সুখ-শান্তি অর্জন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই তাদের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে যারা ধর্মীয় ও চমৎকার চমৎকার কাজে ব্যস্ত থাকে।

احْرِصْ عَلَى مَا يَنْفَعُكَ وَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ

যা তোমার উপকার করবে তা করার জন্য আকাঙ্ক্ষা (চেষ্টা) কর এবং তা করার জন্য আল্লাহর নিকট সাহায্য চাও।

একজন সাহাবী (রা.) জানতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গী হওয়ার জন্য নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আবেদন করলে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিয়েছিলেন-

احْرِصْ عَلَى مَا يَنْفَعُكَ وَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ

ভাবার্থঃ বেশি বেশি সেজদা করে আমাকে তোমার সাহায্য করতে সাহায্য কর। কেননা, প্রতিটি সেজদার বিনিময়ে আল্লাহ তোমার একটি করে মর্তবা বৃদ্ধি করে দিবেন।

আরেকজন সাহাবী (রাঃ) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আবদার করলেন, তাকে এমন

এক আমল শিখিয়ে দিতে যা ব্যাপক কল্যাণকর। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন-

لاَ يَزَالُ لِسَانُكَ رَطْبًا مِنْ ذِكْرِ اللهِ

ভাবাৰ্থঃ “আল্লাহর জিকিরে যেন তোমার জিহ্বা সদা তরতাজা থাকে।”

তৃতীয় এমন আরেকজন কল্যাণ তালাশীর জবাবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

لا تسبن احدا ولا تضربن بيدك احدا وان احد سبك بما يعلم فيك فلا تسبه بما تعلم فيه ولا تحقرن من المعروف شيئا ولو ان تفرغ من لدوك فى اناء المستسقى

ভাবাৰ্থঃ “কাউকে গালি দিবে না, তোমার হাত দ্বারা কাউকে মারবে না (আঘাত করবে না) কেউ যদি তোমার কোন দোষ-ত্রুটি জানার কারণে তোমাকে গালি দেয়, তবে তুমি তার কোন ত্রুটি জানা থাকলেও তাকে গালি দিবে না এবং কোন নেক আমলকে তুচ্ছ মনে করবে না (তা করতে অবহেলা করবে না) যদিও তা তোমার বালতি থেকে তৃষ্ণার্তের পাত্রে পানি ঢালার কাজ হয়।”

وَسَارِعُوا إِلَىٰ مَغْفِرَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ

“এবং তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে তোমরা তুরায় ধাবিত হও।” (৩-সূরা আলে ইমরানঃ আয়াত-১৩৩)

“নিশ্চয় তারা নেক কাজে প্রতিযোগিতা করত।” (২১-সূরা আল আম্বিয়াঃ আয়াত-৯০)

وَالسَّابِقُونَ السَّابِقُونَ

“আর যারা (এ পৃথিবীতে নেক কাজে) অগ্রসর তারা (আখেরাতে জান্নাত প্রাপ্তিতে) অগ্রসর হবে।” (৫৬-সূরা আল ওয়াকেয়াহঃ আয়াত-১০)

নেক আমল করার সময় (সুযোগ) হলে তা করতে (কখনও) দেরী করবে না।

خِتَامُهُ مِسْكٌ - وَفِي ذَٰلِكَ فَلْيَتَنَافَسِ الْمُتَنَافِسُونَ

“এবং সে বিষয়ে যেন প্রতিযোগীরা প্রতিযোগিতা করে।” (৮৩-সূরা মুতাফফিফীনঃ আয়াত-২৬)

উমর (রাঃ) যখন গুপ্তঘাতকের হাতে ছুরির আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং তার রক্ত দরদর করে গড়িয়ে পড়ছিল, তখন তিনি একজন যুবককে তার লুঙ্গি মাটিতে হেঁচড়াতে দেখে বললেন, “হে ভাতিজা! তোমার কাপড় (লুঙ্গি) উপরে উঠাও। কেননা, এ কাজ অধিকতর দ্বীনি ও তোমার কাপড়ের জন্য অধিকতর পবিত্র কর।” মৃত্যু-যন্ত্রণাকালেও তিনি অন্যদেরকে নেক আমল করার দাওয়াত দিলেন।

