দীনদারদেরকে অহেতুক বুঝের স্বল্পতা এবং মুখস্থ না করার দোষে দোষী করা

দীনের অনুসারীদের বুদ্ধিমত্তার কমতি ও মুখস্থ শক্তি না থাকার অজুহাতে দীনকে বাতিল হিসাবে প্রমাণ করা। আল্লাহ তা‘আলার বাণী: (بَادِيَ الرَّأْيِ) অর্থাৎ বিবেচনাহীনভাবে (সূরা হুদ: ২৭ )

..................................................

ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা‘আলা নূহ আলাইহিস সালাম এর জাতির কথা উল্লেখ করে বলেন,

وَمَا نَرَاكَ اتَّبَعَكَ إِلَّا الَّذِينَ هُمْ أَرَاذِلُنَا

আমরা দেখছি যে, কেবল আমাদের নীচু শ্রেণীর লোকেরাই বিবেচনাহীনভাবে তোমার অনুসরণ করেছে। আর আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব আমরা দেখছি না। বরং আমরা তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী মনে করছি (সূরা হুদ ১১: ২৭)।

অর্থাৎ দুর্বলরা। (بَادِيَ الرَّأْيِ) তথা যাদের কোন বুঝশক্তি নেই-নির্বোধ। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসারীদের বোধশক্তি, দক্ষতা ও চিন্তা-চেতনা নেই বলে তাদেরকে তারা তিরস্কার করে। বর্তমানে অনেক বিপথগামী ও আল্লাহর শত্রুরা এ ব্যাপারে দাম্ভিকতার সাথে চলছে। আর মুসলিম ও তাদের আলেমদেরকে নিয়ে তারা তামাশা করে। কারণ তাদের নাকি বুঝশক্তি ও দুরদর্শন নেই। তাই মুসলিমদের আলেমগণ বিচক্ষণ সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে এ অপবাদ দিয়ে তারা নিন্দা জ্ঞাপন করে। কেননা আলেমরা আল্লাহর কিতাবের মাধ্যমেই চিন্তা গবেষণা করে। তারা আল্লাহর নির্দেশ পালন করতে বলেন এবং আল্লাহ তা‘আলা যা নিষেধ করেন তা থেকে দুরে থাকতে বলেন।

সন্দেহ নেই যে, রসূলগণের পরে নেক আমলকারী আলেমগণ উত্তম মানুষ হিসাবে বিবেচিত। তারকারাজীর উপর চাঁদের মর্যাদা যেমন ইবাদতকারীর উপর আলেমের মর্যাদা তেমনই। সুতরাং যারা জাহিলদের সমকক্ষ তারা ব্যতীত আলেমদের বোধশক্তি না থাকা ও চিন্তা-চেতনার স্বল্পতার অভিযোগে তাদেরকে নিন্দা ও তিরস্কার করা যাবে না। নুহ (আলাইহিস সালাম) এর জাতি রসূলগণের অনুসারীদেরকে অনুরূপভাবে তিরস্কার করতো। যাতে মানুষ রসূলগণের নিকট থেকে পলায়ন করে। বর্তমানেও কিছু মানুষের মুখ থেকে তিরস্কারমূলক কথা প্রকাশ পায়। তারা বলে, ঐ সকল আলেমগণ কেবল হায়েয ও নেফাসের মাসআলা এবং জামরায় পাথর নিক্ষেপের বিধান নিয়ে আলোচনা করে। তাদের ধারণায় এসব আলেম স্বল্প জ্ঞানের অধিকারী, তাদের আধুনিক কোন জ্ঞান নেই। জাহিলদের নিকট রাজনীতির জ্ঞান ও নেতৃত্বের মোহই আধুনিকতা।