আল্লাহর ভালোবাসায় বৈপরীত্য সৃষ্টি করা

শরী‘আত বর্জন করা সত্ত্বেও আল্লাহকে ভালবাসার দাবি করা। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে ভালবাসার আহবান জানান। তিনি বলেন,

(قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ) [آل عمران: 31]

বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস (সূরা আলে-ইমরান ৩:৩১)।

..........................................

ব্যাখ্যা: আল্লাহর আদেশ অমান্য করা সত্ত্বেও ভ্রষ্ট ইয়াহুদী ও তাদের অনুসারী কর্তৃক ভালবাসার দাবি করা।

আল্লাহর ভালবাসার নিদর্শন হচ্ছে: আল্লাহর আদেশ পালন করা। যেমন কবি বলেন,

إن المحب لمن يحب مطيع
প্রেমিক অনুগত থাকে * সে ভালবাসে যাকে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ) [آل عمران: 31]

বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন (সূরা আলে-ইমরান ৩:৩১)।

ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানরা বলে,

(نَحْنُ أَبْنَاءُ اللَّهِ وَأَحِبَّاؤُهُ)

আমরা আল্লাহর পুত্র ও তার প্রিয়জন (সূরা আল-মায়েদা ৫:১৮)।

আল্লাহ তা‘আলার শরী‘আতের বিরোধিতা করা সত্ত্বেও তারা তাকে ভালবাসার দাবি করে। তাই এ বিরোধিতা তাদের দাবি মিথ্যা তা প্রমাণ করে। আল্লাহ তা‘আলার ভালবাসার দাবির উপর তাদেরকে তিনি দলীল-প্রমাণ পেশ করার আহবান জানান। আর এ দলীল-প্রমাণই হবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনুসরণ করা। তাদের মিথ্যা দাবির পক্ষে তারা প্রমাণ পেশ করতে পারেনি। অনুরূপভাবে সূফীরাও আল্লাহ তা‘আলাকে ভালবেসে তাদের দীন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আর বলে, ইবাদতই ভালবাসা। তাই আমরা জাহান্নামের ভয়ে ও জান্নাতের নি‘আমত লাভের আশায় আল্লাহর ইবাদত করবো না। সূফীরা আল্লাহর শরী‘আতের বিরোধিতা করা সত্ত্বেও বলে, আমরা তাকে ভালবেসেই তার ইবাদত করবো। মূলতঃ তারা আল্লাহর রসূলের আনুগত্য করে না।

পীর এবং যে সব তরিকাপন্থীরা শ্রবণ ও আনুগত্যের উপর বাই‘আত গ্রহণ করে জাহিলরা কেবল তাদেরই অনুসরণ করে। জাহিলদেরকে কোন বিষয়ে তারা নির্দেশ দিলে তারা সে বিষয়ের বিরোধিতা করে না। বরং জাহিলরা বলে, গোসল দানকারীর হাতে যেমন মৃত লাশ থাকে, তেমনই মুরিদ তার পীরের সাথেই থাকে। পীর সাহেব যা পছন্দ করেন তা ব্যতীত মুরিদের কোন স্বাধীনতা নেই। কোথায় তাদের রসূলের আনুগত্য? তাদের দাবিতে তারা মিথ্যুক। একারণে ঐ সব ভালবাসার দাবিদার লোকদের বিরূদ্ধে আল্লাহ তা‘আলা নিমেণর আয়াতের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ) [آل عمران: 31]

বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন (সূরা আলে-ইমরান ৩:৩১)।

সুতরাং আল্লাহর রসূলের আনুগত্য করাই আল্লাহকে ভালবাসার নিদর্শন বলে গণ্য। যার মাঝে এ গুণ পাওয়া যাবে, আল্লাহর ভালবাসার দাবিতে সে হবে সত্যবাদী। পক্ষান্তরে যার মাঝে রসূলের আনুগত্যের গুণ পাওয়া যাবে না, সে হবে মিথ্যাবাদী। আল্লাহ তা‘আলা ভালবাসার দলীল-প্রমাণ ও ফলাফল উল্লেখ করেছেন। রসূলের আনুগত্য করাই ভালবাসার দলীল-প্রমাণ। আর বান্দার জন্য আল্লাহর ভালবাসা এবং তার পাপরাশি ক্ষমা করাই হলো ফলাফল। অনুরূপভাবে যারা রসূলের ভালবাসার দাবি করে অথচ তার আনুগত্য করে না এমন প্রত্যেকেই এ ফলাফল অর্জন থেকে বঞ্চিত। রসূলের ভালবাসার দাবিদারা তাদের পুস্তিকাদিতে বিভিন্ন বিষয়ে বিকৃতভাবে লেখালেখি করে। যেমন: (তারা বলে), তোমাদের সন্তানাদিকে তোমরা রসূলের ভালবাসা শিক্ষা দাও। অথচ দেখা যায়, তারা সন্তানাদিকে বিদ‘আত ও মিলাদের হাদীছ শিক্ষা দেয়। অথচ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদ‘আতী কর্ম নিষিদ্ধ করেছেন। সুতরাং এভাবে তারা রসূলের ভালবাসার দাবি করে অথচ বিদ‘আত ও কুসংস্কার সৃষ্টির মাধ্যমে তার ভালবাসার বিরোধিতা করে।