ إِلَّا أَيَّاماً مَعْدُودَةً) [البقرة: 80]

গোনা-কয়দিন ব্যতীত আগুন আমাদেরকে কখনোই স্পর্শ করবে না (সূরা আল-বাক্বারাহ ২:৮০)।

জাহিলদের ধারণা মতে, গো-বৎস পূজার কারণে কয়েক দিন (জাহান্নামে থাকতে হবে)। আল্লাহ তা‘আলা তাদের কথা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন,

(قُلْ أَتَّخَذْتُمْ عِنْدَ اللَّهِ عَهْداً فَلَنْ يُخْلِفَ اللَّهُ عَهْدَهُ أَمْ تَقُولُونَ عَلَى اللَّهِ مَا لا تَعْلَمُونَ بَلَى مَنْ كَسَبَ سَيِّئَةً وَأَحَاطَتْ بِهِ خَطِيئَتُهُ فَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ) [البقرة: 80، 81]

আর তারা বলে, গোনা-কয়দিন ব্যতীত আগুন আমাদেরকে কখনোই স্পর্শ করবে না। বল, তোমরা কি আল্লাহর নিকট ওয়াদা নিয়েছ, ফলে আল্লাহ তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করবেন না? নাকি আল্লাহর উপর এমন কিছু বলছ, যা তোমরা জান না? হাঁ, যে মন্দ উপার্জন করবে এবং তার পাপ তাকে বেষ্টন কওে নেবে, তারাই আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে হবে স্থায়ী (সূরা আল-বাক্বারাহ ২:৮০,৮১)। তাদের কথা:

لَنْ تَمَسَّنَا النَّارُ إِلَّا أَيَّاماً مَعْدُودَةً

একথাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। যেমন সূরা আলে ইমরানে তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ أُوتُوا نَصِيباً مِنَ الْكِتَابِ يُدْعَوْنَ إِلَى كِتَابِ اللَّهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ يَتَوَلَّى فَرِيقٌ مِنْهُمْ وَهُمْ مُعْرِضُونَ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا لَنْ تَمَسَّنَا النَّارُ إِلَّا أَيَّاماً مَعْدُودَاتٍ وَغَرَّهُمْ فِي دِينِهِمْ مَا كَانُوا يَفْتَرُونَ فَكَيْفَ إِذَا جَمَعْنَاهُمْ لِيَوْمٍ لا رَيْبَ فِيهِ وَوُفِّيَتْ كُلُّ نَفْسٍ مَا كَسَبَتْ وَهُمْ لا يُظْلَمُونَ) [آل عمران:23- 25] ،

তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি? যাদেরকে কিতাবের অংশবিশেষ দেয়া হয়েছে, তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের দিকে আহবান করা হচ্ছে, যাতে তা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে। অতঃপর তাদের একদল ফিরে যাচ্ছে বিমুখ হয়ে। এর কারণ হল, তারা বলে, গুটি কয়েকদিন ব্যতীত আগুন আমাদেরকে কখনই স্পর্শ করবে না। আর তারা যা মিথ্যা রচনা করত, তা তাদেরকে তাদের দীনের ব্যাপারে প্রতারিত করেছে। সুতরাং কি অবস্থা হবে? যখন আমি তাদেরকে এমন দিনে সমবেত করব, যাতে কোন সন্দেহ নেই। আর প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের প্রতিদান পূর্ণভাবে দেয়া হবে এবং তাদেরকে যুলম করা হবে না (সূরা আলে-ইমরান ৩: ২৩-২৫)।

তিনি আরোও বলেন,

(لَيْسَ بِأَمَانِيِّكُمْ وَلا أَمَانِيِّ أَهْلِ الْكِتَابِ مَنْ يَعْمَلْ سُوءاً يُجْزَ بِهِ وَلا يَجِدْ لَهُ مِنْ دُونِ اللَّهِ وَلِيّاً وَلا نَصِيراً وَمَنْ يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلا يُظْلَمُونَ نَقِيراً) [النساء: 123، 124] .

না তোমাদের আশায় এবং না কিতাবীদের আশায় (কাজ হবে)। যে মন্দকাজ করবে তাকে তার প্রতিফল দেয়া হবে। আর সে তার জন্য আল্লাহ ছাড়া কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না। আর পুরুষ কিংবা নারীর মধ্য থেকে যে নেককাজ করবে এমতাবস্থায় যে, সে মুমিন, তাহলে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি খেজুরবীচির আবরণ পরিমাণ যুলম করা হবে না (সূরা নিসা ৪:১২৩,১২৪)।