“তোমাদের যে (নেক আমল করে) আগে বাড়তে চায় বা (বদ আমল বা পাপ করে) পিছনে পড়তে চায় তার জন্য।” (৭৪-সূরা আল মুদদাছ্‌ছিরঃ আয়াত-৩৭)

বেশি বেশি ঘুমিয়ে, আরাম তালাশ করে বা আমলে সালেহ করতে অনিচ্ছুক হয়ে অবশ্যই সুখ পাওয়া যায় না।

“কিন্তু আল্লাহ তাদেরকে অভিযোগ পাঠানো পছন্দ করলেন না, তাই তিনি তাদেরকে পিছনে বসিয়ে বিরত রাখলেন এবং তাদেরকে বলা হল, “পিছনে যে সব (মহিলা) মানুষেরা বসে থাকে তাদের সাথে বসে থাক।” (৯-সূরা তাওবাঃ আয়াত-৪৬)

অবহেলিত ও অলসদের যুক্তি হলো-

“এবং তারা বলল, “গরমে অভিযানে বের হয়ো না।” (৯-সূরা তাওবাঃ আয়াত-৮১)

“(তাদের মতো হয়ো না) যারা তাদের ভাইদের সম্বন্ধে বলে, যখন তারা পৃথিবীতে সফর করে বা যুদ্ধ করে, “যদি তারা আমাদের সাথে থাকত তবে তারা মরত না এবং নিহতও হতো না।” (৩-সূরা আলে ইমরানঃ আয়াত-১৫৬)

নেক আমলের সময় হলে আমাদের পিছনে বসে থাকা নিষেধ।

“তোমাদের কি হলো যখন তোমাদেরকে বলা হয় যে তোমরা আল্লাহর রাস্তায় বেরিয়ে পড়, তখন তোমরা মাটিতে নিতম্ব গেড়ে শক্ত করে বসে থাক?” (৯-সূরা তাওবাঃ আয়াত-৩৮)

“নিশ্চয় তোমাদের মাঝে এমন লোক আছে, যে গড়িমসি বা টিলেমি করবেই।” (৪-সূরা আন নিসাঃ আয়াত-৭২)

“কিন্তু সে দুনিয়ার প্রতি ঝুঁকে থাকল।” (৭-সূরা আল আ’রাফঃ আয়াত-১৭৬)

“আমি কি এই কাকটির মতোও হতে পারলাম না।” (৫-সূরা ময়িদাঃ আয়াত-৩১)

“তা এ জন্য যে তারা দুনিয়ার জিন্দগীকে আখেরাতে ওপর প্রাধান্য দেয় বা অধিকতর ভালোবাসে।” (১৬-সূরা নাহলঃ আয়াত-১০৭)

وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ

“ আর তোমরা পরস্পর তর্ক করবে না, করলে তোমরা মনোবল হারিয়ে ফেলবে এবং তোমাদের শক্তি চলে যাবে।” (৮-সূরা আনফালঃ আয়াত-৪৬)

“আর যখন তারা সালাতে দাঁড়ায়, তখন তারা অলসভাবে দাড়ায়।” (সূরা আন নিসাঃ আয়াত-১৪২)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الكَسَلِ “হে আল্লাহ! আমি অলসতা থেকে আপনার নিকট পানাহ চাই।”

الْكَيِّسُ مَنْ دَانَ نَفْسَهُ وَعَمِلَ لِمَا بَعْدَ الْمَوْتِ وَالْعَاجِزُ مَنْ أَتْبَعَ نَفْسَهُ هَوَاهَا وَتَمَنَّى عَلَى اللَّهِ الْامَانِى

জ্ঞানী ব্যক্তি নিজের (কু) প্রবৃত্তিকে দমন করে এবং মৃত্যুর পরে যা ঘটবে তার জন্য আমল করে, আর অক্ষম, দুর্বল ও নির্বোধ ব্যক্তি নিজের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে (যদিও সে পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য কোন নেক আমল করে না) অথচ আল্লাহর ওপরও বৃথা (মিথ্যা) আশা রাখে।