নবী (সা.) এর ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি সালাত বিষয়ে বিস্তারিত মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দিন আলবানী (রহ.) ১ টি
فوائد مهمة في الصلاة على نبي الأمة নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি ছালাত পাঠ প্রসঙ্গে উপকারী গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য - ষষ্ঠ তথ্য

আল্লামাহ ছিদ্দীক হাসান খান ভূপালী তার “নুযুলু আবরার বিল ইলমিল মাছুর মিনাল আদইয়াতি অল-আযকার” গ্রন্থে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি ছালাত পাঠ ও বেশী বেশী পাঠের ব্যাপারে বেশ কিছু হাদীছ সংকলন করে (১৬১ পৃঃ) বলেছেনঃ এতে কোন সন্দেহ নেই যে, মুসলিম সমাজের ভিতর আহলুল হাদীছগণ (হাদীছ শাস্ত্রবিদগণ) ও পবিত্র সুন্নাহর বর্ণনাকারীগণ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর বেশী ছালাত পাঠ্যকারী, কারণ এ সম্মানিত বিদ্যা চর্চার নির্ধারিত কার্যাদির আওতাভুক্ত কাজ হলো প্রত্যেক হাদীছের পূর্বে তাঁর প্রতি ছালাত পাঠ করা। সর্বদাই তাদের জিহবা তাঁর স্মরণসুধায় রসাভিষিক্ত থাকে। যে কোন ধরনের সুন্নাহ গ্ৰন্থ ও হাদীছ সংগ্রহের ভাণ্ডার হোক না কেন যেমন “জাওয়ামি”,[1] “মাসানীদ”,[2] “মাআজিম”,[3] “আজযা”[4] ইত্যাদিতে হাজার হাজার হাদীছের সমাহার ঘটেছে। ইমাম সুয়ুতী (রহঃ) সংকলিত সংক্ষিপ্ত কলেবরের একটি কিতাব “আল-জমিউছু ছাগীর”- এ দশ হাজার হাদীছ রয়েছে। এর উপরই কিয়াস (অনুমান) করুন নাবীর হাদীছ সম্বলিত অন্যান্য কিতাবকে। অতএব এরাই হচ্ছে নাজাতপ্ৰাপ্ত হাদীছী দল যারা কিয়ামতের দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর (উদ্দেশ্যে উৎসর্গ হোক আমাদের পিতা-মাতা) বেশী নৈকট্যশীল এবং তাঁর শাফাআত লাভে অধিক ধন্য হবে। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষদের কেউই তাদের সমকক্ষ হতে পারবে না, একমাত্র ঐ ব্যক্তিদের ছাড়া যারা এর চেয়েও উত্তম আমল নিয়ে আসতে পারবে, এছাড়া অসম্ভব। অতএব হে কল্যাণকামী, ক্ষতিহীন নাজাত অন্বেষী- আপনার কর্তব্য মুহাদ্দিছ হওয়া বা মুহাদ্দিছগণের শিষ্যত্ব গ্ৰহণ করা, অন্যথায় উক্ত মর্যাদা লাভ করতে পারবেন না, এতদভিন্ন কোন পথ আপনার প্রতি কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।

আমি (আলবানী) বলি, “আল্লাহর নিকট আকুল প্রার্থনা তিনি যেন আমাকে ঐ সকল মুহাদ্দিছগণের দলভুক্ত করেন যারা অগ্ৰাধিকারের ভিত্তিতে সকল মানুষ অপেক্ষা তাঁর নিকটতম। মনে হয় এ কিতাবখানা সে ব্যাপারে প্রমাণসমূহের অন্যতম প্রমাণ।

সুন্নাহর ইমাম— ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল কবিতা আবৃত্তি করেছেন, আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন।

নাবী মুহাম্মাদের দ্বন- হাদীছ

যুবকের উত্তম বাহন,

হাদীছ ও তার পন্থী থেকে বিমুখ না হও কদাচন

হাদীছ হলো দিন এবং রায় অন্ধকার।

হিদায়াতের পথ হারালে যুবক

সূৰ্য উঠে বিকীর্ণ করে আলো দিয়ে তার।

[1] জামি ঐ প্রকার হাদীছ গ্ৰন্থকে বলা হয় যার ভিতর আকাইদ, আহকাম, রিকাক বা অন্তর বিনম্রকারী, খানাপানি গ্ৰহণ, ভ্ৰমণ, উঠা-বসার আদব-কায়দা সংক্রান্ত, কুরআনের তাফসীর সম্বলিত, ইতিহাস ও চরিত, ফিতনা, বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের মানাকিব ও মাছালির বা গুণ ও দোষ কীৰ্তণমূলক হাদীছের সমাহার ঘটে। (অনুবাদক)

[2] ঐ হাদীছ গ্ৰন্থ যার ভিতর ছহীহ হাসান নির্ণয়ের বাধ্যবাধকতা, অধ্যায়ের সাথে সামঞ্জস্যতার প্রতি দৃষ্টিপাত ছাড়াও প্রত্যেক ছাহাবীর বর্ণিত হাদীছ স্বতন্ত্রভাবে একত্রিত করা হয়েছে (অনুবাদক)

[3] ঐ হাদীছ গ্ৰন্থ যার ভিতর হাদীছবিদ (শিক্ষক)দের ক্রমধারা অনুযায়ী হাদীছ উল্লেখ করা হয়। প্রধানতঃ এতে বর্ণমালা অনুযায়ী হাদীছ সাজানো হয়। যেমন ত্বারানী তিন খানা মুজাম গ্রন্থ। (অনুবাদক)

[4] ঐ হাদীছ গ্ৰন্থ যার ভিতর এক ব্যক্তির বর্ণিত হাদীছ একত্রিত করা হয়, তিনি ছাহাবীই হন বা অন্য কোন ব্যক্তি। অথবা যার ভিতর নির্দিষ্ট কোন বিষয়ের হাদীছ একত্রিত করা হয় যেমন ইমাম বুখারী সংকলিত জুযউ রফউল ইয়াদাইন ফিছ ছলা ও জুযউল কিরা আত খালফাল ইমাম। (অনুবাদক)