পাপী ইমামের পিছনে সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মূলনীতি নিম্নরূপ:

(১) সালাতের ইমাম যদি রাষ্ট্রপ্রধান, প্রশাসক বা রাষ্ট্র নিয়োজিত কোনো ব্যক্তি হন তবে সুস্পষ্ট দ্ব্যর্থহীন শিরক-কুফর প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তার পিছনে সালাত আদায় করতে হবে। তার পাপের প্রতি ঘৃণা, আপত্তি ও সাধ্যমত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ-সহ তার পিছনে সালাত আদায় রাষ্ট্রীয় জামা‘আত বা ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখার জন্য ইসলামের নির্দেশনা ও সাহাবীগণের সুন্নাত।

(২) যদি কোনো মসজিদের নিয়মিত নিযুক্ত ইমাম পাপী হন তবে তার নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ পাপী হবেন। সাধারণ মুসল্লী যদি অন্য কোনো ভাল ইমামের পিছনে সালাত আদায়ের সুযোগ পান তাহলে ভাল, নইলে এরূপ পাপী ইমামের পিছনেই সালাত আদায় করতে হবে। নেককার ইমামের পিছনে সালাত আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু সুস্পষ্ট বা দ্ব্যর্থহীন কুফর-শিরক না পাওয়া পর্যন্ত কোনো অজুহাতে জামা‘আত ও জুমুআ পরিত্যাগ করা যাবে না। কোনোভাবেই ‘জামা‘আত’ বা ঐক্য নষ্ট করা যাবে না। ঐক্য বজায় রেখে উত্তম ইমামের জন্য চেষ্টা করতে হবে। এ বিষয়ে হানাফী ফকহীগণ বলেছেন:


وَلَوْ صلى خَلْفَ مُبْتَدِعٍ أو فَاسِقٍ فَهُوَ مُحْرِزٌ ثَوَابَ الْجَمَاعَةِ لَكِنْ لا يَنَالُ مِثْلَ ما يَنَالُ خَلْفَ تَقِيٍّ


‘‘যদি কেউ কোনো বিদ‘আত-পন্থী বা ফাসিক-পাপাচারীর পিছনে সালাত আদায় করে তবে সে জামাআতের সাওয়াব লাভ করবে; তবে মুত্তাকী ইমামের পিছনে সালাত আদায়ের মত সাওয়াব পাবে না।’’[1]

(৩) যার ইমাম নিয়োগ দেওয়ার বা মসজিদ বাছাই করার সুযোগ আছে তাকে অবশ্যই সুন্নাতের নির্দেশনা অনুসারে মুত্তাকী, কারী ও আলিম ইমাম নিয়োগের বা তার পিছনে সালাত আদায়ের চেষ্টা করতে হবে।

[1] আল-ফাতাওয়া হিনদিয়্যাহ ১/৮৪। আরো দেখুন: ইবনুল হুমাম, শারহু ফাতহিল কাদীর ১/৩৫০; ইবন নুজাইম, আল-বাহরুর রায়িক ৪/২২৯; বুরহান উদ্দীন ইবন মাযাহ, আল-মুহীত আল-বুরহানী ২/১০২; যাইলায়ী, তাবয়ীনুল হাকায়িক ২/১৫৯, ১৬২; তাহতাবী, হাশিয়াতুত তাহতাবী আলা মারাকীল ফালাহ ১/২০৪; শুরনুবলালী, মারাকিল ফালাহ, পৃ. ১৪৩।