আমরা দেখলাম যে, কিয়ামাতের পূর্বাভাসসমূহ প্রকাশিত হয়েছে বলে কুরআনে বলা হয়েছে। এ সকল পূর্বাভাসের অন্যতম সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর আগমন। সাহল ইবনু সাদ আস সায়িদী (রা) বলেন:


بُعِثْتُ أَنَا وَالسَّاعَةَ كَهَذِهِ مِنْ هَذِهِ أَوْ كَهَاتَيْنِ وَقَرَنَ بَيْنَ السَّبَّابَةِ وَالْوُسْطَى


‘‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর হাতের তর্জনী ও মধ্যমা অঙ্গুলি একত্রিত করে বলেন: ‘‘আমি প্রেরিত হয়েছি কিয়ামাতের সাথে এভাবে পাশাপাশি।’’[1]

উপরের আলামতগুলো ছাড়াও বিভিন্ন হাদীসে কিয়ামাতের আরো অনেক পূর্বাভাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ সকল হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি যে, কিয়ামাতের পূর্বে আরব উপদ্বীপে নদনদী প্রবাহিত হবে এবং ক্ষেত-খামার ছড়িয়ে পড়বে। মক্কার বাড়িঘরগুলো মক্কার পাহাড়গুলো ছাড়িয়ে ঊর্ধ্বে উঠে যাবে, মক্কার মাটির নিচে সুড়ঙ্গগুলো একটি অপরটির সাথে সংযুক্ত হবে, পাহাড়গুলো স্থানচ্যুত হবে। ইরাকের ফুরাত নদীর তলদেশ থেকে স্বর্ণের পাহাড় প্রকাশিত হবে, যে জন্য ভয়ঙ্কর যুদ্ধবিগ্রহ ছড়িয়ে পড়বে। মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত হবে, অল্প সময়ে মানুষ অনেক সময়ের কাজ করবে, অধিকাংশ মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল ও স্বাবলম্বী হয়ে যাবে। তবে মানুষের বিশ্বাস ও ধার্মিকতা কমে যাবে, নৈতিক মূল্যবোধের ব্যাপক অবক্ষয় ঘটবে, পাপ, অনাচার ইত্যাদি ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করবে, মিথ্যা ও ভন্ড নবীগণের আবির্ভাব ঘটবে, হত্যা, সন্ত্রাস, ও বৃহৎ পরিসরের যুদ্ধ হতে থাকবে। এ সকল ‘আলামাত’ বা পূর্বভাস প্রকাশের এক পর্যায়ে ‘বৃহৎ আলামতগুলো’ প্রকাশিত হবে।[2]

[1] বুখারী, আস-সহীহ ৪/১৮৮১ (কিতাবুত তাফসীর, বাবু তাফসীরি সূরাতিন নাযিআত); মুসলিম, আস-সহীহ ২/৫৯২ (কিতাবুল জুমুআহ, বাবু তাখফীফিস সালাতি ওয়াল খুতবা)

[2] বিস্তারিত দেখন: ড. উরাইফী, মুহাম্মাদ ইবন আব্দুর রাহমান, নিহায়াতুল আলাম।