শারহু মাসাইলিল জাহিলিয়্যাহ ৫৬. তাওহীদকে শিরক গণ্য করা শাইখ ড. ছলিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান ১ টি

ইসলামের অনুসরণকে শিরক মনে করে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(مَا كَانَ لِبَشَرٍ أَنْ يُؤْتِيَهُ اللَّهُ الْكِتَابَ وَالْحُكْمَ وَالنُّبُوَّةَ ثُمَّ يَقُولَ لِلنَّاسِ كُونُوا عِبَاداً لِي مِنْ دُونِ اللَّهِ) [آل عمران: 79] الآية]

কোন মানুষের জন্য সংগত নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, হিকমাত ও নবুয়্যত দান করার পর সে মানুষকে বলবে, তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও (সূরা আলে-ইমরান ৩:৭৯)।

......................................................

ব্যাখ্যা: জাহিলী সমস্যা হলো তাওহীদ ও হক্বের অনুসরণকে শিরক মনে করা। তাওহীদকে শিরক গণ্য করা বাস্তবতা ও স্বভাব বিরোধী। নাজরানের খ্রিষ্টান প্রতিনিধি দলের ব্যাপারে আয়াতটি নাযিল হয়েছে। দলটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে পারস্পারিক আলোচনা করার জন্য মসজিদে প্রবেশ করে এবং আলোচনায় লিপ্ত হয়। তিনি তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের প্রস্তাব দেন। আর তাদের নিকট বর্ণনা করেন যে, আল্লাহ তা‘আলা সকল নাবীর কাছে থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন। তিনি আরো বর্ণনা করেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রেরিত নাবী; যে কেউ জীবিত থাকলে অবশ্যই তার অনুসরণ করবে। তাদের একজন বললো, হে মুহাম্মাদ! আপনি কি চান যে, আমরা আপনার ইবাদত করি? এভাবে শিরকের সাথে হকের অনুসরণ ও রসূলের ইবাদতের নামকরণ করা হলে আল্লাহ তা‘আলা আয়াত নাযিল করেন। তিনি বলেন,

(مَا كَانَ لِبَشَرٍ أَنْ يُؤْتِيَهُ اللَّهُ الْكِتَابَ وَالْحُكْمَ وَالنُّبُوَّةَ ثُمَّ يَقُولَ لِلنَّاسِ كُونُوا عِبَاداً لِي مِنْ دُونِ اللَّهِ ... ) [آل عمران: 79]

কোন মানুষের জন্য সংগত নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, হিকমাত ও নবুয়্যত দান করার পর সে মানুষকে বলবে, তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও (সূরা আলে-ইমরান ৩:৭৯)।

কেননা, নাবীগণ তাওহীদ নিয়ে এসেছেন, শিরক নিয়ে আসেননি এবং তাদের ইবাদতের উদ্দেশ্যে মানুষের নিকট দাওয়াত নিয়ে আসেননি। বরং শিরককে অস্বীকার করার উদ্দেশ্যে তারা প্রেরিত হয়েছেন। কিন্তু ঐসব লোক পক্ষপাতিত্ব করে এ সব বলে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের কথা প্রত্যাখ্যান করে আয়াত নাযিল করেন।

গতরাতের সাদৃশ্য কেমন হয়! যারা আল্লাহ তা‘আলার একনিষ্ঠভাবে ইবাদতকে কুফরী গণ্য করে এবং দীন থেকে বের হওয়া ও শিরক মনে করে। আর বলে: কবরের ইবাদত করা তাওহীদ এবং এটাই ইসলাম। কারণ তা নেকলোকদের সাথে সাক্ষাত ও তাদেরকে ভালবাসার মাধ্যম।

তাদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, যে ব্যক্তি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইবাদত করবে না, তার নিকট সাহায্য চাইবে না, সে হবে রসূলের শত্রু এবং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হক্বের ব্যাপারে সে অন্যায়কারী বিবেচিত হবে। এটা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আনুগত্যের ব্যাপারে নাজরান খ্রিষ্টানদের কথার মতই, (তাদের কথা) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য ইবাদত সাব্যস্ত। এভাবে জাহিলী মতের বিস্তার ঘটে। জাহিলদের প্রত্যেকেই হক্বকে বাতিল ও বাতিলকে হক্ব হিসাবে নামকরণ করেছে। এ থেকে আমরা আল্লাহ তা‘আলার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

জাহমিয়া ও মু‘তাযিলারা আল্লাহ তা‘আলার গুণাবলীকে শিরক সাব্যস্ত করে।