আরবের যে সব লোক দীনের (তাওরাত বা ইনজিল) উপর ছিল না, তারা উম্মি (أميين) নামে পরিচিত। (الأُمِّيُّون) উম্মিউনা শব্দটি (أمّي) উম্মি এর বহুবচন। শব্দটি (الأم) আল-উম্ম এর দিকে সম্বন্ধিত। আর উম্মি তারা, যারা লিখতে ও পড়তে জানে না। কারণ, তারা (আরবরা) এমন সম্প্রদায়, যাদের অধিকাংশই লেখা পড়া জানতো না। পবিত্র কুরআন নাযিল হওয়ার পূর্বে তাদের নিকট কোন কিতাব ছিল না। একারণে তাদেরকে উম্মি বলা হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولاً مِنْهُمْ﴾ [الجمعة: 2]

তিনিই উম্মীদের মাঝে একজন রসূল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য থেকে (সূরা আল জুমু‘আহ ৬২:২)। তিনি আরো বলেন,

﴿وَمَا آتَيْنَاهُمْ مِنْ كُتُبٍ يَدْرُسُونَهَا وَمَا أَرْسَلْنَا إِلَيْهِمْ قَبْلَكَ مِنْ نَذِيرٍ﴾ [سبأ: 44]

আমি তাদেরকে কোন কিতাব দেইনি যা তারা অধ্যয়ন করত এবং তোমার পূর্বে তাদের প্রতি আর কোন সতর্ককারীও প্রেরণ করিনি (সূরা সাবা ৩৪:৪৪)। তিনি আরোও বলেন,

﴿لِتُنْذِرَ قَوْماً مَا أُنْذِرَ آبَاؤُهُمْ فَهُمْ غَافِلُونَ﴾ [يس: 6]

যাতে তুমি এমন এক সম্প্রদায়কে সতর্ক কর, যাদের পিতৃপুরুষদেরকে সতর্ক করা হয়নি, কাজেই তারা উদাসীন (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬)।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ তা’আলা উম্মি বলেছেন। যেমন-

﴿الَّذِينَ يَتَّبِعُونَ الرَّسُولَ النَّبِيَّ الْأُمِّيَّ الَّذِي يَجِدُونَهُ مَكْتُوباً عِنْدَهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَالْأِنْجِيلِ يَأْمُرُهُمْ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَاهُمْ عَنِ الْمُنْكَرِ﴾ [الأعراف: 157]

যারা অনুসরণ করে রসূলের যে উম্মী নাবী; যার গুণাবলী তারা নিজেদের কাছে তাওরাত ও ইঞ্জিলে লিখিত পায়, যে তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয় এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করে (সূরা আল ‘আরাফ ৭:১৫৭)।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে উম্মি বলার কারণ হলো, তিনি পড়তে ও লিখতে জানতেন না। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লেখাপড়া না জানা সত্ত্বেও এ মহাগ্রন্থ নিয়ে আসাই প্রমাণ করে, তার রিসালাত (অহী বার্তা) সত্য এবং এতে তার জন্য মু’জিযাও রয়েছে। অতএব, আরবরা ছিল উম্মি, তাদের নাবীও ছিলেন উম্মি, এটাই উম্মির অর্থ।