হজ সফরে সহজ গাইড হজ মুহাম্মাদ মোশফিকুর রহমান ১ টি
১৩ যিলহজ: মিনায় রাত্রিযাপন ও জামরাতে কংকর নিক্ষেপ
  • ১১ ও ১২ জিলহজের মতো করে একই নিয়মে দুপুরের সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে যাওয়ার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তিনটি জামরাতে গিয়ে কংকর নিক্ষেপ শেষ করুন। শেষ দিনে লক্ষ্য করবেন লোকের ভীড় অনেক কমে গেছে। এ দিন আসরের সালাতের পর থেকে তাকবীরে তাশরীক পড়া শেষ।[1]
  • এরপর মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে আসুন। আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে পরিপূর্ণভাবে হজ শেষ করার তাওফীক দিয়েছেন সেজন্য তাঁর দরবারে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করুন। যদিও শেষ একটি কাজ ‘তাওয়াফুল বিদা’ করা বাকি আছে। এ দিন আসরের সালাতের পর থেকে তাকবীরে তাশরিক পড়া শেষ হয়ে যাবে। সৌদি মু‘আল্লিম সাধারণত কখনো গাড়ি দিয়ে থাকে আবার দেয়ও না এ শেষ দিনে মালপত্র সহ আসার জন্য। আপনারা কয়েকজনে মিলে গাড়ি ভাড়া করে অথবা পায়ে হেঁটেই মক্কায় পৌছে যেতে পারেন।
  • এবার যতদিন আপনি মক্কায় থাকবেন, প্রতি ওয়াক্ত সালাত জামাআতের সাথে মসজিদে হারামে গিয়ে আদায় করার চেষ্টা করুন; কারণ মসজিদে হারামে সালাত পড়া আর অন্য সাধারণ মসজিদের সালাতের চেয়ে ১ লক্ষ গুণ শ্রেয়। যে কয়দিন মক্কায় থাকবেন সে কয়দিন নফল তাওয়াফ, মসজিদে জামআতে সালাত, দো‘আ ও যিকরে মশগুল থাকবেন।
  • যতবার ইচ্ছে নফল তাওয়াফ করুন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কা‘বার ইয়েমেনী কর্নার ও কালো পাথরের বিষয়ে বলেছেন, ‘‘যে এ দুটি স্পর্শ করে এবং তাওয়াফ সম্পন্ন করেন আল্লাহ তার নামে একটি ভালো কাজের সওয়াব লিখে দেন এবং একটি গুনাহ মুছে দেন, তার জন্য একটি অতিরিক্ত মর্যাদা লিখে দেন এবং যে বারবার এটা করবে সে যেন একটি গোলাম মুক্ত করে দিল’’।
  • হজের সর্বশেষ ও চূড়ান্ত কাজ হলো বিদায়ী তাওয়াফ করা। দেশে ফেরা বা মদীনা গমনের আগে সর্বশেষ কাজ হিসাবে এ তাওয়াফ করবেন।
  • সতর্কতা: আজকাল অনেকে নিয়ম মোতাবেক হজেররপ্রতিটি কাজ সম্পাদন করার পরও কেউ কেউ এরূপ সন্দেহ পোষণ করতে থাকেন যে, কে জানে কোথাও কোনো ভুল হলো কি না! কিছু হজ এজেন্সির নেতাদেরও দেখা যায় তারা হাজী সাহেবদের উৎসাহিত করেন যে কোনো ভুলত্রুটি হয়ে থাকতে পারে তাই একটা দমে-খাতা দিয়ে দিন, শতভাগ বিশুদ্ধ হয়ে যাবে আপনার হজ!

এরূপ করাটা মারাত্মক অন্যায়। কেননা আপনি হজ সহীহ শুদ্ধ ভাবে পালন করা সত্ত্বেও নিজ ইচ্ছায় হজকে সন্দেহযুক্ত করছেন। আপনার যদি কোনো বিষয় নিয়ে সত্যি সন্দেহ হয় তবে একজন বিজ্ঞ আলেমকে আপনার হজের সমস্যার কথা বলে শুনান। তিনি যদি দম দিতে বলেন তবেই দম দিন। অন্যথায় নয়। শুধু আন্দাজের ওপর ভিত্তি করে দমে-খাতা দেওয়ার কোনো বিধান ইসলামে নেই। তবে হাঁ, আপনি চাইলে নফল পশু জবাই সাদকা হিসাবে করতে পারেন। আর দম দিতে চাইলে কাউকে বিশ্বাস করে হাতে রিয়াল দিয়ে ছেড়ে দিবেন না। ব্যাংক এর বুথে গিয়ে দম টিকিট কিনে দিন অথবা হালাকা (পশুর হাট এলাকা) গিয়ে নিজে দম দিয়ে আসুন।

[1] মুসনাদে আহমদ, সহীহ মুসলিম