১- আল্লাহ তাআলার বড়ত্ব ও মর্যাদার জন্য শোভনীয় পদ্ধতিতে দুনিয়ার আসমানে তাঁর নেমে আসা সুসাব্যস্ত

১- ثبوت النزول الإلهي إلى سماء الدنيا على ما يليق بجلال الله

১- আল্লাহ তাআলার বড়ত্ব ও মর্যাদার জন্য শোভনীয় পদ্ধতিতে দুনিয়ার আসমানে তাঁর নেমে আসা সুসাব্যস্ত:

শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া (রঃ) বলেন,

من ذلك مثل قوله صلى الله عليه وسلم يَنزل رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ يَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَه متفق عليه

‘‘হাদীছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার যেসব গুণাবলী বর্ণিত হয়েছে, তার মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: আমাদের মহান প্রভু আল্লাহ তাআলা রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বলতে থাকেনঃ কোন দু’আকারী আছে কি? আমি তার দু’আ কবুল করবো। কোন সাহায্য প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি তাকে দান করবো। কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করবো’’।[1]


ব্যাখ্যাঃ আমাদের রব নেমে আসেনঃ যেভাবে নেমে আসা আল্লাহর বড়ত্ব ও মর্যাদার জন্য শোভা পায়, তিনি সেভাবেই নেমে আসেন। আমরা তাতে বিশ্বাস করি। আল্লাহর নেমে আসাকে সৃষ্টির নেমে আসার সাথে তুলনা করিনা। সূরা শুরার ১১ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ البَصِيرُ﴾ ﴿‘‘তাঁর সদৃশ কোন কিছুই নেই। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’’।

سماء الدنيا দুনিয়ার আসমানঃ এখানে মাউসুফকে সিফাতের দিকে সম্বন্ধিত করা হয়েছে। অর্থাৎ মূল বাক্যটি এ রকম ছিল, السماء الدنيا অর্থাৎ দুনিয়ার নিকটতম আসমান।

حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেনঃ ثلث শব্দের বিশেষণ হিসাবে الآخرُ শব্দের শেষ বর্ণে পেশ দিয়ে পড়তে হবে। এতে বুঝা যাচ্ছে যে, নুযুলে ইলাহী তথা দুনিয়ার আসমানে আল্লাহ তাআলার নেমে আসার সময় নির্ধারিত রয়েছে।

فَأَسْتَجِيبَ لَهُ আমি তার দু’আ কবুল করবোঃ প্রশ্নবোধক বাক্যের জবাব হিসাবে فأستجيب ফেলে মুযারেটি মানসুব হয়েছে। এমনি فأعطيه এবং فأغفرله ফেল দু’টিও একই কারণে মানসুব হয়েছে। فاستجيب له অর্থ হচ্ছে, আমি তার দু’আ কবুল করবো বা তার ডাকে সাড়া দেবো।

হাদীছ থেকে আল্লাহ তাআলার নেমে আসার দলীল পাওয়া যায়। নামা বা অবতরণ করা আল্লাহ তাআলার কর্মসমূহের অন্যতম। একই সাথে হাদীছ দ্বারা আল্লাহ তাআলা উপরে থাকা সাব্যস্ত হলো। কেননা নেমে আসা উপর থেকেই হয়। হাদীছে ঐসব লোকদের প্রতিবাদ করা হয়েছে, যারা আল্লাহর নেমে আসাকে তাঁর রহমত বা আদেশ আগমণ করার দ্বারা ব্যাখ্যা করে। এই ব্যাখ্যা সঠিক নয়। কারণ আসল হচ্ছে শব্দের প্রকৃত অর্থ গ্রহণ করা এবং প্রকৃত অর্থ বাদ না দেয়া। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেনঃ من يدعوني فأستجيب له কে আমার কাছে দুআ করবে, আমি তার দু’আ কবুল করবো। এখান থেকে কি এই কথা বুঝা যায়, আল্লাহর রহমত বা তাঁর আদেশ এইভাবে শেষ রাতে ডাকাডাকি করে এবং কথা বলে?এই হাদীছ থেকে আল্লাহর কালামও সাব্যস্ত হয়। কেননা এতে রয়েছে فيقول ০০০الخ অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা বলেন। এখানে দান করা, দুআ কবুল করা এবং ক্ষমা করা সিফাতও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার জন্য সাব্যস্ত করা হয়েছে। এগুলো আল্লাহ তাআলার সিফাতে ফেলীয়ার অন্তর্ভূক্ত। যেই হাদীছ ইমাম বুখারী ও মুসলিম উভয়েই বর্ণনা করেছেন, উহাকে মুত্তাফাকুন আলাইহি বলে।

[1] - বুখারী ও মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুদ্ দাওয়াত।