হজ সফরে সহজ গাইড হজ মুহাম্মাদ মোশফিকুর রহমান ১ টি
১০ যিলহজ: তাওয়াফুল ইফাদাহ ও সা‘ঈ করা
  • এ তাওয়াফের অপর নাম তাওয়াফে যিয়ারাহ বা ফরয তাওয়াফ। এটি হজের গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। তাওয়াফুল ইফাদাহ করা ও সা‘ঈ করা হজের ফরয কাজ। আপনি যদি মিনা থেকে মক্কায় এ তাওয়াফ করতে যান তবে দু’ভাবে যেতে পারেন।

এক: পায়ে হেঁটে জামরাত পার করে প্যডেস্ট্রিয়ান টানেল (সুড়ঙ্গ পথ) রাস্তা দিয়ে।

দুই: মিনায় কিং ফয়সাল ওভারব্রিজ-এর উপর থেকে বা জামরাতের পাশে থেকে কার বা মটরসাইকেল ভাড়া করে। আর আপনি যদি মাথা মুণ্ডন করার পরপরই মক্কায় চলে গিয়ে থাকেন তবে আপনার হোটেল বা ভাড়া বাসা থেকেই এ তাওয়াফ করতে যাবেন।

  • রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১০ যিলহজ সূর্য মধ্য আকাশে বা সূর্য হেলে যাওয়ার পর এ তাওয়াফ সম্পন্ন করেছিলেন। তবে সেই দিন ফজরের সূর্য উদয়ের পর থেকে এ তাওয়াফের সময় শুরু হয়। আর এ তাওয়াফের সময় উন্মুক্ত। কারও কারও মতে ১২ ই যিলহজ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত। আবার কারও মতে, ১৩ যিলহজ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত। অবশ্য সত্যনিষ্ঠ একদল আলেমের মত অনুযায়ী এ তাওয়াফ যিলহজ মাস শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত বা ঐ হিজরী বছর শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত করা যাবে। তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ তাওয়াফ করে নেওয়াই উত্তম। যার যার তাওয়াফ তাকে নিজেই করতে হবে। অন্য কাউকে কারো পক্ষ থেকে তাওয়াফ করতে পাঠানো যাবে না। প্রয়োজনে হুইল চেয়ারের আশ্রয় নিয়ে তাওয়াফ ও সা‘ঈ শেষ করতে হবে।
  • যেভাবে উমরাহর সময় তাওয়াফ করেছিলেন ঠিক তেমনি এ তাওয়াফের নিয়ম। শুধু ব্যতিক্রম এই যে, এখন আপনি ইহরামের কাপড় পরা নেই তাই কোনো ইদত্বিবাহ নেই এবং এ তাওয়াফে রমলও নেই। সাধারণ পোশাক পরিধান করে এ তাওয়াফ করবেন। এ তাওয়াফের সময় প্রচুর লোকের চাপ হয়। তাই অবস্থা বুঝে ফাঁকা জায়গা দিয়ে তাওয়াফ শেষ করুন।
  • তাওয়াফ শেষে মাক্বামে ইবরাহীমের পেছনে অথবা মসজিদে হারামের যে কোনো স্থানে দুই রাকাত সালাত পড়ুন। এবার যমযম কুপের পানি পান করুন এবং কিছু পানি আপনার মাথায় ঢালুন। এবার সাফা-মারওয়ায় গিয়ে ঠিক উমরাহর মতো সা‘ঈ করুন। এ সাঈর পর আর চুল কাটতে হবে না।
  • মাসিক স্রাব-গ্রস্ত মহিলাগণ এ তাওয়াফ করার জন্য অপেক্ষা করবেন। স্রাব বন্ধ হলে তাওয়াফে যিয়ারত সেরে নিবেন। এক্ষেত্রে কোনো দম দিতে হবে না। আর যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে স্রাব বন্ধ হওয়ার সময় পর্যন্ত কোনো ক্রমেই অপেক্ষা করা যাচ্ছে না ও পরবর্তীতে এসে তাওয়াফ যিয়ারাহ আদায় করে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই, তবে জমহুর ফুকহা ও আরো আলেম-আলেমগণের মত অনুযায়ী ন্যাপকিন দিয়ে ভালোভাবে বেঁধে তাওয়াফ সেরে নেওয়া যাবে।
  • এ তাওয়াফ ও সা‘ঈ শেষ করার পর যৌনসঙ্গমও আপনার জন্য হালাল হয়ে যাবে। একে বলে তাহাল্লুল আল আকবার বা চূড়ান্ত হালাল হওয়া।

১০ জিলহজ তাওয়াফ ও সা‘ঈ শেষ হয়ে যাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব সন্ধ্যা বা মধ্য রাতের পূর্বেই তাশরীকের রাত্রিযাপনের জন্য মিনায় ফিরে আসুন।