হক্ব অস্বীকার করা এবং বাতিল সাব্যস্ত করা

পূর্বে যা আলোচনা হয়েছে তা নেতিবাচক ও ইতিবাচক নিয়মের উপর নির্ভরশীল। জাহিলরা কু-প্রবৃত্তি ও ধারণার অনুসরণ করে। রসূলগণ যা নিয়ে এসেছেন তা থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়।

ব্যাখ্যা: জাহিলদের সম্পর্কে শাইখ রহিমাহুল্লাহ যে সব বিষয় পূর্বে আলোচনা করেছেন, তা ইতিবাচক ও নেতিবাচকতার ভিত্তিতে হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা যা নিষেধ করেন জাহিলরা তা সঠিক সাব্যস্ত করে এবং তিনি যা সঠিক সাব্যস্ত করেন তারা সেটাকে নিষিদ্ধ মনে করে। এ কারণে তারা ভ্রষ্টতায় নিমোজ্জিত।

আল্লাহ তা‘আলা শিরককে নিষিদ্ধ করেছেন, তাওহীদকে সাব্যস্ত করেছেন, একত্বের নির্দেশ দিয়েছেন অথচ জাহিলরা এর বিরোধিতা করে। জাহিলরা শিরক সাব্যস্ত করে ও তাওহীদকে নাকোচ করে। আবার (لا إله إلا الله) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মাবুদ নেই এ কালেমার পূর্ণ অর্থেরও বিরোধিতা করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(وَالَّذِينَ آمَنُوا بِالْبَاطِلِ وَكَفَرُوا بِاللَّهِ أُولَئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ) [العنكبوت: 52]

আর যারা বাতিলে বিশ্বাস করে ও আল্লাহকে অস্বীকার করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্থ (সূরা আনকাবূত ২৯:৫৩)।

বাতিলকে বিশ্বাস করা নেতিবাচক দিক। অথচ বাতিলকে অস্বীকার করার বদলে এর প্রতি বিশ্বাস রেখে তারা তা সঠিক সাব্যস্ত করে। আর আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমান আনয়ন করা ইতিবাচক দিক। অথচ তারা আল্লাহকে অস্বীকার করে। তারা বাতিলকে বিশশ্বাসের কারণে আল্লাহর একত্বকে নাকোচ করে। আর নেতিবাচক তথা বাতিলকে তারা সাব্যস্ত করে ও ইতিবাচক তথা একত্বকে নাকোচ করে সর্বোপরি আল্লাহকে অস্বীকার করে।

এটাই জাহিলী রীতি যার উপর তারা পরিচালিত হয় ও ভ্রষ্টতায় ডুবে থাকে। তাদের অবস্থাদী পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে তারা কখনো জাহিলী রীতি থেকে বের হবে না।

যে আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করে সে মূলতঃ আল্লাহ যা সাব্যস্ত করেন তা অস্বীকার করে। আর আল্লাহ যা নিষিদ্ধ করেন সে তা সাব্যস্ত করে। আর যে হারামকে হালাল ও হালালকে হারামে পরিনত করে, সে এ শ্রেণীর জাহিলদের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা যা হালাল করেন যে তা নাকোচ করে ও হারামকে সাব্যস্ত করে সে জাহিলী রীতিরই অনুসারী বলে গণ্য। কোন জাহিলী কর্মকান্ড থেকে সে মুক্ত হতে পারে না। আর যে আল্লাহর একত্বকারীদের বিরুদ্ধে শত্রুতা রাখে ও মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্ব করে, সে আল্লাহ তা‘আলার সাব্যস্তকৃত বিষয়কে নাকোচ করে ও আল্লাহ তা‘আলা যা নাকোচ করেছেন তা সাব্যস্ত করে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের সাথে বন্ধুত্বের নির্দেশ দিয়েছেন এবং মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্ব নিষেধ করেছেন।